প্রকাশিত হল স্রোতস্বিনী চট্টোপাধ্যায়ের পাঁচটি কবিতা— ‘বসন্ত’, ‘শেষ রাত’, ‘রাক্ষুসে’, ‘গুণিন’ ও ‘প্রতিবিম্ব’।
বসন্ত
নিভু নিভু জ্বলেছে অঙ্গার
পায়ে ফুটছে শস্যদানা
ধানের অঙ্গুরি পরে
হেঁটেছি তোমার দিকে সারাৎসার
লক্ষকোটি তারা চেনায় অদ্ভুত আঁধার
কারা যেন বলে,
লতায় পাতায় ডুব যাওয়া শ্রেয়
তবু পার হয়ে যাচ্ছি
সাথে হ্যাজাকের আলো
টানেলের শেষ বিন্দু পর্যন্ত দূরত্ব
তারও পর এত ঐশ্বরিক ভালো
তুমি ছাড়া সব কিছু আছে
তুমি ছাড়া সামনেটুকু কালো
শেষ রাত
কতদিন শেষ হল? হিসেব রাখার
আমি কে তুমিই-বা কোন কেউকেটা
চারিদিকে অস্থির অন্ধতা
মায়ামৃগ নেই এখানে কোথাও
কোলাহল আছে শুধু, তোমার কথায় হেথা
পাতা দুলে ওঠে না, কেবল
মর্মর ধ্বনিতে নৌকা বায়
মাঝি মাল্লাদের আফশোস—
প্রায়ন্ধকার আলোর নীচ দিয়ে চাঁদ ডুব যায়
রাক্ষুসে
‘কথা দাও’,
সমর্পণ শেষ হল এ মুহূর্তে
হরিদ্রাভ বাঁকা এক চাঁদ
উঠেছে আকাশ জুড়ে
তার শীর্ণ রূপ,
আমার দিকেই চেয়ে
ভীষণ কৌতুকে মেতে ওঠে
যেন শত বছরের দিনবদল
পেটের ভিতর হামাগুড়ি দিয়ে
ঢুকে যাচ্ছে ধীরে
অকস্মাৎ বুঝতে পারি,
একটি আস্ত চাঁদ আমার ভিতরে,
জন্ম নিচ্ছে নখ দাঁত চিরে
কেতাব-ই’র ব্লগজিন বিভাগে লেখা পাঠাতে চান? মেল করুন blogzine.ketabe@gmail.com-এ। মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখুন ‘কেতাব-ই ব্লগজিনের জন্য লেখা’।
গুণিন
দীর্ঘ পথ বেঁকে গেছে সাপের মতন
আমাকে ঘুরিয়ে মারে,
ওঁত পেতে থাকে
কোনো এক মুনি বুঝি করেছে অমর!
ইশারায় কেঁপে ওঠে বরাতের জোর
বেঁচে আছি, তবু জানি
আমাকেই খাবে
কামিনী ফুলের ঘ্রাণ, ভেসে যায়,
যাবে....
প্রতিবিম্ব
খাল কেটে এনেছি কুমীর
মেটেনি তাতে স্বাদ
কী আহ্লাদ আহা আমার কী আহ্লাদ
ভরা জ্যোৎস্নায় পান করেছি
অমৃতেরই স্বাদ
কী আস্বাদ অহো জিভে কী আস্বাদ
তোমাকে চেয়েছি কোনখানে
আর কোথায় তুমি এলে
দুঃখ দিলে প্রাণে ওগো দুঃখ দিয়ে গেলে
জুড়িয়ে গেল বুক আমার
ফুরিয়ে গেল সুখ
এমনই অসুখ উহু এমনই অসুখ
তোমার চলে যাওয়ার পর
কেমন যেন ঠায়
বসেই থাকি বসেই থাকি বসেই থাকি প্রায়
পিছন থেকে লোকে আমায়
হাফ গান্ডু বলে
আসলে তুমি জানো কথা এমন করেই ফলে
অভিসম্পাত দিয়েছ তুমি
এমনই তার মায়া
ছায়াদোসর মায়াদোসর কায়াদোসর ছায়া
কেতাব-ই’র মুদ্রিত বই, ই-বই এবং ব্লগজিন বিভাগের লেখালিখির নিয়মিত খোঁজখবর পেতে আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন।
এই ব্লগজিনে প্রকাশিত সমস্ত লেখার বক্তব্য লেখকের নিজস্ব।
শামীম নওরোজ
1 সপ্তাহ আগেসবগুলো কবিতা ভীষণ ভালো লাগলো