preloader
বাংলা বইয়ের e-ভুবন
Menu Categories Search Cart 0
Menu
Cart

Total 0 Items

☹ Your cart is empty

Sub Total:

$0

₹0

বিভাগ
বাজের নখরে দোলে স্বপ্নের পেন্ডুলাম
অণুগল্প

বাজের নখরে দোলে স্বপ্নের পেন্ডুলাম

প্রকাশিত হল শাশ্বতী লাহিড়ীর লেখা অণুগল্প ‘বাজের নখরে দোলে স্বপ্নের পেন্ডুলাম’।

চন্দ্রবোড়ার পেটে ফাঁস দিয়ে বাদাবনের বাঁশঝাড়ে ঝুলিয়ে এসেছে ওরা গতকাল। ফাঁস দিতে দিতে খিস্তি দিচ্ছিল,

—এবার মজা বোঝ বাঞ্চোত! শোষিত-ফোসিত, ভুখা আদমিদের নিয়ে মিছিল মিটিং করতিস না! এবার নিজেই উপোস পেটের নাড়ি শুকিয়ে মর শালা।

—ভেবো না গুরু, চাঁদু সাতদিনেই টেঁসে গিয়ে সোজ্জা আছড়ে পড়বে পাতালে!

খিস্তি মারতে মারতে বোড়াচাঁদকে একেবারে হেঁটমুণ্ড ঊর্ধ্বপদ করে ঝুলিয়ে যে যার পথে ফিরে গেছে।

ঝুলন্ত চন্দ্রবোড়ার মুখ থেকে দমকে দমকে গলগল করে বেরিয়ে আসছে ঘন নীল বিষ। ওটা আসলে ঠিক বিষ নয়। আপোষহীন চন্দ্রবোড়ার মরিয়া দ্রোহ।

জীবিতের সংকেত চিহ্ন যদি দ্রোহ হয় তবে তো নিস্তেজ মৃতপ্রায় চন্দ্রবোড়াটা এখন একটু একটু করে জীবনের দিকে এগোচ্ছে। মরতে মরতেও প্রমাণ করে দিচ্ছে আপোষহীন বেঁচে থাকার মহিমা।

ফাঁস লাগানোর আগে বহুবার ওরা বলেছিল, নুন আনতে পান্তা ফুরানো তার সংসারে দু-মুঠো ভাতের সংস্থান হবে। এক-শো দিনের কর্মী হিসেবে এনলিস্টেড হবে যদি সে তার গোঁ ছেড়ে, বিষদাঁত উপড়ে ফেলে, জলঢোঁড়া হেলে সাপ হয়ে যায়।

প্রথমবার শোনার পর কথাটার মায়ায় পড়ব কি পড়ব না, একবারের জন্যে হলেও ভেবেছিল সে। শেষপর্যন্ত অবশ্য নিজেকে সামলে নিয়ে ঘাড় শক্ত করে মানছি না মানব না-র ঢঙে টান টান ছিল । পরে যতবার মনে আসছে নিজের দোলাচলের কথা ততবারই সে এক এক দলা থুতু ছুড়ে দিচ্ছে নিজের ওই পরিত্রাণকামী পলায়নবৃত্তির উদ্দেশে। মনের সুখে ছড়া কাটছে শিথিল ঠোঁট নাড়িয়ে,

“সাত ঢ্যামনা শরীর ছেঁড়ে / মাগীর পেটে বাচ্চা বাড়ে / ঘরে পুষে চোদ্দ মাগী / বাইরে সাজে সিদ্ধ-যোগী।”

মাগীদের ছানাগুলোই তো কোনোটা শুয়োর, কোনোটা হায়না কিংবা বন্য কুকুর হয়ে ওঠে।

—তোরা তো সব শালা কেজো-কুত্তা। এ মালিক থেকে ও মালিক এভাবেই একটা হার্ডেল রেসে দৌড়তে দৌড়তে একদিন জোরদার লাথির ঘায়ে তলিয়ে যাস, বেওয়ারিশ লাথের কাঁঠাল হয়ে কালভার্টের কালো জলে গঙ্গা পাস।

ঢ্যামনা-চাঁদু তোদের মালিকগুলো খোলা বাজারে তোদের নিয়ে নিলাম হাঁকে। এ ওর সঙ্গে হাতবদলের ডিলিং করে। তোদের মালিক বদলে যায়। লুট কা বাতাসা নেপোয় খায়। জোড়া জোড়া শালিক তোরা এক এক শালিক হয়ে আলাদা রঙের ছাতার তলায় দাঁড়ানো অন্য শালিকটাকে ল্যাং মারিস। দিনদুপুরে গুলি করে সালটে দিস। শেষে একদিন নিজেরাও “বলো হরি হরিবোল”।

“চুরা লিয়া হৈং তুমনে জো দিলকো”— হিন্দি গানের রিংটোন বাজছে ফোনে। স্ক্রিনে ভেসে উঠল বসের ছদ্মনাম। সাত তাড়াতাড়ি ফোনটা ধরল নিমাই।

—হ্যাঁ হ্যাঁ বস্! বলো।

—উর্দি পড়া শেয়ালগুলো খুঁজে বেড়াচ্ছে তোদের, সাবধান। জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে তুলে নিতে পারে সব কটাকে।

বহুত বেড়েছিল শালা। আমার এলাকায় থেকে আমারই ভোটের অংক কমিয়ে দিল। তুলে নিয়ে গিয়ে বোঝালাম, মাটি কোপা, নিজের পেট ভর, বাড়ি যা। শুনল না। জনগণের অভাব, খিদে, অধিকার নিয়ে শালা অণ্ডকোষ শুকিয়ে মরছিল।

যাক গে, বলবি পটার মায়ের সঙ্গে চাঁদুবোড়া-র পরকীয়া ছিল, বুঝলি। তাই পটা প্রতিশোধ নিতে ভাড়াটে গুন্ডাকে সুপারি দিয়ে বোড়াচাঁদকে খুন করিয়েছে। পটাকে বলবি চুপচাপ গরাদের ভেতরে ঢুকে যেতে। চিন্তা নেই। আমি আছি। ছাড়িয়ে আনব। পটার একটা বালও ছিঁড়তে পারবে না কেউ।

—ইয়েস বস্... ইয়েস বস্....ইয়েস বস্।

কেতাব-ই’র ব্লগজিন বিভাগে লেখা পাঠাতে চান? মেল করুন blogzine.ketabe@gmail.com-এ। মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখুন ‘কেতাব-ই ব্লগজিনের জন্য লেখা’


কেতাব-ই’র মুদ্রিত বই, ই-বই এবং ব্লগজিন বিভাগের লেখালিখির নিয়মিত খোঁজখবর পেতে আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন


এই ব্লগজিনে প্রকাশিত সমস্ত লেখার বক্তব্য লেখকের নিজস্ব।

Image Description

nZkkAbWB

2 দিন আগে

1


Image Description

nZkkAbWB

2 দিন আগে

1


Image Description

nZkkAbWB

2 দিন আগে

1


Image Description

nZkkAbWB

2 দিন আগে

1


মন্তব্য করুন

লেখক

শাশ্বতী লাহিড়ী জন্ম ১৯৬৪। বাংলা সাহিত্যে এম. এ। পেশায় শিক্ষিকা। শিক্ষকতার পাশাপাশি করেছেন সমান তালেই করেছেন সাহিত্যচর্চা। তাঁর কাব্যগ্রন্থ ‘ঢেউ দেয় অর্জুন বিষাদ’, ‘ভালোবাসা চির জল’, ‘হেমন্ত শিশিরে ভেজা পথ’ এবং আরও দুটি উপন্যাস ‘সূর্য ঘড়িতে ঘুম’ এবং ‘আমার নাকছাবিটি হারিয়ে গেছে’- ইতোমধ্যেই প্রকাশিত।

অন্যান্য লেখা

দেখতে পারেন