পাঁচকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায়
প্রখ্যাত বাঙালি সাংবাদিক ও সম্পাদক পাঁচকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায় (২০ ডিসেম্বর, ১৮৬৬—১৫ নভেম্বর, ১৯২৩) জন্ম বৃটিশ ভারতের (অধুনা বিহার) ভাগলপুরে। পাটনা কলেজ থেকে ১৮৮৫ সালে দ্বিতীয় বিভাগে এফ.এ এবং ১৮৮৭ সালে দ্বিতীয় বিভাগে সংস্কৃতে অনার্স সহ বি.এ পাশ করেন। পরে কাশীতে সংস্কৃত সাহিত্য ও সাংখ্য বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হন। হিন্দি, উর্দু ফারসি ও ইংরাজী প্রভৃতি ভাষাতেও ব্যুৎপত্তি অর্জন করেন। তরুণ বয়সে পাঁচকড়ি ধর্মপ্রচারক শ্রীকৃষ্ণপ্রসন্ন সেনের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ভারতীয় আর্যধর্ম্মপ্রচারিণী সভা ও সুনীতিসঞ্চারিণী সভার কাজে যুক্ত ছিলেন। ১৮৯২ সালে তিনি ভাগলপুরের টী. এন. জুবিলি কলেজিয়েট স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন। কয়েক বৎসর শিক্ষকতা করার পর ১৮৯৬ সালে সাংবাদিকতার পেশা গ্রহণ করেন। সাংবাদিকতায় তাঁর শিক্ষানবিশি শুরু হয় “বঙ্গবাসী” পত্রিকায়। ১৮৯৫ সালের শেষাশেষি ‘বঙ্গবাসী’র সম্পাদক হন। ‘বসুমতী’র সম্পাদক নিযুক্ত হন। পরে মতবিরোধের ফলে অমরেন্দ্র দত্ত প্রবর্তিত ‘রঙ্গালয়’ পত্রে যোগ দেন। পাঁচকড়ি স্বদেশী-আন্দোলনের যুগে ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়ের ‘সন্ধ্যা’ এবং ‘হিতবাদী’ পত্রিকার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। ১৯০৮ সালে তিনি ‘হিতবাদী’র সম্পাদক হন। তিনি আরো কয়েকটি পত্র-পত্রিকা সম্পাদন করতেন সেগুলির মধ্যে ‘প্রবাহিণী’ ও দৈনিক ‘নায়ক’ এর নাম উল্লেখযোগ্য। সাংবাদিক হিসাবে তার সর্বাধিক প্রসিদ্ধি ‘নায়ক’ পত্রিকার সম্পাদনায়। মূলত কার্টুন প্রকাশের জন্য প্রভূত জনপ্রিয়তা পেয়েছিল ‘নায়ক’। পাঁচকড়ির রচিত ও সম্পাদিত গ্ৰন্থ—আইন-ই-আকবরী ও আকবরের জীবনী, শ্ৰীশ্ৰীচৈতন্যচরিতামৃত, সিপাহী যুদ্ধের ইতিহাস, বিংশ শতাব্দীর মহাপ্ৰলয়, সাধের বউ, দরিয়া৷