এই গল্পটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল কালান্তর পত্রিকায়। প্রথম সংকলিত হয়েছিল সত্তরের গল্প (কালধ্বনি- ১৯৯১) সংকলনে। পরবর্তীকালে সংকলিত হয়েছে কালধ্বনি প্রকাশিত জ্যোৎস্নাময় ঘোষের রচনা সমগ্র (প্রথম খণ্ড) [জানুয়ারি, ২০১০]-এ।
শহরের এ অংশটা খুব নির্জন, নতুন টাউনশিপের ব্লুপ্রিন্ট ধরে ধরে সবে মাত্র বাড়িঘর তৈরি হচ্ছে, টাউনশিপ গড়ে উঠছে পুরনো শহরের কোল ঘেঁষে, চতুর্দিককার ধূ ধূ শূন্যতার ভেতর ইটের ভাটার কালো কালো চিমনিগুলোকে কেন জানি অসঙ্গত বলে মনে হয় পার্থর। পুরনো এবং নতুন শহরের মাঝখানে বাস সার্ভিস চালু হয়েছে, সকাল থেকে সন্ধে পর্যন্ত চার ট্রিপের নতুন রুটটায় ‘রাজবন্দী কো-অপারেটিভ বাস সার্ভিসের’ নিচু ছাতের পুরনো মডেলের বাসখানা হাঁপাতে হাঁপাতে ছোটাছুটি করে, ‘দি বিক্রম এনজিনিয়ারিং ফার্মের’ কর্মিদের জন্যই এই নতুন রুটটি খোলার অনুমতি দিয়েছেন টাউনশিপ অথরিটি, জনবসতি গড়ে না উঠলেও নতুন শহরে সাড়ে সাত একর জমির ওপর এই এনজিনিয়ারিং ফার্মটি গড়ে উঠেছে বছর আড়াই হল, সব মিলিয়ে প্রায় বারশ কর্মির এই কারখানায় মেকানিক্যাল এন্জিনিয়ারের পোস্টে বছর দেড়েক হল প্রবাল যোগ দিয়েছে, বেশ পরিচ্ছন্ন সাজানো-গোছানো কোয়ার্টার পেয়েছে ও, দুপুরে ভেজান খসখসের গায়ে অরণ্যের গন্ধ পেয়েছিল পার্থ।
সন্ধের আগেই তার ফিরে যাবার কথা, কিন্তু প্রবাল মিতুর সাথে এমন জমে গেল যে বাইরে দিনের রং-ফেরতার সংবাদটা তার কাছে পৌঁছল না, কখন দুপুর গড়িয়ে বিকেল হল বিকেল গড়িয়ে গোধূলি তা বুঝতেই পারেনি। ওদের বৌভাতে সে আসতে পারেনি, গলায় অভিমান নিয়ে মিতু বলেছে, সম্পর্ক যে রাখতে চায় না—
শেষ দিকটায় ওর চোখ ছলছল করে উঠেছে। অপরাধ স্বীকার করে নিয়েছে পাৰ্থ, তবু ওকে বোঝাতে চেয়েছে, তোমাদের এই অঞ্চলটা তখন আমাদের পক্ষে নিরাপদ ছিল না মিতু...
সে ঘাড় ঘুরিয়ে দূরে তাকাল, খানিক বাদেই দৃষ্টি গুটিয়ে নিল, শেষ বাস কোন সময় মেনে চলে না পার্থ তা জানত, কোম্পানির গাড়ি করে প্রবাল তাকে পৌঁছে দিতে চেয়েছিল, এই মুহূর্তে তার মনে হয় রাজি হলেই হতো। আসলে চারদিকের নির্জনতাটা তার ভাল লাগছিল না, কাছের নির্জনতা তাও বা সহনীয়, কিন্তু দূরের ব্যাপক নৈঃশব্দ্য বুকের ভেতর কেমন যেন দম বন্ধ করা একটা অনুভূতি ছড়িয়ে দেয়, ইতস্তত দৃষ্টি ফেলে অন্যমনস্ক হতে চায় পার্থ।
আশেপাশে কিছু কিছু ঘরবাড়ি তৈরি হচ্ছে, কোথাও ভিতের কাজ চলছে, কোথাও বা দেয়াল উঠেছে খাড়াই, কোথাও লিন্টেলের কাজ হচ্ছে, সব বাড়ি একই প্যাটার্নের, প্রতি ঘরের দৈর্ঘ প্রস্থ উচ্চতা বেধের মাপ একই রকম। যারা থাকবে সেই মানুষগুলো—তারাও কি একই ছাঁচের নাকি, চকিতেই কথাটা মনে এল পার্থর। হয়ত তাই, কিংবা, না হলেও, একই ছাঁদের আদলে সবাইকে গড়ে তোলার এক পরিকল্পিত ব্যবস্থা হয়ত করে রেখেছেন পাকা মাথার কর্তা ব্যক্তিরা। কংক্রিটের পথগুলোও একই মাপের, নির্দিষ্ট দূরত্বে পথের ধারে ধারে চারাগাছ বসান হয়েছে, গাছগুলোও হয়ত একই জাতের, হয়ত বা আগামী দিনে একই আয়তনের ছায়া দেবে তারা। পায়ের তলাকার দীর্ঘ ওসারের পথটাকে দামী কার্পেটের মতো মনোরম মনে হয়। ঢাকনা দেয়া লাইটগুলো খানিকবাদেই কলাবৌয়ের মতো নোয়ানো মাথার লাইটপোস্ট থেকে নিয়ন্ত্রিত আলো ছড়িয়ে জ্বলে উঠবে—
কথাটা ভাবতে না ভাবতেই চোখের সামনে অর্ধবৃত্তাকারের একটি আলোকমালা দেখতে পেল পার্থ, মনে হল লাইট পোস্টগুলো অসংখ্য আলোকিত হাত প্রসারিত করে নিষেধের মুদ্রা এঁকে সার বেঁধে তার সামনে দাঁড়িয়ে পড়ল হঠাৎ, দৃষ্টির পরিধির ভেতর কোথাও যেন একটা অদৃশ্য বিজ্ঞপ্তি মেলে ধরল তারা, কশ্যন, মেন অ্যাট ওয়ার্ক—
দূরের আকাশে যখন অন্ধকার ধীরে ধীরে জমাট বাঁধছে, কাছের দৃশ্যাবলী যখন ক্রমশই ফ্যাকাশে হয়ে আসছে, পার্থ যখন তার নিঃসঙ্গ একাকিত্বের ভারে অবসন্ন এবং পীড়িত, ঠিক তখনই প্রবল এক অভিঘাতে তার হৃদপিণ্ড ধক্-ধক করে বেজে উঠল, পিস্টনের সেই ওঠা-পড়ার শব্দের তালে তালেই যেন সমস্ত শরীরটা ঠক্ঠক করে কেঁপে ওঠে তার, তবু নীরক্ত মুখখানা দ্রুত ডান পাশে ঘুরে যায়।
পরিপাটি পোশাকের স্বাস্থ্যবান মাঝবয়েসী একটি লোককে প্রায় তার গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখল সে, রুমাল সুদ্ধ হাতখানা প্যান্টের পকেটে ঢোকাতে ঢোকাতে সে আবার বলল, কি বিশ্রী গরম।
খানিকটা পিছিয়ে আসে পার্থ, বুকের ভেতরকার বাজনাটা স্বাভাবিক হয়ে এলে লোকটির দিকে পরখ করার চোখে সে তাকাল।
তার দিকে চেয়ে মৃদু মৃদু হাসল লোকটি, মনে হল সে যেন এতক্ষণ তার দিকেই তাকিয়েছিল। চোখ-মুখের চেহারা হঠাৎ পালটে যায় তার, গলা নামিয়ে কোন গোপন কথা বলার মতো করে ফিশফিশ করে ওঠে, ওদিকে দুটো মার্ডার হয়ে গেছে, জানেন না?
পার্থ কোন কথা বলে না, তার মনে হল প্রাসঙ্গিক কথাগুলো এমনিতেই সে বলবে, সে নিজে কোন ঔৎসুক্য না দেখালেও, যদিও তার জানার ইচ্ছে হচ্ছিল ‘ওদিক’ বলতে সঠিক করে কোন্ জায়গাটা সে বোঝাতে চাইছে।
কেতাব-ই'র ব্লগজিন বিভাগে লেখা পাঠাতে চান? মেল করুন manuscript.ketabe@gmail.com-এ। মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখুন ‘কেতাব-ই ব্লগজিনের জন্য লেখা’।
লোকটি প্রশস্ত করে হাসল, ফলে তার ঠোঁটদুটো দুপাশে অনেকখানি ছড়িয়ে পড়ল, নাকের তলা থেকে চিবুক অবধি গভীর দুটো রেখা গালের দুপাশে ফুটে উঠল; রেখাদুটো মিলিয়ে যেতেই লোকটির কণ্ঠ হালকা রসিকতার সুরে বেজে ওঠে, আসল লোক একটিকেও ধরতে পারে নি, অ্যা, ঠন্ঠন— আরে বাবা, তাদের ধরা কি এতই সহজ, অ্যা, হ্যা-হ্যা—
এই সময়ই বাঁকের মাথায় এঞ্জিনের শব্দ ওঠে, পার্থ রাস্তার ওপর নেমে যায়, পেছন পেছন লোকটিও, হেড লাইটের আলোয় কংক্রিটের পথ চক্চক করে জ্বলে ওঠে। লাইটজোড়া দ্রুত এগিয়ে আসতে থাকে, ফোকাসের কেন্দ্রে হাত বাড়িয়ে দেয় পার্থ, অলৌকিক কোন নিশানের মতো হাতখানা দুলতে থাকে।
প্রচণ্ড শব্দ তুলে গাড়িটা থামতেই লাফ দিয়ে একপাশে সরে যায় সে, কিন্তু প্রায় সাথেসাথেই লোকটি পেছন থেকে তাকে জাপটে ধরে, চিৎকার করে বলে, পালাবি কোথায় শালা।
পুলিসভ্যানের দরজা খোলার শব্দ পায় পার্থ, ভারি পায়ে লাফ দিয়ে দিয়ে ওরা নামতে থাকে, আবার চিৎকার করে ওঠে লোকটি, সোজা ভুগিয়েছে বানচোৎ— বলে পার্থকে ছেড়ে দিয়েই ডান হাতে তার নাকের ওপর সজোরে ঘুষি চালায়, নাক চেপে বসে পড়ে পার্থ, সেই মুহূর্তে তার পিঠের চামড়া কেটে অস্তিত্বের তলদেশ পর্যন্ত কি একটা যেন চলে যায়, কাৎ হয়ে পড়ে যেতে যেতে অনেকদূর থেকে কাউকে বলতে শোনে, আচ্ছাসে বানাও শালেকো—
চাপ চাপ অন্ধকার ঠেলে ঠেলে পার্থর চেতনা বারবার পার্থর কাছে ফিরে ফিরে এল, সাঁতার না জানা ডুবন্ত মানুষের মতো অন্ধকারের সেই সমুদ্রে বার বার তা ডুবে ডুবে যেতে লাগল, সেই আসা যাওয়ার ফাঁকে ফাঁকে চেতন এবং নিশ্চেতনের সন্ধিস্থলের অস্পষ্ট মুহূর্তগুলোতে তার মনে হল সে যেন চটাওঠা মেঝের ওপর পড়ে আছে, তার চার পাশ দিয়ে অন্ধকারের স্রোত নিঃশব্দে এঁকে বেঁকে চলে যাচ্ছে, লম্বা শিকের আলোকিত একটা দরজাও যেন সে দেখতে পায়, তার খুব কাছাকাছি গভীর কালো রেখার কিছু লোকজনকে বুকে চিবুক ঠেকিয়ে নিশ্চুপে যেন বসে থাকতে দেখে— ঘষা কাচের অন্তরালের ছবিগুলো ভাল করে ফুটে উঠতে না উঠতে মিলিয়ে মিলিয়ে যায়। অস্ফুট চেতনায় পার্থ পাশ ফিরতে যায়। বুকের ভেতর ভীষণ একটা চাপ অনুভব করে, তীব্র বেদনায় অস্তিত্বের গভীর থেকে একটা আর্তনাদ বেরিয়ে আসে তার, মাগো ! ঠিক তখনই তার মুখের ওপর ঝুকে পড়ে কে যেন বলে, সুনু, এই, খুব কষ্ট হচ্ছেরে—
পার্থ ঠিক বুঝতে পারে না সুনু বলে এখানে তাকে কে ডাকতে পারে, তার পরিবারের বাইরে একজনই তাকে সুনু বলে ডাকত, কিন্তু দীর্ঘদিন হল ডাকাডাকির সে সম্পর্কটা উঠে গেছে তাদের, দেখা হলেই দু জোড়া চোখ ঘৃণা-বিদ্বেষ-আক্রোশের আগুনে ধক্ধক করে জ্বলে উঠত ইদানিং— তবে কি সে তার নিজের বাড়িতেই শুয়ে, এই সম্ভাবনার কথাটা মনে হতেই সে ডাকে, মনে হয় তার বুকের ভেতর থেকে যেন অন্য কেউ বলে উঠল, মা।
মুখটা এবার আরো কাছে নেমে এল, তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে মুখের মানুষটা গভীর সমবেদনার সুরে বলে, কষ্ট হচ্ছে? আমাকে চিনতে পাচ্ছিসনে সুনু— আমি ধীরাজ—
সঙ্গে সঙ্গে পার্থ দেখতে পেল তার কানের পাশ দিয়ে পাইপগান থেকে থ্রি-নট-থ্রির দুটো গুলি প্রচণ্ড শব্দে বাতাস কেটে কেটে বেরিয়ে গেল, চকিতে মাটিতে শুয়ে পড়ল সে, রুংটা চিৎকার করে উঠল, পার্থ রিভলবার বের করছে, চলে আয়, ধীরাজ—
ধীরাজের গলা আবার শুনতে পায় পার্থ, এ সিপাইজী, এই, থোরাসা পানি দো না ভাই।
মোটা গলায় দেহাতি টানে বোধহয় সিপাইজীই বলে, অর্ডার নেহি—
প্রচণ্ড শব্দে চিৎকার করে ওঠে ধীরাজ, দেয়ালে দেয়ালে ধাক্কা খেয়ে খেয়ে শব্দগুলো আবার তাদের কাছেই ফিরে ফিরে আসে, বোলাও শালে ও-সি কো— অর্ডার নেহি! মগের মুলুক পেয়ে গেছে শালারা। দুদিন আগেও স্যালুট ঠুকেছিস হারামির বাচ্চারা। ডাক তোর ও-সিকে—
অনেকক্ষণ বাদে ঝন্ঝন করে দরজা খুলে যাওয়ার শব্দ শুনল পার্থ, ভারি কণ্ঠে কে যেন বলল, কোন বানচোৎ বলেছে— তারপর ভয়ঙ্কর কিছু শব্দ বাতাসে ঘুরে ঘুরে বাজতে থাকল...
পেটা ঘড়ির ধাতব শব্দে পার্থ জেগে উঠল, ঘুলঘুলি দিয়ে বর্শার মতো উজ্জ্বল আলোকের কিছু রেখা নেমে এসেছে, রেখাগুলো ধরে ধরে পার্থর দৃষ্টি তার বাঁ পাশের দেয়ালের তলার দিক্কার আলো-আঁধারির একটা নক্সার ওপর স্থির হয়ে রইল কতক্ষণ, ক্রমশ ঘরের মানুষজন তার নজরে ধরা পড়ে, দেয়ালে পিঠ রেখে মেঝেতে পা ছড়িয়ে চোখ বুজে বসে রয়েছে ধীরাজ, তার দিকে পেছন ফিরে শরীরে দ-এর মুদ্রা এঁকে খানিকটা তফাতে রুংটা ঘুমিয়ে। রুংটার পায়ের কাছাকাছি দু-হাঁটুর ভাঁজে মুখ ডুবিয়ে চওড়া হাড়ের একটি লোককে বসে থাকতে দেখল। তার দৃষ্টি সবাইকে ছুঁয়ে ছুঁয়ে নিঃশব্দে হাঁটা চলা করতে থাকে। ধীরাজের কণ্ঠ একসময় শুনতে পেল সে, দীর্ঘকাল রোগভোগ করলে মানুষের কণ্ঠস্বর যেমন হালকা মিইয়ে যাওয়া এবং কিছুটা আনুনাসিক মনে হয়, ধীরাজের গলা অবিকল সেই রকম মনে হল। পার্থ তার দিকে মুখ তুলে তাকাতেই সে আবার বলল, এখন কেমন লাগছে রে?
পার্থ তার হাতখানা বুকের ওপর থেকে নামিয়ে নিতে নিতে বলে, ভাল। তারপর যেন হঠাৎই কথাটা তার মনে এল এমনিভাবে বলল, আমরা সবাই একই হাজতে— একই ছাতের তলায় কি করে এলাম রে, ধীরু?
রুংটার তীব্র ঝাঁঝালো গলা শোনা গেল প্রায় সাথে সাথে, ইচ্ছে করে আসি নি, শুয়োরের বাচ্চারা একই খোঁয়াড়ে পুরে দিয়েছে। শ্রেণীশত্রুর সাথে না হলে স্বর্গেও যাই না আমরা—
এরপর হাজত ঘরের ভেতর অনেকক্ষণ কোন শব্দ উঠল না, বাইরে অফিস ঘরে লোকজনের চলাচলের শব্দ শুনতে পেল পার্থ, ভারি বুটের আওয়াজ, ‘দরওয়াজার’ ডান পায়ের তলার দিকটা দুটো শিকের মাঝখান দিয়ে দেখতে পেল সে, ধনুকের মতো ঈষৎ বাঁকানো স্থিরচিত্রের সেই অংশটার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে ধীরাজকে বলতে শুনলে সে এক সময়, সব কিছু কেমন যেন হাতের বাইরে চলে যাচ্ছেরে। আজকাল ভয় হয়। কে শত্রু, কে মিত্র— ঠিক বুঝে উঠতে পারিনে। মনে হয়, হাতিয়ার নিয়ে চার পাশ দিয়ে অবিরত কারা যেন হাঁটাচলা করে। এক এক সময় মনে হয় বুঝি পাগল হয়ে যাব।
রুংটা ভয়ানক ক্রুরতায় টেনে টেনে হেসে উঠল এই সময়ই, তার তীক্ষ্ণ বিদ্রূপের কণ্ঠ এরপরই গম্গম করে বাজতে থাকল, আজ আর এ-সব ভেবে কোনো ফায়দা নেই কমরেড। অসংখ্য লাশের স্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে আমরা। দুপায়ে লাশ মাড়িয়ে মাড়িয়ে কোথায় ফিরে যাবে!
ধীরাজের চিবুক তার বুকের উপর ঝুলে পড়তে দেখল পার্থ, তাকে খুব ক্লান্ত অবসন্ন মনে হয়, সমস্ত মুখখানা মেঘের মতো অন্ধকারে ঢেকে গেছে, হাত দুটো দুপাশে এলিয়ে—
পার্থ জানে, পাইপ গানের গুলি দুটো আকস্মিকভাবেই তার পাশ কেটে চলে গেছে, সে এ-ও জানে ওদের স্বায়ত্ত শাসনের পরিধির ভেতর ওরা তাকে পায়নি বলেই সে এখনো জীবিত, তবু এই ছায়াছায়া ঘরে নানা মুদ্রায় পড়ে থাকা মানুষগুলোর জন্যে বুকের গভীরে কোথায় যেন একটা ব্যথা অনুভব করে সে, নিচু গলায় ফিসফিস করে ডাকে, ধীরু—
কেতাব-ই’র মুদ্রিত বই, ই-বই এবং ব্লগজিন বিভাগের লেখালিখির নিয়মিত খোঁজখবর পেতে আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন।
এই ব্লগজিনে প্রকাশিত সমস্ত লেখার বক্তব্য লেখকের নিজস্ব।
মন্তব্য করুন