প্রকাশিত হল সিদ্ধার্থ বসুর দীর্ঘ কবিতা ‘যা শাশ্বত, সতত অস্থির’।
নারীরা প্রতীক্ষা করে
যাবতীয় আবেদন— কিম্বা নিবেদন—
উদ্গমের প্রাকমুহূর্তেই
তীব্র সংশয় করে, শ্লেষ করে
হিংস্র নেতি করে
অতঃপর— কখনো কখনো
যে পিশাচ, ক্লিন্ন-ভেন্ন আত্মের আকর
তারই ঢোলা (কিম্বা আঁটো) শার্ট ছিঁড়ে ভেঙে পড়ে
ভিজে যায়-গলে-মিশে-বেলাগাম ঝোরার মতন
তারপর একদিন
কোনো এক অশুভ (?) মুহূর্তে
আসে প্রত্যাখ্যান
(আসতেও/আসতেই তো পারে)
আর
নারী ফিরে যায় তার ঠিক প্রথম প্রকাশে:
যাকে সে স্বজ্ঞায় প্রগল্ভ বলে
অগভীর, যৌনপশু বলে
সূত্রপাতেই চিনেছিল
সে পুরুষই— সে-ই আজ ফেরাচ্ছে তাকে
বিচ্ছেদের চেয়ে বড়ো হয় আত্মখণ্ডনের গ্লানি
কেতাব-ই’র ব্লগজিন বিভাগে লেখা পাঠাতে চান? মেল করুন blogzine.ketabe@gmail.com-এ। মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখুন ‘কেতাব-ই ব্লগজিনের জন্য লেখা’।
নারীরা প্রত্যাখ্যাত হয় না কখনো
একমাত্র ধান্দাপ্রিয় রাক্ষসের হস্তক্ষেপ ছাড়া
পুরুষ মওকা খোঁজে
অনায়াস আবেদনে-নিবেদনে
নিজেকে বেফালতু টুকরো করে ভাঙে
শত নেতিতেও তার সোৎসাহ মরে না
যেহেতু নিক্ষিপ্ত হওয়া অতিপ্রত্যাশিত
দ্যাখ-মার নীতিতেও দমে না দমে না
আজ একটুকরো এঁকে
কাল ওঁকে আরও একফালি
এভাবে আনতাবড়ি ব্যাঙবাজির মতো
নেচে নেচে যায় জলতলে
সহজে সে গভীর জানে না
তারপর হয়তো কখনো
(হ্যাঁ এমন দিনও আসেই, এসে থাকে)
এলে কিছুকিঞ্চিৎ সম্মতির স্বাদ
সে-ও গলে, মিহি চুরচুর হয়ে
গায়ে-পায়ে চেপটে লেপটে থাকে
— ঠিক এক নারীর মতোই—
শুতে দেয় না-বসতে দেয় না
নিজেও সে শোয় না-বসে না
আসা-যাওয়া, উঁচু-নীচু, চল ও অচল
সর্বস্বে মিশে যেতে গিয়ে
হাঁকপাঁক, চুনমুন, ঘর-বার করে
তারপর একদিন
(দু-দিন দু-দশ মাস কিম্বা বছর ঘুরে গেলে)
এক পা এগোনো জমি
দুই পা পিছিয়ে ছেড়ে আসে
খুব কিছু তোলপাড় ওঠে না
পুরুষ প্রত্যাখ্যান জানে, নিবেদনও জানে যেরকম
তারপর দেখানে-মনোবেদনার আঁচে
(না দেখিয়ে নিরুপায় বলে)
চুপিচুপি দগ্ধ হয়
এবং ব্যাঙের লাহান
পরবর্তী ঢেউ মুখী সহজ ঝাঁপায়
কিন্তু এ পুরুষ নয় দেহে শুধু
নারীও শুধুই নয় জৈব সূত্রে নারী
সংসারের ক্ষমাহীন মায়াচ্ছন্ন পাকে
পুরুষের মধ্যে নারী
মাদীরও গহনে মদ্দা ওঁত পেতে থাকে
কোনো শিল্পী— পুরুষালি সৌন্দর্যরসিক—
কখনোই বিচ্ছেদ শেখে না
ঠিক এক আস্ত মস্ত নারী—
যাকে ছেড়ে কখনও যায় না কেউ,
ঘন মতলবী নষ্ট-ভ্রষ্ট ছাড়া
আর সেই নারী— কামনার কেন্দ্র থেকে ঝরে
দুর্নিবার আকর্ষণ করে সে শিল্পীকে,
আবার একদিন তাকে–অনিবার্য–ছেড়ে চলে যায়
আর অংশভাক হয়
এই অসম্ভাব্য অশৈলী স্বাভাবিকতার,
যার অসত্য দহনে
তার সামাজিক ছারখার চলে
–ঠিক সোমত্থ পুরুষ এক
পায়ে পায়ে ঘুরতে বাধে না যার
পায়ে করে ছুড়ে দেওয়া যার জন্মদোষ—
এভাবে প্রতিটি নারী
পুরুষ বা নারীতে কখনো
এইভাবে প্রত্যেক পুরুষ
এই মাগী এই মিনসেতে
মিশে থাকে, পিষে যায়
চিত্র গড়ে, নষ্ট করে নিজে
এভাবে নারীকে চেয়ে যে পুরুষ
অহরহ উথাল-পাতাল
আর স্বতশ্চল, দূরত্ব রেখে যে নারী
ইচ্ছাসুখে বেখাপ-বেতাল,
একে অপরের সত্তা জুড়ে
মত্ততা ছড়ায়
সব যোগ ভেঙে পড়ে, গড়ে, ফের…ফের
চরাচর অস্পষ্ট করে
রাত নামে, ভোর মুছে যায়।
কেতাব-ই’র মুদ্রিত বই,ই-বই এবং ব্লগজিন বিভাগের লেখালিখিরনিয়মিত খোঁজখবর পেতে আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন।
এই ব্লগজিনে প্রকাশিত সমস্ত লেখার বক্তব্য লেখকের নিজস্ব।
satavisha Mallik
3 ঘন্টা আগেঅনবদ্য। এমন করে ভাবনাকে শব্দ-রূপ দিতে পারা, কবিকে কুর্নিশ
অপর্ণা ঘোষ
3 ঘন্টা আগেদারুণ! ❣️