বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
                    সলতেখাগীর আমগাছ এক বিস্মরণ। পাখির ডিমের সঙ্গে পারা মেশালে উড়তে পারার কথা, পুরনো পুথি পড়ে কোনও কিশোর এখন আর ভাবে না, নিশ্চিত। পথের পাঁচালী উপন্যাস তো সিনেমা হয়ে গিয়েছে, জগৎসভায় আসন পেয়েছে,  পাঁচালি বানানও এখন হ্রস্ব ই-কার দিয়ে লিখতে হয়। কিন্তু বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলা সাহিত্যের ক্লাসিক-ই। আরণ্যকের অরণ্যে যতই বিকাশ কিংবা উন্নয়ন তার দীর্ঘ ছায়া নিয়ে অগ্রসর হোক না কেন, যুগলপ্রসাদ এক চিরন্তনতা। এখনও রানাঘাটে আদর্শ হিন্দু হোটেলটি রয়েছে, হাজারী ঠাকুর যে বিশ্বেই থাকুন না কেন! ক্যানভাসার কৃষ্ণলাল নিশ্চিত উনুনের ধোঁয়ার মধ্যে ‘গোলাপী, ও গোলাপী’ ডাকতে ডাকতে ঢুকে পড়ে বাড়ির মধ্যে, কোনও অল্টারনেট ইউনিভার্সে, যেখানে দ্রবময়ী কাশীবাস ছেড়ে ফিরতে চান তাঁর নিজস্ব—চেনা কুটরিতে, ভণ্ডুলমামা ভাবতে থাকেন, এবার বাড়ি বানানোর কাজটা শেষ করতেই হবে।
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকে মুক্তি নেই, কারণ তাঁর রচনায় কোনও বন্ধনও লক্ষিত নয়।