রবীন্দ্রনাথের ‘বিশ্বপরিচয়’ গ্রন্থাকারে প্রথম প্রকাশিত হয় আশ্বিন, ১৩৪৪ সনে। ‘পরমাণুলোক’, ‘নক্ষত্রলোক’, ‘সৌরজগৎ’, ‘গ্রহলোক’ ও ‘ভূলোক’– এই পাঁচটি অধ্যায় ছাড়াও বিশ্বপরিচয় বইটিতে আছে একটি সংক্ষিপ্ত উপসংহার। বিশ্বপরিচয়ের প্রথম সংস্করণে পঞ্চম অধ্যায়টির ছিল ‘পৃথিবী’; দ্বিতীয় সংস্করণে অধ্যায়টির নাম পরিবর্তন করে ‘ভূলোক’ নাম রাখেন রবীন্দ্রনাথ। রবীন্দ্রনাথ বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসুকে ‘বিশ্বপরিচয়’ উৎসর্গ করেছিলেন। ভূমিকাস্বরূপ ‘শ্রীযুক্ত সত্যেন্দ্রনাথ বসু প্রীতিভাজনেষু’ শিরোনামে রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, “আমি বিজ্ঞানের সাধক নই সে কথা বলা বাহুল্য। কিন্তু বালককাল থেকে বিজ্ঞানের রস আস্বাদনে আমার লোভের অন্ত ছিল না। আমার বয়স বোধ করি তখন নয় দশ বছর; মাঝে মাঝে রবিবারে হঠাৎ আসতেন সীতানাথ দত্ত মহাশয়। আজ জানি তাঁর পুঁজি বেশি ছিল না, কিন্তু বিজ্ঞানের অতি সাধারণ দুই-একটি তত্ত্ব যখন দৃষ্টান্ত দিয়ে তিনি বুঝিয়ে দিতেন আমার মন বিস্ফারিত হয়ে যেত।” ‘বিশ্বপরিচয়’-এ রবীন্দ্রনাথ কেবল যে ‘সহজ ভাষায় বিজ্ঞানের ব্যাখ্যার ছাঁচ গড়ে দেবার’ ইচ্ছায় সফল হতে পেরেছিলেন তা নয়, বিষয়ের গভীরে প্রবেশ করার কাজেও কোনো শৈথিল্য দেখাননি। পরমাণুলোকের অভ্যন্তরের চিত্র কিংবা নক্ষত্রলোকের অপরিমেয় বিশালতার ব্যাপ্তি এতে সহজভাবে উপস্থাপিত হয়েছে, কিন্তু বৈজ্ঞানিক তথ্য ও ব্যাখ্যার ঘাটতি তাতে মোটেও খর্ব হয়নি।
বিস্তারিত প্রতিক্রিয়া