মহিষাসুরমর্দ্দিনী ভারতের বেতার ইতিহাসে দীর্ঘতমকাল ধরে
সম্প্রচারিত একটি স্থায়ী বেতার অনুষ্ঠান। ১৯৩২ সাল থেকে আজ
পর্যন্ত এই অনুষ্ঠানটি প্রতিবছর মহালয়ার দিন সম্প্রচারিত হয়ে আসছে। দেড় ঘণ্টার এই অনুষ্ঠানে রয়েছে শ্রীশ্রীচণ্ডী বা দুর্গা সপ্তশতী থেকে
গৃহীত দেবী চণ্ডীর স্তোত্র বা চণ্ডীপাঠ, বাংলা ভক্তিগীতি,
ধ্রুপদী সঙ্গীত এবং পৌরাণিক কাহিনির নাট্যরূপ। ১৯৩২ সালের চৈত্র মাসে বাসন্তী ও অন্নপূর্ণা পূজার সন্ধিক্ষণে প্রথম সম্প্রচারিত
হয় বসন্তেশ্বরী শীর্ষক অনুষ্ঠান, যা মার্কণ্ডেয় চণ্ডীর উপর
ভিত্তি করে বাণীকুমারের লেখা একটি বেতার লিপিলিখন। বসন্তেশ্বরী শীর্ষক অনুষ্ঠানের
অনুকরণেই কিছু পরিমার্জনের মাধ্যমে সেই বছরই দুর্গাষষ্ঠীর দিন অনুষ্ঠানটি
সম্প্রচারিত করা হয়। এই অনুষ্ঠানের সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন রাইচাঁদ বড়াল, চণ্ডীপাঠ করেন বাণীকুমার স্বয়ং এবং নাট্যকথা সূত্র এবং গীতাংশ গ্রহণে
ছিলেন বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র। পরবর্তীতে ১৯৩১-৩৬ সাল পর্যন্ত
প্রতিবছরই কিছু পরিমার্জন করে নতুন স্তবস্ততি, দেবীসূক্তি,
নতুন গান এবং পুরাতন গানের সুরের পরিবর্তন ঘটিয়ে অনুষ্ঠানটির
সম্প্রচার করা হয়। ১৯৩৬ সাল পর্যন্ত এই অনুষ্ঠানটি মহিষাসুর
বধ, শারদ বন্দনা নামে সম্প্রচারিত হয়, যার সঙ্গীত পরিচালনা করেন পঙ্কজ কুমার মল্লিক ও রাইচাঁদ বড়াল এবং
শ্লোকপাঠ ও গ্রন্থনা করেন বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র। ১৯৩৭ সালে এই
অনুষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করে মহিষাসুরমর্দ্দিনী রাখা হয়, যা
এখনও একই নামে সম্প্রচারিত হয়ে চলেছে। প্রথমদিকে অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচারিত
হত, কিন্তু ১৯৬৬ সাল থেকে রেকর্ড করা
পূর্বের অনুষ্ঠানই শোনানো হয়।
১৯৬২ সালে সম্প্রচারিত ‘মহিষাসুরমর্দ্দিনী’-র
নাট্যরূপ ই-বই আকারে কেতাব-ই ডিজিটাল লাইব্রেরিতে ফ্রি বই হিসেবে
যুক্ত হল।
বিস্তারিত প্রতিক্রিয়া