preloader
বাংলা বইয়ের e-ভুবন
Menu Categories Search Cart 0
Menu
Cart

Total 0 Items

☹ Your cart is empty

Sub Total:

$0

₹0

বিভাগ
এ পরবাসে
ডায়াস্পোরা

এ পরবাসে

পরবাস বা প্রবাস বহু মানুষকে এমন কিছু প্রশ্নের সামনে দাঁড় করিয়ে দেয়, যার উত্তর মেলে না। প্রশ্নগুলি থেকে যায়। সে সব প্রশ্ন কে করে? সম্ভবত আয়না। কিন্তু প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গিয়ে প্রশ্নগুলিকে লিপিবদ্ধ করে রাখাও একটি পথ—উত্তর সন্ধানের।

হ্যাঁরে অপু, তোরা নাকি এ গাঁ ছেড়ে চলে যাবি?

তুই যে বলিস নিশ্চিন্দিপুর আমাদের বড়ো ভালো গাঁ, এমন নদী  মাঠ এমন মাঠ কোথাও নেই- সে গাঁ ছেড়ে তুই যাবি কি করে? (পথের পাঁচালী)  

আমিও একদিন চেনা ঝরিয়া শহরের আমলাপাড়া, রাজবাঁধ, ইভনিং ক্লাব, হরি মন্দিরের মাঠ ছেড়ে এসেছি অচেনা শহর কলকাতায়, দেখেছি অচেনা পাড়া,  অচেনা মুখ।  পেয়েছি অচেনা দুঃখ।   তারপর দিনে দিনে গড়ে উঠেছে নতুন  ভালোবাসা। সিঁথির মোড় থেকে বরানগর বাজার, কুঠি ঘাট, উত্তর কলকাতার অলিগলি, স্টারে নাটক, টকি শো হাউস, মিনার,  মিত্রায় দশ আনার টিকিটের লাইন, রঞ্জি স্টেডিয়ামে চার টাকার টিকিটে প্রথম টেস্ট ম্যাচ আর মোহনবাগান!  আমার প্রথম প্রেম, প্রথম কবিতা, প্রথম শোক। শহর বদলেছে আমার ইচ্ছেয় নয়, পারিবারিক  প্রয়োজনে ।  আবার সেই পারিবারিক কারণেই রয়ে গেছে জীবনের ধ্রুবতারা – আমার গ্রাম;  মোড়ল পুকুরের ভাঙ্গা ঘাট, আটচালায় দুর্গা পুজো, হিম ঝরানো চাঁদনি রাতে দূরে বেলে মাঠের এক মায়াবী চাদর, প্রচণ্ড গরমে গঙ্গাদের মাটির বাড়ির একতলায় টোয়েনটি নাইন, বিন্তি খেলা, মাঠের পুকুরের পাড়ে প্রথম সিগারেট খাওয়া। বাল্যবন্ধুকে জানিয়েছি পৃথিবী থেকে বিদায়।

একদিন  ছেড়ে এসেছি  কলকাতা শহর, পদুমা গ্রাম; হারিয়েছি আটচালার পুজো, রক্তে মিশে যাওয়া কলকাতা শহরকে।  সারাটা  জীবন ধরে বুঝেছি কলকাতার কোন বিকল্প নেই। তবু একদিন বাসা বেঁধেছি আরেক  নগরীতে— ফ্রাঙ্কফুর্ট, জার্মানি। আরেক দেশ, শহর, জীবন, ভাষা, বন্ধু বান্ধবী, অন্য ভাষায় প্রেম সাহিত্য কবিতা ভালোবাসা। মনের  জানালা খুলে গেছে, শুরু হয়েছে ইউরোপ আবিষ্কারের অন্তহীন অভিযান। 

এক দশক বাদে আরেক যাত্রা, আপন ইচ্ছায়, কর্মের কারণে, পুনরায় পশ্চিম পানে প্রকাণ্ড লন্ডন শহরে।  ততদিনে আমি সংসারী, গৃহী ।  কলকাতা বা ফ্রাঙ্কফুর্টের মতন লন্ডনকে কোনদিন ভালবাসার বন্ধনে জড়িয়ে ধরতে পারিনি – শয়েটি আমার কর্মস্থল মাত্র।  বরং সাড়ে চার ঘণ্টার দূরত্বে  উত্তর পশ্চিম ফ্রান্সের একটি গ্রামে আমাদের ছুটির আবাসে পেয়েছি আমার পদুমা গ্রামের স্পর্শ  – বারান্দায় বসে শুনি ঘুঘুর ডাক, সন্ধের নিশ্ছিদ্র অন্ধকার, গ্রীষ্মের পূর্ণিমারাতে সারা দিগন্তে ঠা ঠা করে  চাঁদের  আলো, চোখ খুললেই হয়তো দেখতে পাবো বেগুনবাড়ির তাল গাছ। 

জীবন কি তাহলে চলে একটি সরল রেখায়? এক নদীতে দু বার চান করা যায় না ? ফেরা যায় না ?

রাইনের ধারে বসে ছোট  মেয়ে  মায়া প্রশ্ন করেছিল ,  আমাদের মনের ভেতরে কোথাও কি একটা ছোট্ট কোন, কুলুঙ্গি থাকে? যতোই ঘুরে বেড়াও, মাঝে মাঝে সেইখানে থামতে পারি ?  তোমার  মনের ভেতরে কোথাও কি ছোট্ট নিরালা নিভৃত একটি কোন  আছে যা কখনো বদলায় নি ? চোখ বুজলেই তাকে দেখতে পাও ?

ভাববার চেষ্টা করেছি –  আছে কি আমার এমন একটি কোণ? একান্ত আপন? যেখানে বসলে, চোখ বুজলেই  পাবো সেই সব দৃশ্যের ঘ্রাণ, বলব মনে আছে, সব মনে আছে,  জলের ধারে বসে থাকার স্মৃতি কি কখনো ভোলা  যায়? আমার মায়ের পুজোর ঘর, সন্ধেয় তিনবার বাজে শাঁখ, খিড়কির আমতলা,  বিজয়া দশমীর সন্ধেয় প্রতিমা নিরঞ্জনের পরে করুণ সুরে বাঁশি বাজায় বাজনদারেরা, এই যে ছিল কোথায় গেল কমলে কামিনী? নবান্নের গন্ধ?

এই নিরন্তর পথচলা কি কেবল একমুখী, পিছনে ফিরতে পারি না? অন্তত কিছুক্ষণের জন্য হারিয়ে যেতে পারি না একটি অতি প্রিয় সুখের সময়ের আলিঙ্গনে?

রাইনের  মাঝে ছোট  দ্বীপে পাঁচশ বছরের পুরনো দুর্গ, তেলবাহী বোট চলেছে সুইজারল্যান্ডের দিকে, টুরিস্টেরা হাত নাড়েন প্রমোদ তরণী থেকে। আলো ঝিলমিল করে রাইনের জলে। যে জার্মানি  এই দূর দেশের এক পথিককে সাদরে ঘরে, হৃদয়ে দিয়েছে স্থান তাকেও ছেড়ে যেতে পারি না। তাই এখানেও একটি ছোট কুটিরে আসি; জানি  আমার জার্মানির দিনগুলিকে ধরা যাবে না দেখে যাবো এই নদীর তীরে সেই বাখারাখ যেখানে একটা বিয়ারের ম্যাটের ওপরে সে লিখেছিল, তোমার,  তোমাকে অনন্তকালের জন্য ভালোবেসে - আঙ্গেলিকা। 

এইসব গল্প রয়ে যাবে চিরদিন।

হ্রদের ধারে বসে বকরূপী  যম প্রশ্ন করেছিলেন, সুখী কে ?

যুধিষ্ঠির বলেছিলেন, অঋণী ও অপ্রবাসী ।

সেই সুখ আমার ভাগ্যে জোটেনি। সাতটা দশক  চারটে দেশ দুটো মহাদেশ পেরিয়ে প্রশ্ন জাগে - প্রবাস মানে কি শুধুই  দেশত্যাগ? ঠাই নাড়া শব্দটা আমাদের খুব চেনা - আমরা নিরন্তর বদলাই আমাদের আবাসন, পাড়া, শহর, গ্রাম, জেলা, প্রদেশ এবং দেশ।  সেটা কখনো স্বেচ্ছায়, কখনো একান্ত অনিচ্ছায়।

পথের পাঁচালীর অপু তার চিরচেনা নিশ্চিন্দিপুর ছেড়ে চলে যাবে অন্য কোথাও। গ্রাম ছাড়া মানেই তো পরবাসী হয়ে যাওয়া  তাই  রানী তাকে মনে করিয়ে দেয়, তুই যে বলিস নিশ্চিন্দিপুর বড়ো ভালো গাঁ?  অপুর নিজের ইচ্ছেয় নয়, পিতা হরিহর তাঁর সংসার অন্যত্র নিয়ে যাবেন বলে তাকে যেতে হয়।

এমনি করে শুরু হয় অপুর প্রবাস – সে আর কোনদিন ফিরবে না নিশ্চিন্দিপুর।  

কেতাব-ই'র ব্লগজিন বিভাগে লেখা পাঠাতে চান? মেল করুন manuscript.ketabe@gmail.com-এ। মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখুন ‘কেতাব-ই ব্লগজিনের জন্য লেখা’

লন্ডনে আমার এক ব্যাঙ্কার বন্ধু মাইকেল ডিকস কোনদিন ইংল্যান্ডের বাইরে কোথাও বাস করেনি; তার বাবা ছিলেন পোস্ট মাস্টার,  বদলির চাকরি, তিনি পরিবার সহ কোথাও দু বছরের বেশি খুঁটি গাড়েননি। মাইকের স্কুল বদলায়, শহর গ্রাম বদলায়। তার বাল্যকাল কাটে জীবনপুরের পথিকের মতন, কোনও দেশেই সাকিন নাই!  পরিণত বয়সেও তার একটা দুঃখ থেকে গেছে;  সে বলে, এতবার স্কুল বদলেছি যে আমার কোন বাল্যবন্ধু নেই।

ডিয়াসপোরা শব্দটি গ্রিক; তার অর্থ  ছড়িয়ে পড়া। জানা ইতিহাস বলে  মানুষ বহু শতাব্দী ধরে তার  আপন বাসস্থান দূরে ফেলে ছড়িয়ে পড়েছে অন্য কোথাও, অন্য গ্রাম, প্রদেশ অন্য দেশে- খাদ্যের, শান্তির, সুদিনের সন্ধানে, রাজ-আমন্ত্রণে, রাজ-নিষেধাজ্ঞায়, ধর্মযুদ্ধে, কখনো ধর্মগুরু পোপের ইচ্ছায়।  রোমান রাজা ইহুদিদের ইসরায়েল থেকে  তাড়ালে তাঁরা এলেন ইউরোপে, নানান দেশ তাদের আবার তাড়ালো – ইহুদিরা ছড়িয়ে পড়লেন দু চোখ যেদিকে যায়। সপ্তদশ শতকের ইউরোপে ধর্মযুদ্ধের করাল গ্রাস থেকে প্রাণ বাঁচাতে  মুখ্যত ক্রেফেলড থেকে প্রথম যে জার্মান পরিবারগুলি আমেরিকায় আসেন তাঁরাই  কালে পেন্সিলভানিয়ার জার্মান টাউন গড়ে তোলেন - এঁরা ফেলে এসেছিলেন বসত বাড়ি, মোষ গরু, নদীর কূল। ভাগ্য ন্ধানীরা এসেছেন পরে, ক্যালিফোর্নিয়াতে সোনার সন্ধানে,  যেখানে লেভি স্ত্রাউস বানালেন জিনস।  সবার শুরু শূন্য থেকে। জন্মসূত্রে জার্মান, জারিনা একাতেরিনা (ক্যাথারিন) রাশিয়াতে চাষ বাস ও সার্বিক  উন্নয়ন প্রকল্পে তাঁর বাপের বাড়ির লোকেদের আমন্ত্রণ পাঠালেন – অর্থ দিলেন, ভোলগা নদী এলাকায় দিলেন বিশাল জমি জিরেত, ধর্ম আচরণের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা, স্বায়ত্ত শাসনের অধিকার, আপন প্রদেশ নিজের রাজধানী। আজও ছ লক্ষ জার্মান সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন, এমনকি কাজাখস্তানেও। দেড়শ বছর বাদে জার আলেকসানদার পাঠালেন দ্বিতীয় আমন্ত্রণ পত্র – এবারে জার্মানরা গেলেন দক্ষিণ ইউক্রেনে,  ব্ল্যাক সি বরাবর যাদের আমরা জানি বেসারাবিয়ান জার্মান বলে। 

আজকের মরিশাসে , ত্রিনিদাদে ভারতীয় মূলের মানুষেরা সামান্য বেতনে আখের খেতে কাজ করতে এসেছিলেন স্বেচ্ছায় , ফিরে যাননি বিহার, বাংলা, উত্তরপ্রদেশে। সেখানে এখনো সন্ধেবেলা পুজোর ঘন্টি বাজে, সুরিনামে রামধুন দিয়ে রেডিও স্টেশনের অনুষ্ঠান আরম্ভ হয় , বেগুনকে তাঁরা বলেন বাইগন।  আর্জেন্টিনায় এক লক্ষেরও বেশি জাপানি মূলের মানুষ বাস করেন। রোমানিয়া স্লোভাকিয়াতে জিপসি ( রোমানি ) ভাষায় শোনা যায় আমাদের চেনা অনেক শব্দ - যেমন ছুরি, কাকা, দিবস, যাওয়া। তাঁরা গোনেন এক দুই তিন চার। ইংরেজ ভারতে রাজত্ব করেছে , সবংশে বসবাস করেনি, স্পেন পর্তুগালের দক্ষিণ আমেরিকান কলোনিতে তাঁদের উত্তর পুরুষ বাস করেন। আথেন্সের পরে দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্রিক  শহরের নাম মেলবোর্ন, ভারতের বাইরে বৃহত্তম ভারতীয় শহরের নাম ডারবান। যুগে যুগে যে ছিন্নমূল মানুষের দলকে  ডিয়াসপোরা আখ্যা দেওয়া হয়েছিল, তাঁদের আবারও  দেখি- যেমন আজকের ইউরোপের সিরিয়ান উদ্বাস্তু ; দু হাজার বছর আগের ইহুদি, চারশ বছর আগের জার্মানদের মতন তাঁরাও আপন দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। 

জার্মানিতে কোথাও লেখা দেখেছিলাম – আমরা সবাই বিদেশি । প্রায় সর্বত্র (Wir sind all Ausländer. Fast überall). 

প্রবাসী কে,  কেন মানুষ প্রবাসী হয় তার  ব্যাখ্যা যুধিষ্ঠির করেননি কারণ সেটা বকরূপী যমের প্রশ্নপত্রে ছিল না। যে মানুষ যে বাড়িতে জন্মেছে এবং  সেখানেই বাস করে সে অপ্রবাসী এবং সুখী। 

পাসপোর্ট,  ভিসা, চাকরিসহ আপন ইচ্ছেয় শুরু হয়েছিল আমার প্রথম সাময়িক প্রবাস। দু বছরের কড়ারে ফ্রাঙ্কফুর্টের স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়াতে কাজে এসেছিলাম, ঘটনাচক্রে কয়েক দশক কেটে গেলো; ফিরে যাওয়া হয়নি।  আমি তাই আমি স্বেচ্ছাপ্রবাসী, ভারতীয় মূলের ব্রিটিশ নাগরিক (এন আর আই বলতে তাঁদেরই  বোঝায় যারা ভারতীয় পাসপোর্টের মালিক)। আমার সময়েই দেশের সঙ্গে বন্ধন ক্ষীণ হয়ে আসছে,  আমার পরের প্রজন্ম চেনে না তার মাসতুতো জেঠতুতো ভাই বোনেদের। 

একদিন কোনও হাওয়াই জাহাজে পাশাপাশি সিটে বসে দু জনের আলাপ পরিচয় হবে, ঠিকানা বিনিময় করার সময়ে একই নাম সিংহরায় দেখে একজন আরেকজনকে বলবে, লুকস লাইক আওয়ার ফাদারস ওয়ের ব্রাদারস। 


কেতাব-ই’র মুদ্রিত বই, ই-বই এবং ব্লগজিন বিভাগের লেখালিখির নিয়মিত খোঁজখবর পেতে আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন


এই ব্লগজিনে প্রকাশিত সমস্ত লেখার বক্তব্য লেখকের নিজস্ব।

Image Description

তপন সেনগুপ্ত

2 মাস আগে

খুবই সংবেদনশীল এক লেখনীর প্রকাশ। প্রাণের টান মনের টান না থাকলে এমন মন ছুঁয়ে যাওয়া লেখা সম্ভব নয়।


Image Description

তরুণ চট্টোপাধ্যায়

5 মাস আগে

অসম্ভব সুন্দর মন কেমন করা একটি লেখা।প্রতিটি শব্দই কানে বাজে।


মন্তব্য করুন

লেখক

হীরেন সিংহরায়। জন্ম ১০ই ডিসেম্বর, ১৯৪৮। বাল্যকাল কেটেছে বিহারের (বর্তমান ঝাড়খণ্ড) ঝরিয়াতে। ১৯৬০ সালে কলকাতা, পাইকপাড়া। ক্লাস সেভেন থেকে ইলেভেন বরানগরের নরেন্দ্রনাথ বিদ্যামন্দির। সেই সময় এগারো ক্লাসেই হায়ার সেকেন্ডারি ও তিন বছরে গ্র্যাজুয়েশন। ১৯৬৫ সালে হায়ার সেকেন্ডারি হিউম্যানিটিস বিভাগে প্রথম স্থান। তারপর স্কটিশ চার্চ কলেজে এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঁটাকল ক্যাম্পাসে অর্থনীতি অধ্যয়ন। হীরেনের অতি প্রিয় ছোটবেলার ঝরিয়া, বরানগরের স্কুল, উত্তর কলকাতা, কাঁটাকল এবং সবার ওপরে বীরভূমের লাল মাটির গ্রাম পদুমা। এখনও। ১৯৭২-এ স্টেট ব্যাঙ্কে যোগদান। ১৯৭৭-এ সেই ব্যাঙ্কের ফ্রাঙ্কফুর্ট শাখায় বদলি কয়েক বছরের জন্য। জার্মানিতে ভাষা শিক্ষা ও চাকরির পরিবর্তন। ১৯৮৫ সালে লন্ডনের ইহুদি পাড়ায় সিকি শতকের আবাসন। কাজ লন্ডনের সিটি ব্যাঙ্কে ও পরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টাড ব্যাঙ্কে, মুখ্যত ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কিং। চাকরির সূত্রে ইউরোপ, এশিয়া, আফ্রিকার আশির বেশি দেশে আনাগোনা। অবসর জীবনে সারের ন্যাপহিল গ্রামে বসে সেই সব দেশের গল্প লিখেছেন অকপটে, যেখানে উঠে এসেছে মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কের কথা, একটি সখ্যের কাহিনি আর এই লেখার ফাঁকে সাজাচ্ছেন ইহুদি রসিকতার এক অনবদ্য সংকলন। বর্তমানে ব্যস্ত জার্মান স্মৃতি লিখনে। এককালে সেখানে ঘর বেঁধেছিলেন। পরে সে দেশ ছেড়েছেন কিন্তু এক অদৃশ্য অবিচ্ছেদ্য ভালবাসার বন্ধনে জার্মানির সঙ্গে জড়িয়ে আছেন সারা জীবন। হীরেনের একটি বিচিত্র শখ সম্পূর্ণ অনাবশ্যক বস্তব তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ।

অন্যান্য লেখা