preloader
বাংলা বইয়ের e-ভুবন
Menu Categories Search Cart 0
Menu
Cart

Total 0 Items

☹ Your cart is empty

Sub Total:

$0

₹0

বিভাগ
আসলে শীত, কিছু ক্লিষ্ট ছোট পাখি
কবিতা

আসলে শীত, কিছু ক্লিষ্ট ছোট পাখি

প্রকাশিত হল শুভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের গুচ্ছ কবিতা ‘আসলে শীত, কিছু ক্লিষ্ট ছোট পাখি’।

অথচ বেশি দূরের কথা ভাবলে

আমার ভয় করে। বৃহস্পতি গ্রহে দু-শতক ধরে চলা ঝড় বা নাগালের বাইরের কোনো নক্ষত্রের আবহাওয়া—তার চেয়ে পতঙ্গের বেরং ভালো। কীট গ্যালাক্সি। তাদের নাক্ষত্রিক ডানায় সমস্ত মহাজাগতিক কণা ভেসে থাকে, যেভাবে মাটির গভীর তলে ইরিডিয়াম। মহাউল্কাপাতের আগেকার পৃথিবী ও আমাদের বর্তমান প্রাণজগতের সীমানা সূচিত করছে যেভাবে সকাল বেড়া দেয় শুশ্রূষার—আমি মাথা উঁচু করে আলো শুষে নিচ্ছি, আমার শরীর ঘিরে নিচ্ছে আলোর ফিতে, শ্বাসপ্রবাহ স্বাভাবিক হয়ে আসছে। শুধু আমার সাধের ঝরনাকলমের নিবের ডগায় থেকে গেছে ইরিডিয়াম যা পৃথিবীতে ডাইনোসর লুপ্তির একটা চিহ্ন, আমার প্রতিটা অক্ষর সেই বিশাল প্রাণের শেষতম আর্তনাদের প্রতিধ্বনি

সেই যুবককে খুঁজছি

যার বন্ধ্যা অস্থিরতা কেবল ধাতব ছায়ার মধ্যে বন্দি থাকত। যেন পরিপার্শ্ব ঘিরে নিয়েছে ভেজা পাখিদের কলস্বর। তার অশ্রুশুষ্ক দৃষ্টি এখন বহুতলেদের মাঝে ভেসে বেড়ানো রঙিন পতঙ্গের মৃত ডানা, যদিয়ো সে বুঝেছিল রং আসলে প্রকৃত আলোর পথচ্যুতি

মির তকি মির লিখেছিলেন

হৃদয়ের মৃত্যু হওয়ার শোক ভয়াবহ। যেমন সেই বারবার মাথা নামানো যুবক প্রতিটা লবণকণায় সমুদ্রের শুকিয়ে যাওয়া আত্মার মতো প্রয়োজনীয় হতে চেয়েছিল। দূর থেকে তার অস্থিময় দৃষ্টি প্রত্যক্ষ করি, এই ওলটপালট বাতাসের জঙ্গলে তার ছায়া দিয়ে তৈরি পাখিদের বিশ্রামের মতো বসে থাকা, যেভাবে সাজাপ্রাপ্তকে ঘষটে নিয়ে চলে যাবে শুশ্রূষাহীনতার দিকে, যেন তার কাঁধে বসল রঙিন পতঙ্গ, এভাবেই এক অসুস্থের পর আরেক উন্মাদ তার নিদ্রাহীনতা সাজিয়ে চলবে ক্যালেন্ডারে

প্রথমবার শিলিগুড়ির বর্ষালোক

দেখে মনে হয়েছিল আকাশ আর্দ্র আগুনের গম্বুজ। অথচ আত্মজীবনীর পথে বেশিদূর যাওয়া যায় না। স্নেহ প্রতিরোধ করে। এখন কেবল নিঃশব্দ চিৎকার। সুপ্রভাত প্রিয় কবিতা, তোমার ইচ্ছেমতো তোমার ঘরে ঢুকে এসেছি। এখন সমস্ত সম্পর্ক আগুন। এখনকার বাথান ৮৫ নম্বর অসমাপ্ত পাণ্ডুলিপি রোড যেখানে সন্ধ্যা স্থির হয় বাতাসের স্পর্শে। যাবতীয় ভ্রান্তির কাদার গন্ধ আমি মেনে নিয়েছি, ভুল এক স্বতন্ত্র রাষ্ট্র যার পতাকার কালো রঙে কিছু লাল থ্যাঁতলানো ফোঁটা আছে, আর মাস্তুলের কাঠে বাসা করেছে বোবা চড়াইয়ের ঝাঁক

কেতাব-ই’র ব্লগজিন বিভাগে লেখা পাঠাতে চান? মেল করুন blogzine.ketabe@gmail.com-এ। মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখুন ‘কেতাব-ই ব্লগজিনের জন্য লেখা’

বধির সেতার বাদক

সুবলবাবু আমাদের মফস্‌সলের এক প্রধান আকর্ষণ, প্রতিটি উৎসবে তিনি ঘাড়ে পাউডার দিয়ে নিজেই মঞ্চালোক। উচ্চগ্রামে দ্রুতলয়ে তাঁর সংগীত আসলে এক পোড়ো ঠাকুরতলা যেখানে ঈশ্বর ও বাদুড় ছাড়া আর কেউ থাকে না। ক্রমশ নদী গিলে নিচ্ছে তার উঠোন, স্বপ্নের মাঝখানে তার ছাদের ফাটল প্রাণপণ রক্ষা করে বিরাট একটা রোমশ ডানা, যেন কালো আকাশ আমাদের প্রাপ্য নয়। অথচ সকাল শান্ত, নভেম্বর ও শিশির কাঁপতে থাকা চোখের মতো প্রতিটা সন্ধ্যামালতী পাতায়, যেভাবে অক্ষমতা আমাদের দৃষ্টির টুকরো উপহার দেয় ভঙ্গিতে

সাধনদুর্লভ রাস্তা

আজকের রিং রোডের পাশ দিয়েই যেত অষ্টাদশ শতকের দিল্লিতে, যখন আঁধির স্পন্দন মাপত ভাষা সম্ভাবনা। যেন শুশ্রূষাবাতাস যমুনার ঢেউয়ের আহত শরীরে—ঠিকানাহীন মানুষের সামনে কেবল বড় হয়ে দিকচিহ্নের মত পুব দর্শানো হাওয়া, কে জানে কেমন ছিল নক্ষত্রের দ্যুতি, কেমন বৃষ্টির শব্দ, কে মনে রেখেছে সেইসব পান্থশালার কথা যেখানে কারুর কোনো পরিচয় লাগত না, বাক্সপ্যাঁটরার বদলে বিনিময় মাধ্যম হয়ে উঠত গণহত্যার ভয়, যেন দূর ইরান থেকে কেউ পালিশ করা ধাতব পুষ্প এনে থেঁতলে দিয়েছে লালকেল্লার পাখিদের ভাষা, তারপর চতুর্দিকে থকথকে রক্তের পাঁক, সকাল এসেছে মাংসল মিথ্যের মতো, স্পষ্টবাক কবি সওদা বেরিয়ে পড়ছেন ঘাটা মসজিদের দিকে

স্কটল্যান্ডের কবি ডাগলাস ডান

তাঁর কবিতাকে বাতিঘরের আলোর মধ্যে দিয়ে ক্ষমাহীন জলের উপর ছড়িয়ে দিতে চেয়েছিলেন। আমরা যারা জনবহুল দেশে উদাত্ত আদিম প্রকৃতি সহজে পাই না তাদের চোখের সামনে কেবলই অনচ্ছ দৃষ্টির মতো একটা জানলার পর্দা কেঁপে ওঠে, যেন কোনো ঘর কল্পনার মস্তিষ্ক, মোমরং সাদা, যেন বহুকাল আগে তৈরি আত্মবিশ্বাসের মতো হৃদস্পন্দন আচমকা আক্রমণ করল এই একঘেয়েমিকে—যেমন অনেক উপর থেকে দেখলে সমস্ত স্থিরতা তাদের উচ্চতা হারায় কেবল আগুন দিয়ে তৈরি সুতোর টুকরো জড়িয়ে রাখে সমস্ত অবতরণ


কেতাব-ই’র মুদ্রিত বই,ই-বই এবং ব্লগজিন বিভাগের লেখালিখির নিয়মিত খোঁজখবর পেতে আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন


এই ব্লগজিনে প্রকাশিত সমস্ত লেখার বক্তব্য লেখকের নিজস্ব।

Image Description

প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়

20 ঘন্টা আগে

দুর্দান্ত।বই হোক


মন্তব্য করুন

লেখক

শুভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, জন্ম ১৯৭৮, কলকাতা। প্রকাশিত কবিতার বই ৫টি। বৌদ্ধলেখমালা ও অন্যান্য শ্রমণ কাব্যগ্রন্থের জন্য সাহিত্য আকাদেমির যুব পুরস্কার, পেয়েছেন মল্লিকা সেনগুপ্ত পুরস্কারও। স্পেনীয় সরকারের দেওয়া আন্তোনিও মাচাদো কবিতাবৃত্তি পেয়েছেন ২০০৮ সালে। পোয়েতাস দে ওত্রোস মুন্দোস সম্মাননা ২০১৪। স্পেনে চারটি কবিতার বই প্রকাশ পেয়েছে। ডাক পেয়েছেন মেদেইয়িন আন্তর্জাতিক কবিতা উৎসব ও এক্সপোয়েসিয়া, জয়পুর লিটেরারি মিট সহ বেশ কিছু আন্তর্জাতিক সাহিত্য উৎসবে। অংশ নিয়েছেন Poetry connections India-Wales প্রকল্পে। দক্ষিণ আফ্রিকার কবি আরি সিটাস, ও স্পেনের কবি ফেরমিন এররেরোর সঙ্গে লিখেছেন যৌথ কাব্যগ্রন্থ। বর্তমানে দিল্লির ইন্সতিতুতো সেরবান্তেস এ স্পেনীয় ভাষার শিক্ষক।

অন্যান্য লেখা

দেখতে পারেন