অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়
বাংলার নাট্যচর্চার জগতে অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় এক উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক। ছাত্রজীবন থেকে তিনি নাটক রচনা ও অভিনয়ে আগ্রহী ছিলেন। ১৯৫০ থেকে ৫৪-এই পাঁচ বছরে ৯টি নাটকে নির্দেশনা ও অভিনয় সূত্রে যুক্ত ছিলেন। ১৯৫৪ তে লিখেছেন মৌলিক পূর্ণাঙ্গ নাটক ‘সংঘাত’। ২ বছর পরে ভারতীয় গণনাট্য সংঘে যোগ দেন। এই সংঘে ১৫টি নাটকে অংশ নেন তিনি। ১৯৬০ সালে ২৯ জুন প্রতিষ্ঠা করেন ‘নান্দীকার’। প্রায় ৪০টি নাটকে নির্দেশক বা অভিনয় অথবা উভয় ক্ষেত্রে অংশগ্রহণ করেন। নান্দীকার কলকাতার নাট্যজগতের তীর্থভূমি হয়ে উঠেছিল। ‘মঞ্জরী আমের মঞ্জরী’, ‘শের আফগান’, ‘তামাকু সেবনের অপকারিতা’, ‘নানা রঙের দিন’ ইত্যাদি একের পর এক মঞ্চ দাপানো নাটক মঞ্চস্থ করেছিল নান্দীকার। বের্টোল্ট ব্রেখতের ‘থ্রি পেনিস অপেরা’র অবলম্বনে ‘তিন পয়সার পালা’ বাংলা থিয়েটারে একটি মাইলস্টোন। ৯ সেপ্টেম্বর, ১৯৭৭ সালে নান্দীমুখ নামে নামে এক নতুন নাট্যগোষ্ঠী প্রতিষ্ঠা করেন অজিতেশ। এই গোষ্ঠীর বিখ্যাত নাটক পাপপুণ্য। অজিতেশের শিল্পীসত্তার বিস্তার ছিল বটবৃক্ষের মতো। ফলে কোনও একটা শিল্পমাধ্যমে তিনি নিজের প্রতিভার বিচ্ছুরণ ঘটাবেন, এমনটা কিছুতেই সম্ভব নয়। ছয়ের দশক নাগাদ অজিতেশকে যেমন সিনেমার পর্দায় দেখা যায় তেমনি থিয়েটারের চ্যালেঞ্জ এবং সিনেমার গ্ল্যামারের মাঝে মুখ লুকনো যাত্রাতেও অবাধ বিচরণ করেছেন তিনি।