preloader
বাংলা বইয়ের e-ভুবন
Menu Categories Search Cart 0
Menu
Cart

Total 0 Items

☹ Your cart is empty

Sub Total:

$0

₹0

বিভাগ
একটি চিঠির পাঠ ও অন্যান্য কবিতা
কবিতা

একটি চিঠির পাঠ ও অন্যান্য কবিতা

প্রকাশিত হল সেলিম মল্লিকের ‘একটি চিঠির পাঠ ও অন্যান্য কবিতা’– নাম কবিতা ছাড়াও রয়েছে ‘ক্ষুধার্ত, শোক’, ‘ফুলের ভাষায় কথা বলব’, ‘তাকিয়ে থাকার সময়’, এবং ‘আমরা আশ্রয় খুঁজি’।

ক্ষুধার্ত, শোক

রুপালি কুঠার যেন, রমণীয় হাসি দিয়ে
এক কোপে জাগিয়ে তুলেছ– ভোররাতে
হাড় মজ্জা মাংসের কাঠামো ছেড়ে
নিরীহ নিঃসাড় পোকা
বাসা বাঁধে ঘুমলিপ্ত আধভেজা ফুলে।
গৃহকোণে বাতি জ্বলে
মুমূর্ষু, মলিন, মৃদুস্বর কাঁপে।
চোখের কিনারে ধ্রুব রক্ত– সৃষ্টি থেকে ধ্বংস অব্দি
ঠুলি ঠেলে বেরোতে বেরোতে জমা হবে–
ওই রক্তে ক্রোধ কান্না তৃষা দিশা।

তোমার প্রচণ্ড হাসি– ক্ষুধার্ত শোকার্ত:
মৃত্যুর লালসা দেখো– গা গুটিয়ে
সুঁড়িতে ঢুকেছে, পিণ্ড খাবে।

***

ফুলের ভাষায় কথা বলব

এত চিৎকারের ভেতরে একটা নীরব, তোমার হাতে
একটা ফুল।
গোলাপ তোমার নাম।
উপচে পড়ছে উচ্চবাচ, জঞ্জাল ছড়িয়ে আছে
কোথায় দাঁড়িয়ে কার সঙ্গে
কথা বলবে– কী কথা এমন বলতে পারবে!
তোমাকে গোলাপ যদি জঞ্জালস্তূপে ফেলে দিতে হয়
তারও পর যদি শুকনো মুখে চেয়ে থাকতে হয় সেই দিকে
কীভাবে তখন ফিরবে– ফেরাটাই অনিবার্য গন্তব্য যখন।

তোমাকে বলার নেই কিছু, কিছু তোমার শোনার নেই
গলা চিরে সবাই আওয়াজ করছে–
পথের মাটিতে কেন তুমি চোখ নীচু করে হাঁটছ!
তুমি কি বিশ্বাস করো এখনও– আবার আমরা ফুলের ভাষায় কথা বলব!

***

কেতাব-ই’র ব্লগজিন বিভাগে লেখা পাঠাতে চান? মেল করুন blogzine.ketabe@gmail.com-এ। মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখুন ‘কেতাব-ই ব্লগজিনের জন্য লেখা’

একটি চিঠির পাঠ

এক রাগী মেয়ে আমাকে একটি চিঠি পাঠিয়েছে, পুরোনো
ছেঁড়া কাগজে লেখা এবং বিশেষ দ্রষ্টব্যে
বলেছে– আমি যেন অন্তত দু-বার উচ্চারণ করে পড়ি।
ঝরে পড়া হলুদ পাতা পুরু হয়ে গাছের তলায়
পড়ে থেকে একেবারে শুকিয়ে গেলে, ওপর দিয়ে
হেঁটে যেতে যেতে খরখড়র আওয়াজকে
অনেক সময় পাতা ও পায়ের সংঘাতের শব্দ
মনে হয় না। অতর্কিতে চিঠির পাঠ আটকে যায়।
এখন মাঘ মাসে সূর্য কোমল, দুপুরের রোদ আরামদায়ক–
কিন্তু, এত রুক্ষ বাক্য! আয়ুক্লিষ্ট মানুষের
চামড়া, হাতের চেটো খসখসে লাগে।
মেয়েটি লিখেছে: এই পৃথিবী কোনো নীল রঙের
ফুল নয়, অন্ধকারে ন্যাবা আলোর মতো জ্বলতে দেখেছে।

***

তাকিয়ে থাকার সময়

তোমার দিকে তাকিয়ে থাকার সময় কমে আসছে, এত গুমোট
সোমবার থেকে আবহাওয়া এমন একটা পাতাও নড়ছে না।
শুক্রবার মসজিদ এবং গির্জার দিকে যাওয়ার রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে
ভাবছিলাম ধর্মের পথগুলো একইরকম রয়ে গেল, আদল বদলেছে স্থাপত্যের।
জাম গাছের ছায়া বেড়েছে, জলের বুকে মুখ নামিয়ে
রোদ ডুবে গেছে কালোসবুজ ঝাঁঝির ভেতরে।
সময় একেবারে ফুরিয়ে এসেছে যেন, তোমার দিকে
তাকিয়ে থাকার দিন শেষ হতে বসেছে–
তোমাকে খুঁজতে খুঁজতে একটা ঘড়ি উড়ে এসে
দেয়ালে প্রজাতির মতো বসে ছিল, সামান্য দূরত্বে
স্থির হয়ে তাকিয়ে ছিল টিকটিকি– চারপাশে
অনেকটা সময় ছিল আয়নায়, পর্দায়, ড্রেসিং টেবিলের
নকশাতে, খোঁপা আরশিলতা আর চাদরের ফুলে–
স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল ডানাওয়ালা ঘড়ির পেটে
কলকবজার নানাবিধ কাজ, কাজের মধ্যেই
তোমার দিকে তাকিয়ে থাকার সময় কুবো পাখির মতো
ডেকে উঠছিল যখন-তখন…

***

আমরা আশ্রয় খুঁজি

পেছনে কত রকমের তাড়না, যে-জায়গায়
চলে এসেছি আমরা– ধাতুর অস্ত্রগুলো নীচের দিকে মাথা করে
নেমে আসে কালো আকাশ থেকে, বাচ্চারা
লাফিয়ে লাফিয়ে লুফে নেয় তাদের, সব অস্ত্রই
ওদের হাতে এসে কাঠে বদলে যাচ্ছে।
আমরা আশ্রয় খুঁজি একটা গাছের– ফুল ফল
এবং ছায়াভরতি এমন গাছ, যার কল্পনায়
মাঝযৌবনের অনেক ক-টা বসন্ত কাটিয়ে দিয়েছি।
বাচ্চারা ডিগবাজি খায়
ন্যাংটো ধুলোমাখা, কাঠের রং যেন তোমার চামড়ার।
চলো, ওদের কাছে যাই– এখন কি ওদের বাবারা
দূরে কোথাও পেটের রসদ জোগাড় করতে ব্যস্ত, মায়েরা
রোদে তাতিয়ে নিচ্ছেন উনুনের মুখ!
ওরা কি আমাদের দেখতে পেল? ঝোপের আড়ালে
কাঠগুলো লুকিয়ে রেখে কোথায় গা ঢাকল?
ওই তো ওই তো, ঢিবির পাশটাতে
সমবেত চোখ একঝাঁক ফড়িঙের মতো নজর করছে আমাদের।
হাত দাও, আহা, কাঠগুলো তোমার হাতের চেয়েও নরম–
ওরা ঢিল ছোড়ে, গাছের পাতায় পড়ে
পাখির ডানা ঝাড়ার মতো শব্দ হয়।
আমার হাত লেগে কাঠগুলো হাড়ের চাইতেও
শক্ত আরও শক্ত হচ্ছে, বিবর্ণ সেই হাড়, যা তুমি আবিষ্কার করেছিলে
স্তূপ হয়ে যাওয়া রাত্রির জঞ্জালে।


কেতাব-ই’র মুদ্রিত বই, ই-বই এবং ব্লগজিন বিভাগের লেখালিখির নিয়মিত খোঁজখবর পেতে আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন


এই ব্লগজিনে প্রকাশিত সমস্ত লেখার বক্তব্য লেখকের নিজস্ব।

Image Description

সৌমাভ

1 দিন আগে

অপরূপ। শান্ত দুপুরে পুকুরে ভাসা আকাশের ছায়ার মতন।


Image Description

Susanta Satpati

1 দিন আগে

কী চমৎকার কবিতাগুলো!


Image Description

অমিতরূপ চক্রবর্তী

3 ঘন্টা আগে

চমৎকার সব লেখা। দারুণ।


মন্তব্য করুন

লেখক

জন্ম ১৯৭৭ সালে। পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকে শিমুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা। কবিতার বই: ‘আশরীর কলতান’, ‘চাঁদ নিয়ে খেলা করছি’, ‘প্রতিপদ কৌমুদী’, ‘আকাশ না কি গাঙিনী’, ‘মানুষ আমার কেউ নয়’, ‘কালো মাছ চক্কর দিচ্ছে’। গদ্যের বই: ‘আশমান জমিন’, ‘সন্ধিসময় ও মৃত্যু পরবর্তী ফুল’, ‘মণীন্দ্র গুপ্তের মৃত্যুর পরে’। সম্পাদিত পত্রিকা: ‘অস্ট্রিক’, ‘একটি উজ্জ্বল মাছ’। পেয়েছেন ‘বৃষ্টিদিন পুরস্কার’, ‘কৃত্তিবাস পুরস্কার’ এবং ‘মধুমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্মৃতি পুরস্কার’।

অন্যান্য লেখা

দেখতে পারেন