রাজা ও প্রজার পারস্পরিক সম্পর্ক শাসক ও শোষিতের, কর্তা ও ভৃত্যের, সবল ও দুর্বলের। রাজার রাজত্ব বহাল থাকে প্রজার অধিকারহরণ, প্রাপ্য লুণ্ঠনের মধ্য দিয়ে। ঔপনিবেশিক ইংরেজ এবং শাসনাধীন ভারতীবাসীর মধ্যেকার রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করে দেয় রাজার স্বার্থই প্রজার স্বার্থ। সেই লক্ষ্যে প্রজার স্বতন্ত্র অস্তিত্ব ও অধিকার সম্বন্ধে অকাতরে নির্মম হওয়াই শাসকের ধর্ম, তারও একটা গালভরা নাম দিয়েছে শাসক ইংরেজ— “ইম্পীরিয়লিজম্” । এই প্রসঙ্গে ‘রাজা প্রজা’ প্রবন্ধে রবীন্দ্রনাথ আরও স্পষ্ট করে বলেন— “কিন্তু ইম্পীরিয়লিজ্ম্ মন্ত্রে লজ্জা দূর হয়। ব্রিটিশ এম্পায়ারের মধ্যে এক হইয়া যাওয়াই ভারতবর্ষের পক্ষে যখন পরমার্থলাভ, তখন সেই মহদুদ্দেশ্যে ইহাকে জাঁতায় পিষিয়া বিশ্লিষ্ট করাই ‘হিয়ুম্যানিটি!’
ভারতবর্ষের কোনো স্থানে তাহার স্বাধীন শক্তিকে সঞ্চিত হইতে না দেওয়া ইংরেজসভ্যনীতি অনুসারে নিশ্চয়ই লজ্জাকর; কিন্তু যদি মন্ত্র বলা যায় ‘ইম্পীরিয়লিজম্’—তবে যাহা মনুষ্যত্বের পক্ষে একান্ত লজ্জা তাহা রাষ্ট্রনীতিকতার পক্ষে চূড়ান্ত গৌরব হইয়া উঠিতে পারে।
নিজেদের নিশ্চিন্ত একাধিপত্যের জন্য একটি বৃহৎ দেশের অসংখ্য লোককে নিরস্ত্র করিয়া তাহাদিগকে চিরকালের জন্য পৃথিবীর জনসমাজে সম্পূর্ণ নিঃস্বত্ব নিরুপায় করিয়া তোলা যে কতবড়ো অধর্ম্ম, কী প্রকাণ্ড নিষ্ঠুরতা, তাহা ব্যাখ্যা করিবার প্রয়োজন নাই; কিন্তু এই অধর্ম্মের গ্লানি হইতে আপনার মনকে বাঁচাইতে হইলে একট বড়ো বুলির ছায়া লইতে হয়।”
দারুণ
অসাধারণ একটি প্রবন্ধ।
প্রবন্ধটি খুব সুন্দর।
© 2022 All Rights Reserved by ketab-e | This website is owned by Bestread Publications and Digital Services Private Limited. Design By Mindmine and Developed By Technophilix.
বিস্তারিত প্রতিক্রিয়া