উনিশ শতকের বঙ্গসাহিত্যের ধারায় অন্তঃপুরচারিণীদের হাতে নারীবাদের যে প্রবাহ ধীরে ধীরে নিজের গতিপথ তৈরী করে নিচ্ছিল, কৃষ্ণভাবিনী দাস (১৮৬২–১৯১৯ খ্রীস্টাব্দ) ছিলেন তাঁদেরই অন্যতম সহযোদ্ধা। বিবাহের পর ১৮৮২ সালে স্বামী দেবেন্দ্রনাথ দাসের সঙ্গে ইংল্যান্ডে পাড়ি দিয়ে একঘরে হয়ে যাওয়া কৃষ্ণভাবিনী ইংল্যান্ডের নারী স্বাধীনতা তথা নারী অধিকারের যে চিত্র দেখলেন তা তাঁকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল, যার ফলশ্রুতি ‘বঙ্গমহিলা’ ছদ্মনামে লেখা ‘ইংলন্ডে বঙ্গ-মহিলা’ নামক গ্রন্থখানি। ১৮৮৯ সালে কলকাতায় ফিরেও ‘ভারতী’, ‘বালক’, ‘বামাবোধিনী’, ‘প্রদীপ’, ‘প্রবাসী’র মতো পত্রিকাগুলিতে বঙ্গীয় নারীদের স্বাধীনতা তাদের অধিকার বিষয় লিখে চলেছিলেন নানা প্রবন্ধ। দরিদ্র, অসহায় নারীদের শিক্ষিত করে তোলা এই স্বশিক্ষিত সমাজসেবীর এই প্রবন্ধগুলি, যার ছত্রে ছত্রে থাকা অসহায় বঙ্গনারীর অধিকারের দাবী এবং নারী-পুরুষ সাম্যের যে গান তা যেন হয়ে উঠেছিল বিংশতাব্দীর আধুনিক নারীবাদের পুর্ব আভাস।
© 2022 All Rights Reserved by ketab-e | This website is owned by Bestread Publications and Digital Services Private Limited. Design By Mindmine and Developed By Technophilix.