সতীন সেন
অবিভক্ত ভারতের স্বদেশী আন্দোলন এবং বিভক্ত পূর্ব বাংলার ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসে একটি গৌরবদীপ্ত চরিত্র সতীন্দ্রনাথ সেন ওরফে সতীন সেন (১৮৯৪-১৯৫৫)। আদতে ফরিদপুরের (বর্তমান গোপালগঞ্জ) মানুষ। খুব অল্প বয়সে রাজনীতিতে হাতেখড়ি, বঙ্গভঙ্গ-রদের আন্দোলন থেকে ধীরে ধীরে নাম লেখান বিপ্লবীদের খাতায়। ১৯১১ সালে গুপ্ত সমিতির সদস্য হন এবং পটুয়াখালিতে বিপ্লবী দল গঠন করেন। ১৯১৫ সালে বিপ্লবের কাজের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে গিয়ে স্বদেশী ডাকাতিতে যুক্ত হয়ে গ্রেপ্তার ও কারাভোগ করেন।
মুক্তির পর ১৯২১ সালের অসহযোগ আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে আবারও গ্রেপ্তার হন। কংগ্রেসের বরিশাল জেলার অন্যতম শীর্ষ নেতা হিসেবে সত্যাগ্রহ আন্দোলনে যুক্ত হন। ১৯২৬ থেকে ২৯ সালে পর্যন্ত নানা সময়ে গ্রেপ্তার ও কারাভোগ করেন। ১৯২৯ সালে ১০৮ দিনের ঐতিহাসিক অনশন করেন। পরবর্তীকালে ‘লবণ আন্দোলন’ এবং ‘ভারত ছাড়’ আন্দোলনে যুক্ত হন। ১৯৪৬ সালের নির্বাচনে বরিশালের যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডলকে পরাজিত করে আইন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৪৭ সালের দেশভাগের পর অনেকেই দেশত্যাগ করলেও তিনি স্বদেশের মাটি আঁকড়ে ধরে পূর্ব পাকিস্তানে রাজনীতি ও জনসেবায় আত্মনিয়োগ করেন। মুসলিম লীগ সরকারের রোষানলে বারবার গ্রেপ্তার ও দুর্বিষহ কারা নির্যাতন ভোগ করে অবশেষে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করেন।