রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
নোবেল পুরস্কারজয়ী বা বিশ্বকবি সম্বোধনে তাঁকে আটকে রাখার একটা চালু প্রক্রিয়া আছে, চালু আছে ঠাকুর পুজোর মত করে তাঁকে পূজাবেদীতে বসিয়ে রাখার। তবে সে নিয়েও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১-১৯৪১) ঋষিপ্রতিম দূরদর্শিতায় লিখে গিয়েছিলেন, “তোমার পূজার ছলে তোমায়...”। দার্শনিকের পক্ষে দূরদর্শিতা একটি স্বভাবজ ব্যাপার, এবং প্রশ্নহীনভাবেই তিনি দার্শনিকও ছিলেন। সে দার্শনিকতাই প্রতিফলিত হয়েছে তাঁর প্রবন্ধে, গানে, নাট্যে, তাঁর আঁকা ছবিতেও। দার্শনিকতার সঙ্গে অ্যাক্টিভিজমের একটা আপাত, তৈরি করা বিরোধ রয়েছে। রবীন্দ্রনাথ তা ভেঙেছিলেন। বলা ভাল, ভাঙতে পেরেছিলেন। তাই এক দার্শনিক অ্যাক্টিভিজম থেকেই তৈরি হয়ে উঠতে পেরেছিল ছকভাঙা এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিশ্বভারতী—যা কালে কালে মহীরূহ হয়ে উঠবে, বিশ্বজ্ঞান প্রসারোন্মুখ এক বাতায়ন তৈরি করবে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মাহাত্ম্য এ-ই যে তাঁকে নিয়ে বহুবিধ গবেষণা, বহু দেশে, বহু ভাষায় হয়ে চললেও, তিনি এখনও বহু দুয়ার খোলার অপেক্ষায়। তাঁকে ছাড়া বাংলাভাষার অন্দরও নেই, বাহিরও নেই।