প্রেমাঙ্কুর আতর্থী
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম কথাশিল্পী, সাংবাদিক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রেমাঙ্কুর আতর্থীর জন্ম ১৮৯০ সালের ১ জানুয়ারি ফরিদপুরে। শৈশবকাল থেকেই প্রেমাঙ্কুরের বসবাস কলকাতায়। কলকাতার ব্রাহ্ম বিদ্যালয়ে তার প্রথম অধ্যয়ন শুরু হয়। এরপর ডাফ স্কুল, কেশব একাডেমী, সিটি স্কুল এবং ব্রাহ্ম বয়েজ বোর্ডিং অ্যান্ড ডে স্কুলে তিনি পড়াশুনা করেন। কিন্তু কোথাও স্থায়ীভাবে অধ্যয়ন করা তার পক্ষে সম্ভব হয় নি। প্রাতিষ্ঠানিক উচ্চশিক্ষা লাভ করা সম্ভব না হলেও নিজ চেষ্টায় দেশ-বিদেশের সাহিত্য ও অন্যান্য বিষয়ে গভীর পাণ্ডিত্য অর্জন করেন তিনি। বাল্যকাল থেকেই কল্পনাপ্রবণ ও অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় প্রেমাঙ্কুর শিক্ষালাভে ব্যর্থ হয়ে পালিয়ে তৎকালীন বোম্বে চলে যান এবং ওস্তাদ করমতুল্লার কাছে সেতার বাদন শেখেন। কলকাতায় ফিরে তিনি চৌরঙ্গীর একটি ক্রীড়া সামগ্রীর দোকানে কিছুদিন চাকরি করার পর সংবাদপত্রের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বৈকালী, যাদুঘর, হিন্দুস্তান, ভারতবর্ষ , সংকল্প, নাচঘর ও ভারতী পত্রিকায় কাজ করেন। আকাশবাণীর বাংলা মুখপত্র বেতারজগৎ-এর তিনিই ছিলেন প্রথম সম্পাদক। প্রেমাঙ্কুর পুনর্জন্ম নামে একটি বাংলা চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ করেন। পরে তিনি চলচ্চিত্র পরিচালনাও করেছিলে লাহোরের একটি চলচ্চিত্র প্রতিষ্ঠানে এবং পরে কলকাতার নিউ থিয়েটার্স লিমিটেডে। তাঁর পরিচালিত দেনা পাওনা প্রথম সবাক বাংলা চলচ্চিত্র। প্রেমাঙ্কুরের সাহিত্যিক অবদান রম্যরস, ঘটনাবৈচিত্র্য ও রোমাঞ্চ দ্বারা ঐশ্বর্যমণ্ডিত। তার উল্লেখযোগ্য রচনা হলো: আনারকলি, বাজিকর, চাষার মেয়ে তখত তাউস, চার খণ্ডে মহাস্থবির জাতক ইত্যাদি। ১৯৬৪ সালের ১৩ অক্টোবর তাঁর মৃত্যু হয়।