গোলপুকুরের নাম কে যে গোলপুকুর রেখেছিল, আজকের প্রজন্মের কেউ আর জানে না। হয়তো যিনি কাটিয়েছিলেন, তিনিই এমন নাম দিয়েছিলেন, আবার গোল করে কাটানো হয়েছিল বলে অন্য কেউই অতি সহজ এমন নামটি প্রস্তাব করেন, তারপর ধীরে ধীরে লোকেমুখে এই নামটিই রয়ে যায়।
গোলপুকুরের নাম কে যে গোলপুকুর রেখেছিল, আজকের প্রজন্মের কেউ আর জানে না। শোনা যায়, এই পেয়ারাতলির রায় পরিবারের কোনও এক সদস্য পুকুরটি কাটিয়েছিলেন। সেই সদস্য স্বর্গগত হয়েছেন বহুদিন, মহাদেব রায়ের কয়েক প্রজন্ম আগের মানুষ। মহাদেব রায় লেখাপড়া-জানা লোক ছিলেন, তবে তিনিও সঠিক জানতে পারেননি, ঠিক কোন প্রজন্মের আমলে পুকুরটি খনন করা হয়েছিল। পুকুরের নাম সম্পর্কে তাঁর মত ছিল– হয়তো যিনি কাটিয়েছিলেন, তিনিই এমন নাম দিয়েছিলেন, আবার গোল করে কাটানো হয়েছিল বলে অন্য কেউই অতি সহজ এমন নামটি প্রস্তাব করেন, তারপর ধীরে ধীরে লোকেমুখে এই নামটিই রয়ে যায়।
মোট কথা, এই এত শত বছর ধরে পুকুরটি টিকে রয়েছে, এবং বর্তমানে তার নাব্যতা কমে গিয়ে গোলাকার অবয়বের কিঞ্চিৎ বিকৃতি ঘটলেও গোলপুকুর নামের কোনও বিকৃতি ঘটেনি।
রায়রা এই অঞ্চলের তিনশো বছরের পুরনো পরিবার, যথেষ্ট বর্ধিষ্ণু। যদিও এখন আর গ্রামে খুব বেশি কেউ থাকে না, সকলেই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়েছে। এক সময়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে এধারে-ওধারে বাস্তুজমি, দেবোত্তর জমি, ভাগচাষের জমি মিলিয়ে কম সম্পত্তি ছিল না, স্বাধীনতার কয়েক বছর পরেও বেনামি জমিদারি টিকে ছিল দিব্যি, কোনও অসুবিধা হয়নি। তারপর, দিন বদলাল, পরিবার ভাঙা শুরু হল, জমিজমা বেচেবুচে দিয়ে অনেকে শহরে ঘর পাতল, যাদের তখনও গ্রামে কিছু ভাগচাষের জমি ছিল, তারা সেসব বেচে দিল ’৭৮ সালে, বর্গা অপারেশনের সময়ে।
মহাদেব রায় এসব জমিজমা নিয়ে কোনোদিনই তেমন মাথা ঘামানোর মানুষ ছিলেন না। আই. এ. পাশ করে বি. এ., এম. এ. অবধি পৌঁছেছিলেন, তারপর কিছুদিন টিউশনের ভরসায় থেকে এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে স্কুলমাস্টারিতে ঢোকা, শেষে হেডমাস্টারি করে রিটায়ার। পুকুরের দক্ষিণ পাড়ের বাড়িটি তাঁরই, রিটায়ারের পর বানিয়েছিলেন। এ বাড়িটির বয়স বেশি নয়, বছর পঁয়ত্রিশ। আগে দোতলা ছিল, রংটাও ছিল ফ্যাকাশে হলুদ। দেশ-গাঁয়ে ঝলমলে রংটা একদম যায় না, এ যুক্তি থেকেই মহাদেববাবু রংটা হালকার উপর রেখেছিলেন। এখন তিনি নেই, আছে তাঁর ছেলেরা, তারা আরও একটা তলা বাড়িয়ে নিয়েছে, তিনতলার মেঝে ঢেকে দিয়েছে সাদা উদয়পুরি মার্বেলে, বাড়ির বাইরের দেওয়াল থেকে হলুদের বিষাদ সরে গিয়ে জায়গা করে নিয়েছে সমুদ্রসবুজ আর গেরুয়ার সর্বভূক কম্বিনেশন। গেরুয়াটা আজকাল সকলেই করছে, ওতে বেশ একটা ভক্ত-ভক্ত ভাব আসে।
কেতাব-ই’র ব্লগজিন বিভাগে লেখা পাঠাতে চান? মেল করুন manuscript.ketabe@gmail.com-এ। মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখুন ‘কেতাব-ই ব্লগজিনের জন্য লেখা’।
তাঁদের কিছু জ্ঞাতি থাকে কাছাকাছিই, সব মিলিয়ে গোটা পাঁচেক পরিবার। তাদের প্রতি ভাগ্যদেবীর এত দয়ামায়া হয়নি। এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে কেবল মাটির বাড়ির ওপর সিমেন্ট চড়েছে এই যা, তার বেশি কিছু নয়। শহরে যারা থাকে, মাঝেমধ্যে ছুটি কাটাতে আর অনুষ্ঠান করার প্রয়োজন না পড়লে তারা খুব একটা আসে-টাসে না। জ্ঞাতি-গুষ্টির লোকজনের সঙ্গে কথা বলাও খুব একটা হয়-টয় বলে লোকে দেখেনি। বলতে গেলে, শিক্ষিত ও বড়োলোক সদস্যদের মধ্যে একমাত্র মহাদেব রায়ই নিজেদের ভিটেয় আজীবন কাটিয়ে গিয়েছেন, যদিও আলাদা বাড়ি করে।
এতসব ভাগাভাগি, নাক সিঁটকানো যখন ঘটে গিয়েছে, তার মধ্যেও কীভাবে গোলপুকুরটা যেন টিকে গিয়েছিল। নাব্যতা কমে গিয়ে তার গোল ভাবটা বিকৃত হয়েছে, গবেষণা করলে হয়তো পুরনো মাছ-কাঁকড়ার বংশধরদেরও আর খুঁজে পাওয়া যাবে না, ওয়াটার কোয়ালিটি ইনডেক্সের মানও মেপে দেখলে ১-এর কাছাকাছি কি তার চেয়ে বেশিই আসবে নির্ঘাত, তবু গোলপুকুর যে এতকাল পরেও টিকে রয়েছে, সে সত্য অস্বীকার করা যাবে না।
এখনও তাকে কেউ ভাগাভাগি করতে পারেনি।
এই যেমন, সেদিন সকাল আটটায়…
গোলপুকুরের আধভাঙা ঘাটটায় দাঁড়িয়ে নীলকমল হালদারের বউটা– যাকে সবাই জষ্টি নামেই চেনে (জৈষ্ঠ মাসে জন্মেছিল বলে এমন নাম), যার ভালো নামটা তার বাপের বাড়ির গুটিকয়েক লোক, শ্বশুরঘরের স্বামী, শাশুড়ি, সোমত্থ মেয়ে, আর লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ডেটাবেস মেনটেন করা লোকগুলো ছাড়া আর কেউ সেভাবে জানে না– নীলকমল হালদারের সেই শান্ত স্বভাবের বউটা কাউকে গাল পাড়ছিল। সম্বোধনে পরিষ্কার, সেটা কোনও মেয়েকে উদ্দেশ করেই। সে বলে যাচ্ছিল– “হারামজাদি, ওলাউঠি, রোজ আমার গেঁড়ি তুলে নিয়ে যাচ্ছিস! ওই গেঁড়ি তোদের পেটে সইবেনে, মিলিয়ে নিস।”
কথাটা বলে নিয়ে তার বুঝি মনে হয়েছিল, ‘হারামজাদি’ বা ‘ওলাউঠি’টা যেন বড্ড সেকেলে শোনাচ্ছে। যে বা যারা তারা গেঁড়ি ঝেঁপে দিচ্ছে, তাদের জন্য এমন সেকেলে গালাগাল তেমন ওজনদার নয়। অগত্যা, গলায় জোর এনে কয়েকটা একেলে কাঁচা খিস্তিও সঙ্গে জুড়ে দিল।
নকুড় ঘোষের ছোট ছেলে স্বপন সেখান দিয়ে সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছিল। কাঁধে ব্যাগ। শহরে তার ইলেকট্রিক জিনিসের দোকান। নকুড়ের বয়স হয়েছে, এখন আর আগের মতো দুধ বিলির কাজটা করতে পারেন না, ওটা বড়ো ছেলে সমরই দেখে এখন। পাঁচ পুরুষের ব্যাবসা তো আর ছাড়া যায় না! সমরের একটা মিষ্টির দোকান খোলারও কথা আছে, কান পাতলে শোনা যায়। স্বপনের দোকানটা বাপেরই করে দেওয়া, রোজ কাঁটায় কাঁটায় আটটা নাগাদ রওনা হয় সে। বাসস্ট্যান্ডে সাইকেল রেখে বাস ধরে। সকাল দশটায় দোকান খোলা। সন্ধে সাতটায় বন্ধ করে বাড়ি ফিরতে ফিরতে নটা। সকালে পনেরো মিনিট অন্তর বাস, যেতে লেগে যায় প্রায় দুঘণ্টার কাছাকাছি। দাঁড়াবার সময় নেই, তাও নীলকমলের বউয়ের মুখে সক্কাল সক্কাল খিস্তির ফোয়ারা শুনে সে দাঁড়িয়ে পড়ল। এর আবার আজ কী হল? বরের সঙ্গে মাঝেসাঝে কথা-কাটাকাটি হয় বটে, কিন্তু চেঁচিয়ে পাড়া মাথায় করার মেয়ে তো সে নয়।
স্বপন তাই খানিক অবাক হয়েই তাকে জিজ্ঞাসা করল– “ও বৌদি, কাকে বলছ গো?”
বউটির মেজাজ তিরিক্ষে হয়েই ছিল, বেশ ঝাঁঝের সঙ্গেই জবাব দিল– “বলছি আমার শ্বশুরকে।”
স্বপন উত্তর শুনে হকচকিয়ে যায়। বলে কী? এসব ওর শাশুড়ির কানে গেলে আর রক্ষে থাকবে? মাথা-টাথা খারাপ হয়ে গেল নাকি? স্বপন বলল– “আরেকটু জোরে বলো, তোমার শাউড়ির কানে গেল বলে! মাথা ঠিক নেই নাকি তোমার?”
জষ্টি সেরকম চেঁচিয়েই উত্তর দেয়– “ঠিক থাকবে কীকরে! মেয়েটার পেটের ব্যামো সারছে নে, ওর জন্যেই রোজ গেঁড়ি তুলব বলে পাতা ফেলছি, আর কোন ওলাউঠি এসে ঠিক তুলে নিচ্ছে। শালা রেণ্ডি মাগী! ওদের পেটেও ওই গেঁড়ি সইবে নে, আমার কথা মিলিয়ে নিও।”
জষ্টিবৌদির বলার ধরন দেখে তো বটেই, অন্য একটা কারণেও স্বপনের এবার হাসি পেয়ে গেল। সে বলল– “যাহ শশালা, জানোও নে যে কে তুলছে, আর খিস্তি করে যাচ্ছ?”
নীলকমলের স্ত্রী এবার ভয়ানক রেগে যায় স্বপনের উপর– “তুমি যাওনে বাপু যেখানে যাচ্ছ। আমার ভালোমন্দ নিয়ে তোমাকে ভাবতে বলেছি?”
স্বপন দেখল, হাওয়া চট করে ঠান্ডা হওয়ার নয়। ওদিকে তারও দেরি হয়ে যাচ্ছে। সে আর কথা না বাড়িয়ে সাইকেলে উঠল। তারপর কিছুদূর এগিয়ে গিয়ে চেঁচিয়ে বলে উঠল– “লোকে পেট ঠান্ডা হবে বলেই গেঁড়ি খায়, বৌদি। পেটে সইবে নে বলে লাভ নেই। অন্য কিছু বলো-ও-ও।” তারপরে পিত্তি-জ্বালানো হাসি হাসতে হাসতে অদৃশ্য হয়ে গেল মজুমদারদের বাড়ির আড়ালে।
জষ্টি রাগে গরগর করতে করতে নিজের মনেই বলে– “তোর ঘাটের মড়া বাপকে গিয়ে বল।”
তবে স্বপন ছাড়া তার এই কাণ্ড যে আরও মানুষের চোখে পড়েছিল, এটা জষ্টি তখনও বোঝেনি। বুঝল বিকালে, রায়বাড়িতে গিয়ে।
যমুনা রায় মহাদেব রায়ের স্ত্রী। এখন বয়স আশি পেরিয়েছে। যমুনা থাকেন শহরে, বড়ো ছেলের বাড়িতে। ছোটো ছেলেটি ভিনরাজ্যে গুছিয়ে বসেছে, সে দু-তিনবছরে একবার করে গ্রামে আসে। যমুনা নিয়ম করে তিনমাস অন্তর আসেন, বড়ো ছেলের কেনা চারচাকা মারুতি অল্টোয় চেপে। তবে তার জন্য যমুনার যত না খাতির, খাতির বরং অনেক বেশি হেডস্যারের বউ বলে। দেশ-গাঁয়ে পুরনো কালের মাস্টারদের এখনও লোকে কিছু সম্মান-টম্মান করে। গ্রামে এসে একবার এসে পড়লেই হল, সকাল-বিকেল পাড়ার ছেলে-মেয়ে, বউ-ঝি, বুড়ো-বুড়ি এসে ভালোমন্দের খোঁজ নিয়ে যাবে। নকুড় ঘোষ আসেন, ক্লাবের সভাপতি ভদ্রেশ্বর পাড়ুই আসেন, মহাদেব রায়ের বড়ো স্নেহভাজন ছিল ভিলেজ লাইব্রেরির যে লাইব্রেরিয়ান, সে লোকটিরও চুলে পাক ধরে গিয়েছে, সেই গৌতম দাসও আসে।
এবং, নীলকমলের বউও আসে।
বাড়ি পুকুরের একদম পাড়েই হওয়ায় যমুনা প্রায় পরিষ্কারই শুনেছিলেন সকালের গালাগালগুলো। তাই বিকালে নীলকমলের বউ যখনই এল, তাকে বসতে দিয়ে আগেই জিজ্ঞাসা করলেন– “সকালে কার চোদ্দো গুষ্টি উদ্ধার করছিলে বউমা?”
যমুনার এই এক অদ্ভুত ক্ষমতা আছে। তিনি জায়গা বুঝে ভাষা ব্যবহার করতে জানেন। শহুরে ছেলে-বৌমা-নাতি-নাতনিদের পরিমণ্ডলে থাকলে কিছুতেই এ ধরনের ভাষা তাঁর মুখে আসত না, তখন ‘চোদ্দো গুষ্টি উদ্ধার’-এর বদলে ‘শাপ-শাপান্ত’-র মতো কিছু বলতেন। যদিও, শহুরে ঘরে কাঁচা খিস্তির ফোয়ারা তিনি শোনেননি যে তা নয়, বিশেষত, মাসের শেষ শনিবার যখন বাড়িতে বড়ো ছেলে আসর-টাসর বসায়, তখন মাঝেমধ্যে নেশা চড়ে গেলে ফোক্কোড় কলিগকে অমন দু-একটা শুনিয়ে দেওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়।
এই মুহূর্তে সকালের প্রসঙ্গটার মুখোমুখি হতে ভালো লাগছিল না নীলকমলের বউয়ের। সে কী বলবে, ঠিক বুঝতে পারে না। মাথা নিচু করে চুপ করে থাকে।
সে উত্তর দিল না দেখে যমুনা আবার জিজ্ঞাসা করলেন– “সকালে কী হয়েছিল, বলবে তো? হঠাৎ অত চেঁচামেচি শুরু করলে কেন? তোমার তো বাপু এ মতি কখনও দেখিনি।”
জষ্টি বুঝল, যমুনা উত্তর না পেয়ে ছাড়বেন না। কিন্তু অকারণে সে তো আর গালাগালগুলো দেয়নি। এই কথা ভাবামাত্রই বুকে সাহস এল তার। মাথা তুলে, খানিক স্বাভাবিক স্বরেই বলল– “আর বলবেন নে বড়োমা। কদিন ধরে মেয়েটার পেট গরম। ভালো করে খাচ্ছেও নে। জানেনই, আপনার দেওরপোর কারবার মোটে ভালো যাচ্ছে নে। কমাস ধরে কী টানাটানি! তাই ভাবলাম, গেঁড়ির ঝোল করে দিই মেয়েটাকে। পেট ঠান্ডা হবে, মুখেও রুচবে। কিন্তু রোজ রাত্তে পাতা ফেলছি, সকালে এসে দেখছি কিচ্ছুটি নেই। এরপরে কি আর মাথা ঠিক থাকে, বলুন?”
যমুনা পুরোটা শুনলেন। তারপর বললেন– “ও, তুমি তাহলে জানো না যে কে চুরি করছে? এমনিই হাওয়ায় গালাগাল দিচ্ছিলে?”
এই কথায় মহা অপ্রস্তুতে পড়ে জষ্টি। এবাড়ি আজ না এলেই হত। বড়োমা তো ক’দিন থাকবেন এখন। দু-একদিন পরে এলেই মনে হচ্ছে ভালো হত। কিন্তু এখন উঠে যাওয়াও ভালো দেখায় না। তার উপর প্রতিবার ফেরার সময়ে যে চার-পাঁচশো টাকার হাতখরচাটা দিয়ে যান, এখন উঠে গেলে যদি সেটা এবার ফস্কে যায়।
প্রসঙ্গটা বদলালেই হয়।
কিন্তু সে গুড়ে বালি। যমুনা আবার বললেন– “তখন বারান্দায় বসেছিলুম চা নিয়ে। শুনে বুঝলুম, কোনও মেয়েছেলেকেই বলছিলে। ব্যাটাছেলেও তো চুরি করতে পারে। যা সব বলছিলে, ও থেকে এবার যদি অশান্তি বাঁধে, পারবে সামলাতে? কাজ করবে, একটু ভেবেচিন্তে করতে পারো না?”
শেষ বাক্যটা রীতিমতো মুখঝামটার মতো শোনাল।
সকালে স্বপনও এই একই কথা বলছিল। কিন্তু জষ্টি তো সত্যিই অত ভেবেচিন্তে গাল দেয়নি। অত ভাবনাচিন্তার বোধ কি তাকে ভগবান দিয়েছে? এমনিই মনে এসেছিল, তাই ওসব বলে দিয়েছিল। সে প্রসঙ্গটা তাড়াতাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে– “অত মাথায় আসে নে বড়োমা। ও ছাড়ুন। কাল আবার দেখব খন। আপনার খবর বলুন। দিদিরা, দাদারা সব ভালো?”
যমুনা হেসে বললেন– “হ্যাঁ হ্যাঁ, সব ভালোই আছি। একটু বসো, চা করি।”
বিকালের চা যমুনা নিজেই করে নেন। অন্যান্য রান্নার জন্য মিনি বলে একটি মেয়ে রয়েছে। যে কয়েকদিন যমুনা দিদিমা থাকে, সে কদিন মিনি এ বাড়িতেই চব্বিশ ঘণ্টা সার্ভিস দেয়।
চা করে এনে যমুনা এককাপ জষ্টিকে দিয়ে বললেন– “এখন তো যে পারছ, গেঁড়ি-গুগলি তুলে নিচ্ছ। হত আমার পিসশাশুড়ির আমল, এসব পারতে? পুকুরের আশেপাশে কারোর একটু নড়া দেখলে একটা লাঠি নিয়ে তেড়ে যেত বুড়ি।”
জষ্টি সেই মহিলাকে দেখেনি, তার দেখবার কথাও নয়। সে মোটে বিশ-পঁচিশ বছর হল, এ গাঁয়ে বউ হয়ে এসেছে, আর সে বুড়ি মারা গিয়েছে তারও অন্তত বিশ বছর আগে, পাকা বয়সে। তবে কিছু-কিছু কথা শুনেছে তার নিজের শাশুড়ির মুখে, ভাসা-ভাসা। সে মানুষটি কেমন ছিল, কী করত, কী খেত, এতসব কল্পনা করার কোনও সুযোগও তার কাছে নেই। তাই সে কৌতুহলী হয়ে জানতে চাইল অদেখা পিসিমার সম্পর্কে। যমুনাও অনেকদিন পর পুরনো কথা শোনানোর মতো কাউকে পেয়ে বেশ গুছিয়ে বসলেন খাটের ওপর। তারপর বলা শুরু করলেন–
“তোমার জ্যাঠাবাবুর দূরসম্পর্কের পিসি, আমার শ্বশুরের চেয়ে বয়সে বেশ অনেকটা বড়ো, বোধহয় দশ-বারো বছরের। তখনকার দিনে দেশ-ঘরে যা হত, দশ বছরে বিয়ে দিয়ে দিয়েছিল বাড়ি থেকে। লোকটা অবশ্য ঘাটের মড়া ছিল না, পঞ্চাশের ঘরে বয়স ছিল শুনেছি। তবে রুগ্ন। দিনরাত্তির বিছানাতেই পড়ে থাকত নাকি। সাত-আট বছর কেটেছিল তাও বিয়ের পরে, শেষে একখানা মেয়েও হয়েছিল। সে মেয়েও শুনেছি ছোটো থেকেই রুগ্ন, বেশিদিন বাঁচেওনি। এইসব কারণেই সেই পিসিমা একেবারে খিটখিটে হয়ে গিয়েছিল। আমি যখন বিয়ে হয়ে এলাম, তখনই সে পঁচাত্তর পেরিয়ে গেছে। তাতেও কী দাপট, বাবা রে! আমি তো ভয়ে জুজু হয়ে থাকতাম। পান থেকে চুন খসলেই এমন বাপ-মা তুলে গালাগাল দেওয়া শুরু করত, সে আর কী বলব! আমার শাশুড়ি তো বটেই, শ্বশুরমশাইও তার ভয়ে একেবারে কাঠ। কেবল আমার কত্তাকে সমঝে চলত। ভালোওবাসত। বুড়ির সারাদিনের কাজের মধ্যে এক ছিল ওই, পুকুর পাহারা দেওয়া। এমনি পুকুরপাড়ে ঘুরঘুর করলেই সে হাঁকডাক শুরু করে দিত। আর কেউ যদি গেঁড়ি-গুগলি তুলতে এসেছে, ব্যস, তার চোদ্দো গুষ্টি ওখানেই উদ্ধার হয়ে যেত।”
একটানা কিছুক্ষণ বলে যমুনা খানিক দম নিলেন। তারপর হেসে বলেন– “যদিও তাতে কাজের কাজ কিছুই হত না। যারা নেওয়ার, তারা ঠিকই নিয়ে যেত। বুড়ি গালাগাল করুক না যত খুশি, ছুটে তো আর পারবে না।”
জষ্টি হঠাৎ কী মনে হতে জিজ্ঞাসা করে ফেলল– “কী বলত বুড়ি ওদেরকে?”
যমুনা এক মুহূর্ত চুপ করে থেকে বললেন – “সে কত কী যে বলত। অত আর কি মনে আছে আমার? পঞ্চাশ বছর আগের কথা। ওই বলত যে, আবার আমাদের ভিটেতে পা দিয়েছিস, সব মরবি সব মরবি। ওদিকটায় তখন কয়েক ঘর দুলে-বাগদি থাকত, ওদের ছেলেমেয়েগুলোই পুকুরে আসত ঝিনুক তুলতে, গেঁড়ি তুলতে, মাঝেসাঝে চুনো মাছ ধরতেও দেখেছি। ওদের দেখলেই সেই পিসিমা ছোটোলোক বলে কত যে গালাগাল দিয়েছে, ‘আবাগীর বেটা’-ও বলত খুব! সেই শুনে আমার নিজেরই এত লজ্জা করত। কিন্তু আমি বউমানুষ, আমি কি আর কিছু বলতে পারি!”
জষ্টি শুনছিল। যমুনা খানিক থেমে আবার নিজের স্বামীর কথায় ফিরলেন–
“আমার কত্তা এগুলোতে ভীষণ রেগে যেত। একদিন তো ইস্কুল যাওয়ার আগে এই নিয়ে পিসিমার সঙ্গে কী ঝগড়া! দুদিন ধরে পিসিমার সঙ্গে কথা বলেনি। পিসিমারও অভিমান হয়েছে। তারপরে সেসব মান-অভিমান ভাঙা, সে এক কাণ্ড হত!”
শুনতে শুনতে জষ্টির বেশ ভালো লাগছিল। জ্যাঠাবাবু মানুষটি চলে গিয়েছেন, আজ ছবছর হতে চলল। কী মানুষ ছিলেন, সত্যি! যেমন সুন্দর চেহারা, তেমন গুণ। সকলের খোঁজখবর রাখতেন। কত পড়াশোনা করেছেন, শহর থেকেও লোকজন আসত দেখা করতে। জষ্টিরা দেবতা মানত।
ভাগ্যিস আজ জ্যাঠাবাবু নেই, তিনি থাকলে আজ জষ্টির মুখে ওসব শুনলে…
ছি ছি! বড়ো অন্যায় হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সত্যিই তো সে অকারণে খিস্তি দেয়নি। সেই বুড়িও তো…
ওদিকে যমুনা তখনও বলে যাচ্ছিলেন– “তোমার জ্যাঠাবাবু কী বলত, জানো? বলত যে, পুকুর আবার আমাদের-ওদের কী? পুকুরের তলায় যা হচ্ছে, সে কি আমরা করছি? ডিম ফুটে যে মাছ বেরোচ্ছে, সে কি আমরা করছি? সব তো আপনা থেকেই হচ্ছে। যার যখন দরকার, সে মাছ ধরবে, গেঁড়ি তুলবে। ব্যস, সেই তোমার জ্যাঠাবাবুর সময় থেকে এসব শুরু হল।
–সেকি!
–হ্যাঁ। সে মানুষটি তো এমনই ছিল। তবে এই করে পুকুরটার তো বারোটা বেজে গেল। পিসিমা যখন ছিল, পুকুরে কী টলটলে জল দেখেছি আমি। কত নিচ অবধি দেখা যেত। এখন কেউ ভাবতে পারবে? কিন্তু তোমার জ্যাঠাবাবুর জেদের কাছে কে বা কী বলবে! পুকুর সবার, এই ছিল তার কথা।
গল্পে গল্পে অন্ধকারের আমেজ নেমে আসে গ্রাম জুড়ে। ছোটো একটা মোবাইল ব্যবহার করেন যমুনা, চোখের জন্য এখন আর ঘড়িতে সময় দেখতে পারেন না, মোবাইলেই দেখে নেন। ছটা বেজে গিয়েছে দেখে উঠে পড়লেন। আরও অনেকে খবর নিতে আসবে সন্ধ্যায়। তার আগে চৌকাঠে জল দেওয়া, সন্ধে দেওয়া। দশবছর আগেও তুলসীমঞ্চটা উঠোনে ছিল, জলে-জলে ক্ষয়ে আসায় ভেঙে দিল বড়ো ছেলে। এখন তিনতলায় শোবার ঘরের একপাশে ছোট্টো একখানা ঠাকুরঘর করে দিয়েছে ছেলে, মার্বেল-মোড়া মেঝের ওপর দেবদেবী-শোভিত সিংহাসন। সেখানেই সন্ধে দেওয়া। তবে মেঝেতে বসার সমস্যা, তাই ছেলে একটা ছোটো কাঠের টুল তৈরি করিয়ে দেওয়া হয়েছে।
জষ্টি বড়মার সন্ধে দেওয়াটা দেখছিল। তাকেও ঘরে যেতে হবে। শাশুড়ি সন্ধে দেবে এবার। সন্ধে দেওয়ার সময়ে বউমা ঘরে না থাকলে বিরক্ত হয় বুড়ি। এদিকে শাঁখ বাজানোটা হলেই উঠবে সে।
তার মনে, কীভাবে যেন একবারের জন্য সেই অদেখা পিসিমার মূর্তিটা ভেসে ওঠে।
দুলে-বাগদিদের ছেলেপিলেরা পাতা ফেলতে এসেছে পুকুরে, দেখতে পেয়ে গিয়েছে বালবিধবা, পাহারাদার বুড়ি। পুকুরপাড়ে দাঁড়িয়ে ছোটোলোক ছেলেগুলোর চোদ্দো গুষ্টি উদ্ধার করছে। একা।
কেউ কিছু বলতে পারে না বুড়িকে, কেবল স্কুলমাস্টার ভাইপো ছাড়া।
***
নারকেল পাতা-সহ গোটা ডালটা ভাসছিল জলের ওপর। একটা-দুটো করে গেঁড়ি এসে বসছে সেখানে। মিষ্টি জলের শম্বুকগোত্রীয়দের এই এক স্বভাব– মাঝেমধ্যেই উপরে উঠে এসে নিঃশ্বাস নেয়। এসব ঘটেছে বিবর্তনের নিজস্ব নিয়মে। গ্রামের লোকে সাধারণত রাতে এসে নারকেল বা খেজুর পাতা ফেলে দিয়ে যায়। রাত যত বাড়ে, ততই গেঁড়িকুলের আনাগোনাও বাড়তে থাকে পাল্লা দিয়ে। নারকেল পাতার ওপরে জড়ো হয় ওরা। খুদে খুদে, কদাকার শরীরগুলো আটকে যায় পাতার গায়ে, সে ফাঁদ কেটে বেরোনো আর সম্ভব হয় না।
জষ্টিরা এ প্যাঁচটা ছোটো থেকেই জেনে আসছে। সকালে এসে ওরা পাতাটাকে তুলে নিয়ে গেঁড়িগুলোকে বালতি মধ্যে ভরে। অনেকে আবার বেশি লাভের আশায় দু-তিনদিন ধরেও পাতা ফেলে রাখে।
জষ্টির ঘরে চারটে লোক, তাই একেবারে অনেকটা তুলে নিলে কয়েকদিন টানা চলে যায়। গোলপুকুরে গেঁড়ি এখনও অঢেল, এক রাতেই অনেকটা ওঠে। গেঁড়ি তোলা, তার খোল ভাঙা, রান্না করা, সবই জষ্টি প্রায় একাই করে। শাশুড়ি অবশ্য খোল ভাঙার কাজে কিছু সাহায্য করে। এখন বয়স হয়ে যাওয়ায় বেশ সময় লাগে বুড়ির। জষ্টির মেয়ে ছোটোবেলায় মায়ের সঙ্গে বেশ উৎসাহ নিয়েই খোল ছাড়াত, এখন আর সেও এসব দিকে ঘুরে তাকায় না। তার ঝোঁক সাজের দিকে, টিফিনের পয়সা জমিয়ে বান্ধবীদের সঙ্গে হরবখত লিপস্টিক কিনছে, নেলপালিশ কিনছে। নখ রেখেছে লম্বা লম্বা, সে নখে দু-তিনদিন ছাড়াই বাহারি নেলপালিশের পোঁচ পড়ে। গেঁড়ির খোল ভাঙতে গিয়ে অমন সাধের নখ নষ্ট হোক আরকি! এই নিয়ে প্রায়ই জষ্টির সঙ্গে ঝামেলা হয়, কিন্তু মেয়ে সেসব কানে তুললে তো। ছোটোবেলায় এমন করলে দু-একটা চড়-চাপড় লাগিয়ে দেওয়া যেত, কিন্তু এখন আর বেশি কিছু বলতে পারে না, কোনদিন পড়তে যাওয়ার নাম করে বেফালতু কোনও ছেলের হাত ধরে পালিয়ে যাবে, তখন ছিছিক্কারের চোটে থাকাই মুস্কিল হবে। ভাসুরের বড়ো মেয়েটা তো অমন করেই পালাল।
অগত্যা, কষ্ট হলেও গেঁড়ির দায়িত্ব জষ্টিকে একাকেই নিতে হয়।
গত দুদিনের অভিজ্ঞতার পর জষ্টি ঠিক করে নিয়েছে, একঘণ্টা আগেই পুকুরঘাটে চলে যাবে আজ। রোজ রোজ এ জিনিস চলতে পারে না। কিন্তু যেমন ভেবেছিল, তেমন হল না। ভাসুররা থাকে পাশের ঘরে, জষ্টির বিয়ের পাঁচ বছর পরেই হাঁড়ি আলাদা হয়ে গিয়েছিল, গত রাতে ভাসুরদের হুলো বেড়ালটা একটা পায়রা মেরেছিল, তার পালক, উচ্ছিষ্ট ছড়িয়ে পড়ে ছিল রান্নাঘরের সামনে, সেটা পরিষ্কার করতে গিয়ে তাড়াতাড়ি বেরোতে পারল না।
পায়রাটার সদগতি করে, হাত ধুয়ে সবে বেরোবে ভাবছে, এমন সময়ে কে একজন এসে তাকে ডাকাডাকি শুরু করল– “ও জেঠিমা, শিগগির এসো।”
জষ্টি শাড়িটা তাড়াতাড়ি ঠিক করে নিয়ে বেরিয়ে এসে দেখে, মিনি। এরকম সময়ে মিনি এখানে কেন? জষ্টির বুকটা ছাঁৎ করে ওঠে। সে জিজ্ঞাসা করে– “কী হল রে? বড়োমার কিছু নাকি?”
মিনি উত্তর দিল– “ধ্যাৎ, দিদুনের আবার কী হবে! তুমি শিগগির চলো-না আমার সাথে।”
মিনি তাকে একপ্রকার হাত ধরেই টেনে নিয়ে যায়।
দূর থেকেই পুকুরপাড়ে তিনজন মহিলাকে দেখতে পেল সে। যমুনা বড়মা, পিছনের বাড়ির বৈদ্যনাথ খুড়োর বউ, আর নয়ন মজুমদারের বড়ো বউমা। বড়মা আর বদ্যিখুড়ি মিলে নয়ন মজুমদারের বউমাকে কিছু একটা বলছে।
জষ্টি সেখানে উপস্থিত হতেই যমুনা বললেন– “এই যে বউমা, তোমার গেঁড়ি ও-ই তুলছিল এই কদিন। আজকে আমি দেখতে পেতেই ধরেছি। মিনিকে পাঠালাম তোমায় ডেকে আনতে।”
জষ্টির সর্বাঙ্গ জ্বলে গেল। মেয়েটি তার চেয়ে বছর পনেরো ছোটো। সে বলল– “কেন বউমা, গেঁড়ি তুলতে হয়, নিজেরাই তুলে নাওনে। আমার গেঁড়িতে হাত দোওয়া কেন?”
এতজন বয়োঃজ্যেষ্ঠর সামনে বউটি যেন কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। নিচু স্বরে বলল– “ছেলেটার কদিন ধরে পেটটা খারাপ কাকিমা।”
জষ্টি বলল– “তা বলে তুমি আমার গেঁড়িগুলো তুলে নেবে? অভাব তো কিছুই নেই তোমাদের। পেট ছেড়েছে তো শ্বশুরকে বলোনে, বরকে বলোনে, ডাক্তার-ওষুধ সবই তো এসে যাবে।”
বউমাটি স্বভাবে চাপা। তাই আর কথা বাড়ায় না। নয়নের বউ এখানে থাকলে এতক্ষণে কুরুক্ষেত্র বেঁধে যেত।
ব্যাপারটা যাতে আর বেশিদূর না গড়ায়, তাই যমুনা বললেন– “ঠিক আছে, যা হওয়ার হয়ে গেছে। আর নিজেদের মধ্যে ঝামেলা বাড়িও না। ঘরে যাও সব।”
বউমাটি অপরাধীর মতো মাথা নিচু করে বাড়ির দিকে হাঁটবে বলে পা বাড়াল।
জষ্টি এগিয়ে গিয়ে তার হাত ধরে বলল– “দাঁড়াও। ছেলেটার পেট সারেনে তো এখনও? নিয়ে যাও কয়েকটা।”
***
দুটো দিন কেটে গিয়েছে তারপর।
জষ্টি দাওয়ায় বসে একখানা বেগুন কাটছিল। মেয়েটা খানিক ভালো। তবে মুখে এখনও রুচি ফেরেনি। বেগুন-বড়ির ঝোলটা পছন্দ করে। বড়ো বেগুনটা সকালেই ভাসুরের ছেলে পল্টু এনে দিয়েছে।
কয়েক ফালি কেটেছে, এমন সময়ে বদ্যিখুড়ি এসে খবর দিল– “অ বউমা, তোমার গেঁড়িগুলো আবার তুলে নিল যে।”
বেগুন কাটা থামিয়ে জষ্টি মুখ তোলার সঙ্গে সঙ্গেই বদ্যিখুড়ি আবার বলল– “নয়নের বউটা আজকে নিজেই এসেছে। মাগীর শয়তানিটা দেখো শুধু! শিগগির যাও, শিগগির যাও।”
বঁটি-সহ আধকাটা বেগুনটা একপাশে রেখে, হাতখানা কাপড়ে মুছে নিয়ে, উঠোনে রাখা হাওয়াই চপ্পলজোড়া কোনোরকমে পায়ে গলিয়ে, জষ্টি পুকুরের দিকে ছুটল।
কেতাব-ই’র মুদ্রিত বই, ই-বই এবং ব্লগজিন বিভাগের লেখালিখির নিয়মিত খোঁজখবর পেতে আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন।
এই ব্লগজিনে প্রকাশিত সমস্ত লেখার বক্তব্য লেখকের নিজস্ব।
মন্তব্য করুন