বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৮৩৮-১৮৯৪) বিলায়েতের স্কটের মডেলে উপন্যাস লিখেছিলেন কি না, বা তিনিই বাংলা ভাষার প্রথম ঔপন্যাসিক কিনা সে নিয়ে প্রভূত বিতর্ক হতে পারে, হয়ও। তবে তিনি যে বাংলা ভাষায় আখ্যান রচনার একটি দিঙনির্ণয় করে দিয়ে গিয়েছেন, সে নিয়ে কোনও সন্দেহের অবকাশ নেই। আনন্দমঠকে তো আজও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কদর্থে ব্যবহৃত হতে দেখা যায়। তেমনটা হওয়া সম্ভব—কারণ একটি টেক্সটকে বিভিন্ন সময়েভাবে ভিন্নতরভাবে পাঠ করতে পারলেই সে আখ্যান সফল ও কালজয়ী বলে স্বীকৃত। বঙ্কিমচন্দ্র সে অর্থেও কালজয়ী। আবার, কপালকুণ্ডলা উপন্যাসকে যদি দেখা যায়, গড়ন-গঠনের দিক থেকে তা এতটাই ভারতীয় এবং অনন্যও, যে সে নিয়ে এখনও বাধ্যতই চর্চা করেন সাহিত্যোৎসাহীরা। কমলাকান্তের দপ্তর, কৃষ্ণচরিত্রের লেখক, পেশায় ইংরেজ সরকারের উচ্চপদস্থ রাজকর্মচারী বঙ্কিমচন্দ্র তাঁর সে অবস্থান থেকেও হাসিম শেখ ও রামা কৈবর্তকে দেখেছেন, তাঁদের কষ্টে আকুল হয়েছেন—এ বড় সহজ কথা নয়। আর অন্যদিকে, বঙ্গদর্শনের মত পত্রিকার ভাবনা, বঙ্কিমচন্দ্রকে সম্পাদক হিসেবেও ইতিহাসে রেখে দেবেই।