বাংলা সাহিত্যে কল্পবিজ্ঞানের প্রথম ও প্রকৃত সূত্রধরকে তা নিয়ে যথেষ্ট বিতর্কের অবকাশ থাকলেও, হেমলাল দত্ত এবং জগদানন্দ রায় উভয়েই এই কৃতিত্বের দাবিদার। ১৮৮২ সালে ‘বিজ্ঞান দর্পণ’ পত্রিকায় প্রকাশিত হেমলাল দত্তের ‘রহস্য’ নামের কাহিনিতে নানান স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের উল্লেখ থাকলেও বাংলা সাহিত্যে ভিনগ্রহী প্রাণিদের আবির্ভাব জগদানন্দের কলমে।
তাঁর ‘শুক্র ভ্রমণ’ কাহিনির উপজীব্য গল্পের কথক ও তার বন্ধুর শুক্র গ্রহে ভ্রমণ এবং সেই গ্রহের এক হিউম্যানয়েড এলিয়েন বাসিন্দার সঙ্গ লাভ। এই হিউম্যানয়েড এলিয়েনদের সারা শরীরে ঘন কালো পশম, বড় মাথা, লম্বা হাতে বড় নখ এবং বনমানুষের মতো দেখতে বলে বর্ণনা করেছেন লেখক। এরা শুক্রের অন্ধকার দিকের বাসিন্দা। এই ভিনগ্রহী বন্ধুর আতিথ্য গ্রহণের কিছুদিন পর কথক ও তার বন্ধু শুক্রের আলোকিত অংশের দিকে যাত্রা করেন, যে অংশের বাসিন্দাদের দেখতে অনেকাংশে মানুষেরই মত, যাদের সভ্যতা পৃথিবীর থেকেও উন্নত।
শুধু বাংলা নয় সম্ভবত বিশ্ব সাহিত্যে প্রথম ভিনগ্রহী প্রাণীর ধারণা দিয়েছেন জগদানন্দ রায়। এই কল্পনাপ্রসূত কল্পবিজ্ঞান কাহিনিটি প্রকাশের পরে এইচ. জি. ওয়েলস ‘দ্য ওয়ার অফ দ্য ওয়ার্ল্ডস’-এ ভিনগ্রহী প্রাণীর গল্প লেখেন। জার্মানির হাইডেল ইউনিভার্সিটির রিপোসিটারি থেকে জানা যায় ১৮৯৫ সালের ‘ভারতী’ পত্রিকার ১৯তম সংখ্যায় গল্পটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল। এই দশকের শেষের দিকে ১৮৯৮ সালে ওয়েলসের ‘দ্য ওয়ার অফ দ্য ওয়ার্ল্ডস’ প্রকাশিত হয়। ‘শুক্র ভ্রমণ’ কল্প কাহিনিটি ১৯১৪ সালে জগদানন্দ রায়ের ‘প্রাকৃতিকী’ গ্রন্থেও সংকলিত হয়েছিল।
দারুণ
© 2022 All Rights Reserved by ketab-e | This website is owned by Bestread Publications and Digital Services Private Limited. Design By Mindmine and Developed By Technophilix.
বিস্তারিত প্রতিক্রিয়া