রাকা মুখোপাধ্যায়
আকাশে স্বপ্নের তারা বুনতে বুনতে একদিন যে ছায়াপথ তৈরী হল, সেই ছায়াপথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে তিনি কুড়িয়ে নিয়েছিলেন হলুদ পালক। তখনও কবিতায় পায়নি তাঁকে, কিন্তু শূন্যে শব্দের জালবোনা ছিল অবিরাম...প্রেম থেকে বিরহ, বিরহ থেকে পুঞ্জিভূত অভিমান বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়লো একদিন...টাপুরটুপুর টাপুরটুপুর নূপুর বেজে উঠলো আখরে আখরে...
মায়ের সূত্রে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের কন্যা শরৎকুমারী দেবীর (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দিদি) বংশে জন্ম হওয়ায় রাকা মুখোপাধ্যায় ছোটবেলা থেকেই রাবীন্দ্রিক পরিবেশে বড় হওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। কখনও রঙিন কখনও ধূসর জীবনের পথে চলতে চলতে রবীন্দ্রনাথের দর্শনকেই আঁকড়ে ধরেছেন তাঁর নিভৃত প্রাণের দেবতার রূপে।
পড়াশুনোর পাশাপাশি নাচ এবং হাওয়াই গীটারেও পারদর্শী হয়ে উঠেছিলেন ক্রমশ। কলেজে পড়াকালীন তাঁর গান শেখা শুরু, যে পথ প্রথম দেখিয়েছিলেন ঠাকুর পরিবারের বিশিষ্ট রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী শ্রীমতী মেনকা ঠাকুর (সম্পর্কিত পিসি)। সেই পথ ধরেই পরবর্তী কালে স্নাতক হলেন রবীন্দ্রসংগীতে, শিখলেন রাগ-সঙ্গীত বিশিষ্ট গুরুদের কাছে।
কিন্তু এডুকেশনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী এবং ইনফর্মেশন টেকনোলজিতে স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা প্রাপ্তা রাকা মুখোপাধ্যায় দীর্ঘ সময় ধরে ইংরাজী মাধ্যম স্কুলে প্রিন্সিপ্যালের পদে নিযুক্ত থাকার কারণে সঙ্গীত চর্চাতে বাধা পড়লেও তাঁর শিল্পসত্তাকে কেউ কেড়ে নিতে পারেনি বরং জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময়ে ২০২০ সালে করোনা যখন থাবা বসাতে শুরু করেছে পৃথিবী জুড়ে, ঠিক সেই সময় থেকেই তাঁর কলমের ঝর্নায় আখর ঝরতে লাগল কবিতার রূপে।
তাঁর এলোমেলো ছড়িয়ে থাকা কবিতাগুলিকে সঙ্ঘবদ্ধ করে প্রকাশিত হল তাঁর প্রথম বই ‘বেনোজলে বুড়ি চাঁদ’ কেতাব-ই প্রকাশনা থেকে।