“...গতকল্য গভীর রজনীতে বাগবাজারের শ্রীযুক্ত মুকুন্দলাল নন্দীর গদীতে এক
রহস্যময় চুরি হইয়া গিয়াছে। গদীর কার্য শেষ হইয়া যাইবার পর মুকুন্দবাবু যথারীতি
হিসাব মিলাইয়া শয়ন করিতে যান। গদীতে সেদিন অনেক টাকার কাজ হইয়াছিল এবং সে টাকা
লোহার সিন্দুকের ভিতরে তুলিয়া রাখা হইয়াছিল। সিন্দুকের পাশেই মুকুন্দবাবুর এক
কর্মচারী শয়ন করিয়াছিল। গভীর রাত্রে হঠাৎ তাহার নিদ্রাভঙ্গ হয় এবং সঙ্গে সঙ্গে
কে তাহাকে ধরিয়া শূন্যে তুলিয়া জানালা দিয়া দ্বিতলের উপর হইতে নিম্নতলে নিক্ষেপ
করে। ভাগ্যক্রমে জানালার নিচেই মেদি-পাতার ঝোপ ছিল, তাই
তাহার উপরে পড়িয়া লোকটি অজ্ঞান হইয়া গেলেও তাহার আঘাত সাংঘাতিক হয় নাই।
জ্ঞানোদয়ের পর তাহার আর্তনাদে গদীর আর সকলকার নিদ্রাভঙ্গ হয়। তাহার মুখ হইতে
সমস্ত শুনিয়া মুকুন্দবাবু তখনি লোহার সিন্দুকের ঘরে যান। কিন্তু ঘরের দ্বার ভিতর
হইতে বন্ধ ছিল। তখন দ্বার ভাঙিয়া ফেলা হয়। ঘরের মধ্যে ঢুকিয়া সকলে দেখেন যে,
লোহার সিন্দুকের দরজা ভাঙা,—ভিতরে টাকাকড়ি
কিছুই নাই। একটা জানালার চারিটা লোহার শিক দুম্ড়াইয়া কে বা কাহারা খুলিয়া
ফেলিয়াছিল,—শিকগুলি বাড়ির বাহিরে জানালার ঠিক নিচেই পাওয়া
গিয়াছে। চোরেরা যে এই ভাঙা জানালা দিয়াই ভিতরে ঢুকিয়া আবার বাহির হইয়া গিয়াছে,
সে-বিষয়ে কোনই সন্দেহ নাই। মুকুন্দবাবুর প্রায় ত্রিশ হাজার টাকা
সিন্দুক হইতে অদৃশ্য হইয়াছে বলিয়া প্রকাশ। পুলিস জোর তদন্ত শুরু করিয়াছে।” …এই রহস্যময় চুরির কিনারা করতে নেমে পরে জয়ন্ত ও তার সহকারী বন্ধু
মানিক। এই তদন্তে গোয়েন্দা পুলিশের বিপুলবপু দারোগা
সুন্দরবাবুকেও পাশে পায় জয়ন্ত। হেমেন্দ্রকুমার রায়ের এই ‘জয়ন্তের কীর্তি’ গল্পেই গোয়েন্দা চরিত্র জয়ন্তের প্রথম আত্মপ্রকাশ ঘটে। জয়ন্ত
একজন সাহসী, অত্যন্ত বলশালী, ক্ষুরধার
বুদ্ধিসম্পন্ন তরুণ। মানিক তার অভিন্নহৃদয় বন্ধু। রহস্যভেদের নেশায় দেশে ও বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় পাড়ি দিয়েছে এই জুটি।
গোয়েন্দা পুলিশের দারোগা সুন্দরবাবুকেও
প্রায়ই তাদের সঙ্গী হতে দেখা যায়।
দারুণ
দারুণ গোয়েন্দা গল্প ❤️
© 2022 All Rights Reserved by ketab-e | This website is owned by Bestread Publications and Digital Services Private Limited. Design By Mindmine and Developed By Technophilix.
বিস্তারিত প্রতিক্রিয়া