‘পলাশীর যুদ্ধ’ নবীনচন্দ্রের কবিখ্যাতির প্রধান অবলম্বন। উনবিংশ শতাব্দীর আখ্যায়িকা কাব্যগুলিতে সাধারণত দূরকালের ইতিহাস বা পুরাণ থেকে বিষয়বস্তু সংগ্রহ করা হত। নবীনচন্দ্র অনতিদূরবর্তী কালের একটা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা কাব্যের বিষয়রূপে গ্রহণ করে সাহসিকতারই পরিচয় দিয়েছিলেন। যে পরাধীনতার জন্যে তৎকালীন শিক্ষিত সমাজে গ্লানিবোধ দেখা দিয়েছিল তার প্রধান কারণ পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়। তখনকার ইংরেজরচিত ইতিহাসে সিরাজ-চরিত্র কলঙ্কিতভাবে চিত্রিত হয়েছে। নবীনচন্দ্রও সিরাজ চরিত্র চিত্রণে ইংরেজ ঐতিহাসিকদের প্রভাব অতিক্রম করতে পারেন নি। তাই সিরাজকে কাব্যে প্রধান চরিত্রের মর্যাদা দিতে কুণ্ঠাবোধ করেছেন। এ কাব্যে দেশপ্রেমের উদ্দীপ্ত বাণী উচ্চারিত হয়েছে মোহনলালের কণ্ঠে। ‘পলাশীর যুদ্ধ’-এর পাঁচটি সর্গে বিভক্ত। প্রতিটি সর্গে একটি চরিত্র প্রাধান্য পেয়েছে। দেশাত্মবোধ-প্রকাশের জন্য কবি প্রধানত নির্ভর করেছেন মোহনলাল উপরে। নবীনচন্দ্র এই কাব্যের বহুস্থানে বায়রনের ‘চাইল্ড হ্যারল্ড’ কাব্যের যুদ্ধবর্ণনা পদ্ধতি অনুসরণ করেছেন। ‘পলাশীর যুদ্ধ’-এর কোন কোন অংশে কবির উৎকৃষ্ট কল্পনাশক্তির পরিচয় আছে। জাতীয়তাবোধ উন্মীলনের প্রথম যুগের এই কাব্য দেশের জন-জীবনে প্রভূত প্রভাব বিস্তার করেছিল।
দারুণ
© 2022 All Rights Reserved by ketab-e | This website is owned by Bestread Publications and Digital Services Private Limited. Design By Mindmine and Developed By Technophilix.
বিস্তারিত প্রতিক্রিয়া