সংবাদসংস্থার তসবিরওয়ালারা যখন দারুণ ফ্রেম তৈরি করছেন নাফ নদীর উপরে, মৃতদেহ
কোলে জল পেরিয়ে ডাঙামুখী নাগরিকত্বহীন মানুষের, যাঁদের পিছনে অনবদ্য নৌকোশিল্প,
তখন নাফ নদীতে নৌকোর ভিড়। নৌকো কলোনি। তেমন নৌকোতেই মরে গিয়ে পচে উঠছেন জাফর
আলি। তাঁর দুই পুত্র, মতি আর নুহু খুঁজছে একটুখানি মাটি, মাটি দেবার তরে। মতি আর
নুহুর আরেক ভাই, আতিফ খুঁজছে স্বাধীন দেশ। সে মুজাহিদ। রাষ্ট্র খোঁজে, তার, তার
পরিবারের, তাদেরই সঙ্গে উৎখাত হওয়া অনাগরিকদের নিজস্ব বাসভূমি। সে, পার্লামেন্টে
বিস্ফোরণ ঘটাবে। আত্মঘাতী বিস্ফোরণ। এমন পরিকল্পনায় তার সঙ্গে থাকে, ইসলামিক স্টেট
বা আইএস বা দয়েশ এবং আইএসআই। মতি আর নুহুর সঙ্গে ছিলেন জাফর আলি আর উপন্যাসের
শেষার্ধে তাঁর বেওয়া হয়ে যাওয়া স্ত্রী হালেমা, মতির স্ত্রী আরিফা, আর আরিফা-মতির
সন্তান, যার খিদে পায়, খিদের জন্য যে না-কাঁদার মত বড় হয়ে ওঠেনি। নৌকোয় অবশ্য
নুহুর কেউ ছিল না। তার স্ত্রী-কে ধর্ষণ করে হত্যা করেছিল মায়ানমার সেনা। সন্তানও
বাঁচেনি। নেই দেশের নাগরিক, সৌরভ হোসেনের এই দীর্ঘ উপন্যাস, সাম্প্রতিক ঘটনাবলির
এক দর্পণ, যা দূরবর্তীর কাছে অসম্ভবপ্রতিম। এ উপন্যাস চিরকালিকও বটে, কারণ রাষ্ট্র
আর সেনা, সংখ্যাগুরু আর শরণার্থী একে অপরের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গী যুক্ত।
বিস্তারিত প্রতিক্রিয়া