‘স্বপ্ন’ বইটি খুব সরাসরি ঢুকে পড়ে মানুষের স্বপ্ন এবং ফ্রয়েডীয় ভাবনার জগতে। দুইয়ের
আদানপ্রদানের পথগুলিকে চিহ্নিত করে দৃশ্যমান করে তোলে ঔপনিবেশিক ভারতীয় তথা বাঙালি
পাঠকের কাছে। সাধারণ পাঠকের পক্ষে তা যে খুব বোধগম্য এ কথা ভাবার কারণ নেই। গোটা বইটি
একশো পঁয়তাল্লিশটি অনুচ্ছেদ-এ বিভক্ত। একদম প্রাথমিক অধ্যায় ‘মুখবন্ধ’ থেকেই প্রথম
অনুচ্ছেদের সূচনা। ‘মুখবন্ধ’ এবং ‘ভূমিকা’ পর্বে
গিরীন্দ্রশেখর মনোবিজ্ঞানী ফ্রয়েড-এর এবং তাঁর কাজের কিছু পরিচয় দিয়েছেন। গিরীন্দ্রশেখর
বসু বইয়ের মুখবন্ধে লিখছেন, রাতের বেলা প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে উঠব
কি উঠব না এমন একটা শারীরিক বৃত্তিগত দ্বন্দ্ব এবং কামজ প্রবণতা থেকেই এই স্বপ্নের
উদ্ভাবনা। ঠিক এভাবেই দাঁত তোলার স্বপ্ন, জলে ডোবা বা জল থেকে তোলার
স্বপ্ন, চোর ডাকাত কিংবা হিংস্র জন্তুর স্বপ্ন সবই
গূঢ় কামৈষা নির্দেশ করে। এসবের জন্য গিরীন্দ্রশেখরকে সামাজিক নানান অসুবিধাতেও পড়তে
হয়েছিল। বাংলা ভাষায় এই প্রথম বিস্তারিত আলোচনা হল ‘ইডিপাস
কমপ্লেক্স’ কিংবা ‘ফ্রি অ্যাসোসিয়েশন’ অর্থাৎ ‘অবাধ ভাবানুষঙ্গ’ পদ্ধতির। আর তার
হাত ধরেই ক্রমশ উঠে এল স্বপ্নের উপাদান, স্বপ্নে প্রতীক, স্মৃতিমূলক স্বপ্ন, কিংবা ভূতে পাওয়া স্বপ্নের মনোজ্ঞ এবং
নৈর্ব্যক্তিক আলোচনা। এই সমস্ত আলোচনা সেসময় খুব গ্রহণযোগ্য না
হলেও পরবর্তীতে গিরীন্দ্রশেখরকেই এ বিষয়ে ভারতবর্ষে পথিকৃৎ মনে করা হয়।
বিস্তারিত প্রতিক্রিয়া