preloader
বাংলা বইয়ের e-ভুবন
Menu Categories Search Cart 0
Menu
Cart

Total 0 Items

☹ Your cart is empty

Sub Total:

$0

₹0

বিভাগ
চৈতন্যে বধিবে কে!: পর্ব ১৩
ধারাবাহিক

চৈতন্যে বধিবে কে!: পর্ব ১৩

দারোগা সুজয় মাহাতোর ডাকে সাড়া দিয়ে বিশ্বামিত্রের সহকারী, স্বপ্ননীল পাড়ি দেবে চন্দ্রপুরা। সে কি পারবে তদন্তে সাহায্য করতে? বিশ্বামিত্রের নীল ডাইরির সেই রহস্য জনক লাইনগুলোর মর্ম উদ্ধার করতে?
কী ছিল লাইনগুলো,
আনন্দ অন্তর্যামী তুমি অনাথবন্ধু হে
গিরিধারী গোকুলনাথ তুমি গোপালক হে...
সনাতন স্বয়ম্ভু তুমি সচ্চিদানন্দ হে
তপোময় ত্রিলোকনাথ তুমি ত্রিলোকপালক হে...
অচ্যুত-গদাধর-চিকনকালা-ত্রৈলোক্যনাথ–কবে শেষ কথা–তাই এ আমার শেষের কবিতা...

চল্লিশ

চন্দ্রপুরা থানা। ঝাড়খণ্ড।

নীল ডাইরির ভিতর সত্যি কি বিশ্বামিত্র রেখে গেছেন কোনও সূত্র?

বিশ্বামিত্র বাবু মারা গেছেন প্রায় দেড় দিন হয়ে গেছে। জায়গাটা কলকাতা না হলেও, লোকাল মিডিয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন নিউজ চ্যানেল, ইতিমধ্যেই খবরটা নিয়ে বেশ ভালো রকম নাড়াচাড়া করতে আরম্ভ করেছে। সেটা তীব্র আকার ধারণ না করলেও, রক্তচাপ বাড়াচ্ছে বৈকি মাহাতোর।

এখনও অব্দি তিনি রহস্যের কিনারা করা তো দূরের কথা, মোটিভটাই ধরতে পারেননি। আজ সকালেও এস পি ফোন করে কেসের অগ্রগতি জানতে চেয়েছেন। আসলে এস পি-রও কিছু করার নেই। বাপেরও বাপ আছে। যেমন এক্ষেত্রে এস পি-র বাপ কে? না, শিক্ষামন্ত্রী। কে খুন হয়েছেন? না, সেন্ট্রাল ফরেনসিক ডিপার্টমেন্টের প্রাক্তন ডিরেক্টর। পুলিশ ডিপার্টমেন্টের উপর একটা নর্মাল প্রেশার তো থাকবেই।

সেটা ঠিক আছে, কিন্তু প্রশ্ন অন্য জায়গায়, এস পি-র কিছু কথা বেশ অদ্ভুত লাগছে সুজয়ের। খুনিকে শনাক্ত করার থেকেও, ওঁর যেন বেশি আগ্রহ বিশ্বামিত্রর গবেষণা নিয়ে। সেটা কেন! ইতিমধ্যেই বার তিনেক মি. সেনের কর্মকাণ্ডের ডিটেলিং চেয়েছেন তিনি।

অনেক কষ্টে নিজের মনটাকে শান্ত করার চেষ্টা করেন সুজয়। মাথা অহেতুক গরম করলে কাজের থেকে অকাজ বেশি হবে। বিশ্বামিত্রর ডাইরিটা নিয়ে এসে সেই অদ্ভুত লাইনগুলোতে চোখ বোলাতে শুরু করেন আবার–

আনন্দ অন্তর্যামী তুমি অনাথবন্ধু হে
গিরিধারী গোকুলনাথ তুমি গোপালক হে...
সনাতন স্বয়ম্ভু তুমি সচ্চিদানন্দ হে
তপোময় ত্রিলোকনাথ তুমি ত্রিলোকপালক হে...
অচ্যুত-গদাধর-চিকনকালা-ত্রৈলোক্যনাথ–কবে শেষ কথা–তাই এ আমার শেষের কবিতা...

উপরের লাইনগুলো দেখলে এটা বেশ বোঝা যায় যে, শব্দগুলো ভগবানকে সম্বোধন করে বলা হচ্ছে। ব্যাস ওইটুকুই। আর কিছু নয়। যতবারই দেখেন ওই লাইনগুলো, এর বেশি আর এগোতে পারেন না।

খানিকটা জায়গা ফাঁকা রেখে তলার দু-খানা লাইন লেখা না হলে, এটা ভেবে নেওয়া যেতেই পারত যে, ভগবানের বিভিন্ন নাম স্মরণ করে উনি হাবিজাবি যা খুশি একটা লিখেছেন। কিন্তু তলার ওই দুখানা লাইন দেখে মনে হচ্ছে যে তিনি নিশ্চয়ই কোনও সংকেত লিখে রেখে গেছেন। অচ্যুত, গদাধর, চিকনকালা, ত্রৈলোক্যনাথ এইগুলি ঈশ্বরকে সম্বোধন ঠিকই, কিন্তু ঐ যে ‘কবে শেষ কথা’! ওই তিনটে শব্দ কেমন যেন একটু জোর করে বসানো হয়েছে।

মহাদেবকে ডেকে পাঠান সুজয়। পকেট থেকে গোল্ডফ্লেক কিংকের প্যাকেটটা বার করে টেবিলে রাখেন। একটা ধরাতে গিয়েও ধরান না। ঠোঁট থেকে আঙুলের ফাঁকে চলে আসে সিগারেট। ডাইরির লেখাগুলোই দেখতে থাকেন ঘুরিয়ে ফিরিয়ে,

“আসব স্যার...?”

“আসুন।”

মহাদেব এসে উল্টো দিকের চেয়ারে বসে পড়েন। ডাইরিটা ওর হাতে ধরিয়ে দিয়ে সুজয় বলেন...,

“কিছু বুঝতে পারছেন?”

“স্যার আপনিই যখন কিছু বুঝতে পারছেন না...।”

মহাদেব জানেন, তড়বড় করে যা খুশি বলে দেওয়া ঠিক নয়। স্যারের মেজাজ সপ্তমে চড়ে থাকলে তো আরও নয়। কাজেই সাবধানী সে। তাই একটা হাল্কা বাক্য বাতাসে ভাসিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা হয় না,

“আমি বুঝতে পারছি না বলে আপনিও বুঝতে পারবেন না !”

“না মানে ঠিক তা নয়...”

এবার মহাদেব ভালো করে দেখেন ডাইরিটা। দারোগার আঙুলের ফাঁকে থাকা সিগারেটটা ঠোঁটে আসে আবার। অগ্নিসংযোগ করতে না করতেই একমুখ ধোঁয়ায় ঘর ভরে যায়। দারোগার ধূম্রজালের দিকে খানিক চেয়ে থাকবার পর এস আই মহাদেব বলেন,

“স্যার আমার একটা কথা কিন্তু মনে হচ্ছে...।”

“কী মনে হচ্ছে?”

“এইগুলো সবই ভগবানকে উদ্দেশ্য করে লেখা। ঈশ্বরের বিভিন্ন নাম লেখা হয়েছে।”

“এটা তো রামা শ্যামা যে কেউ বুঝতে পারবে। সেটা ছাড়া আর কিছু কি মনে হচ্ছে আপনার?”

“হ্যাঁ স্যার সেটাও হচ্ছে।”

এইবার দু-কনুই এর উপর ভর রেখে একটু এগিয়ে বসেন সুজয়,

“হ্যাঁ বলুন। সেটা শোনার জন্যই আপনাকে ডেকে পাঠিয়েছি।”

“স্যার ঐ যে ‘কবে শেষ কথা’।”

“হ্যাঁ সে তো দেখতেই পাচ্ছি।”

“আমার মনে হয় ওর মধ্যেই কিছু আছে। মানে ‘অচ্যুত-গদাধর-চিকনকালা-ত্রৈলোক্যনাথ’ এই চারটে শব্দের মধ্যেই কিছু আছে।

চিন্তামগ্ন সুজয়। ধোঁয়ার কুন্ডুলি বাতাসে। অনাদি গোসাঁই কাল বলেছিলেন, বিশ্বামিত্র নাকি ইতিহাসের সাথে বিজ্ঞানকে মেশাচ্ছিলেন। কিন্তু এইখানে ইতিহাসটা কোথায়? আর বিজ্ঞানই বা কোথায়?

এই সময়,ল্যান্ডফোনে একটা ফোন আসে।

“স্যার হাসপাতাল থেকে বলছি। বিশ্বামিত্র বাবুর পোস্ট মর্টেম রিপোর্টটা পাওয়া গেছে...”

“হ্যাঁ সেখানে কী দেখা যাচ্ছে?”

“কোনও ওয়ান শর্টার কিম্বা সাধারণ রিভলভার দিয়ে গুলি করা হয়নি।”

“তবে!”

“গ্লক সিরিজের রিভলভার ব্যবহার করা হয়েছে। গ্লক নাইনটিন এক্স।”

“আপনারা কী বিষয়টা নিয়ে ক্রাইম ব্রাঞ্চের সাথে কথা বলেছিলেন?”

“হ্যাঁ। শুধু কথা নয়, আমরা কার্তুজের ছবিও ওদের পাঠিয়েছিলাম। সেখান থেকেই বলা হয়েছে গ্লকের কথা।”

“হুমম...”

ধোঁয়ার মতই চিন্তাগুলো গুলিয়ে যাচ্ছে সব। কী সব শুনছে! চন্দ্রপুরা কিম্বা ওয়াশিপুরে বেশির ভাগ খুনোখুনি হয় দেশি বন্দুক দিয়ে, সেখানে কিনা গ্লক নাইনটিন এক্স! না, এটা বেশ বোঝা যাচ্ছে আততায়ী যে সে লোক নয়। যার হাতে আই এম আই ডেজার্ট অথবা গ্লক থাকে, সে সাধারণ হতেই পারে না।

“ঠিক আছে... রিপোর্টটা আমায় মেইল করুন। আমি দেখে নেব। রাখছি...। আর হ্যাঁ... বডি আপাতত মর্গেই থাকবে। ওঁর নিজের লোক বলতে সেরকম কাউকে আমরা পাইনি এখনও। তবে, কলকাতা থেকে একজন আসছেন। কাউকে না পাওয়া গেলে উনিই মুখাগ্নি করবেন... ওয়েল... এখন রাখছি...।”

অ্যাসট্রেতে সিগারেটটা গুঁজে দারোগা তাকান মহাদেব মুর্মুর দিকে। মহাদেব একটা অদ্ভুত কথা বলেন। যা শুনলে প্রথমে বোঝাই যাবে না যে এর সাথে বিশ্বামিত্র খুনের কোনও সম্পর্ক আছে। পরে মনে হবে, হয়ত ডাইরিতে লেখা শব্দগুলোই ওর ভাবনাকে এই পথে পরিচালিত করেছে।

“স্যার আপনাকে বলাই হয়নি। হনুমান জয়ন্তীর দিন ডি-টাইপ ব্রিজের কাছে যে দাঙ্গা হয়েছে সেখানে আবদুল ছিল...” এই নামটা মাথা থেকে উবে গিয়েছিল ওসি সাহেবের।

“কে আবদুল?”

“স্যার রাধামাধব মন্দিরে মালীর কাজ করে যে ছেলেটা। যার আর পাত্তা পাওয়া যাচ্ছে না খুনটা হবার পর থেকে। যার সাথে মন্দিরের সিকুরিটি বলবন্ত সিং ফোনে যোগাযোগ করতে চেয়েছিল, কিন্তু পারেনি।”

এক লহমায় মনে পড়ে যায়। এই ছেলেটার সাথে বিশ্বামিত্র বাবুর বেশ ভালো সম্পর্ক ছিল। বলবন্ত বলেছিল যে তাকে আর আবদুলকে উনি বাড়িতে নেমতন্ন করেও একদিন খাইয়েছিলেন।

ওইদিকে মহাদেব বলে যায়, “স্যার আমার মনে হচ্ছে এই খুনের সাথে কোনও একটা ধর্মীয় যোগাযোগ আছেই আছে। মন্দিরে খুন, ডাইরিতে এই সব লেখা, তারপর একজন মুসলিমকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এছাড়াও...”

“এছাড়াও?”

“এছাড়াও গতকাল অনাদি গোসাঁই কী সব বললেন না ? ‘ঠুঁটো জগন্নাথ’ না কী সব...।”

মহাদেবের সমীকরণটা অনেকটা হয়ত নিম্নরূপ,

কথায় কথায় যিনি ভগবানের উপমা দেন, শ্রীকৃষ্ণের ‘অষ্টোত্তোর’ হোয়ারঅ্যাবাউটস ফটাফট ডাইরিতে লিখে ফেলেন, তা কোনও সংকেত লেখার জন্য হলেও, তিনি ঈশ্বরঅন্ত প্রাণ না হয়ে যান না। আর, জাতিগত দাঙ্গা চন্দ্রপুরার যেভাবে মাথা চাড়া দিচ্ছে দিন দিন, তাতে, কে জড়িয়ে আছে কে নেই, বোঝা শক্ত। ইদানীং তো মহাদেবের মুসলমান মাত্রেই সন্দেহ হচ্ছে। আর সেই মুসল্লি, যাকে ঘটনাটা ঘটে যাবার পর থেকেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, তাকে তো ‘ডাউট’ না করে উপায়ই নেই।

সুজয় বলেন, “আপনি আবদুলের বাড়ির ঠিকানা জোগাড় করতে পেরেছেন?”

“হ্যাঁ স্যার। ফুলওড়ারিতোড় স্টেশন রোড দিয়ে গেলে বেশি সময় লাগবে না। সনাতন গাজির বটতলা। পিঁপড়াডিহির দিক দিয়েও যাওয়া যায় স্যার।”

“চলুন দেখি...”

কেতাব-ই’র ব্লগজিন বিভাগে লেখা পাঠাতে চান? মেল করুন blogzine.ketabe@gmail.com-এ। মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখুন ‘কেতাব-ই ব্লগজিনের জন্য লেখা’

একচল্লিশ

ফুলওয়ারিতোড়। ঝাড়খণ্ড। দুই চৈতন্য কথা। আদি ও অনাদি।

নিজের সম্প্রদায়ের ভাব বোঝার জন্য নতুন করে ‘হোমওয়ার্কের’ দরকার নেই এবং সেখানকার ‘ফিডব্যাক’ পৌঁছে দেবার জন্য যথার্থ কর্মী ইতিমধ্যেই নিযুক্ত। এইবার বুঝে নিতে হবে উল্টোদিকের হাওয়া। সেইজন্যই চন্দ্রপুরার এসে মুসলিম কমিউনিটিতেই ঘাঁটি গাড়ে অরবিন্দরা। এইবার যদিও একটা স্পেশাল অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে এসেছে, তাও কোনও ব্যতিক্রম হয়নি।

মহাষুর এবং প্রতিহারী যখন যেখানে যায় তখন সেখানকার মানুষের মত করে নেয় নিজেদের। পোশাক-আশাকও হয়ে ওঠে সঙ্গতিপূর্ণ। হঠাৎ করে যাতে কারো চোখে না লাগে। এবং আরও একটা বড় কথা, যে খুব প্রয়োজন না থাকলে আস্তানা ছেড়ে নড়ে না।

মসজিদের পিছনেই একটা গেস্ট হাউস। সনাতন গাজির বটতলায় এলে সেখানেই আশ্রয় নেয় অরবিন্দরা।

কাল রাতে ঘরে ঢুকে অনন্ত মহাষুর প্রথমেই যে প্রশ্নটা করেছে অরবিন্দকে, তা হল, “এইবার এখানে কতদিন থাকতে হবে?”

“আশা করছি দু-এক দিনের মধ্যেই কাজ হয়ে যাবে। আর কাজ হয়ে গেলে এইখানে বসে থাকার কোনও দরকার নেই।”

“দল থেকে যদি অন্য নির্দেশ আসে?”

“সেটা এলে তখন দেখা যাবে। না হলে অ্যাসাইনমেন্ট শেষ হয়ে গেলেই আমাদের ফিরে যাবার কথা।”

‘অ্যাসাইনমেন্ট’ শব্দটা শুনে চোখগুলো চকচক করে উঠেছিল মহাষুরের। গ্লক সিরিজের রিভলভারটা বার করে হাত বুলিয়ে নিয়েছিল একটু। এই রিভলভার ওরা সাথে করে আনেনি। ফ্লাইটে এলে কোনও অস্ত্র সাথে আনা সম্ভব নয়। এইখানে আসার পর চেয়ে নিয়েছে সাল্লুর থেকে।

গ্লকের গায়ে হাত বোলাতে বোলাতেই একটা নিষ্ঠুর হাসি ফুটে ওঠে অনন্ত মহাষুরের মুখে।

গুণ্ডিচাবাড়ি ফেলিয়া আরও দুইক্রোশ অতিক্রম করিয়া আসিলেন রায় রামানন্দ। অবশেষে পৌঁছিলেন অভীষ্ট স্থানে। এই স্থানে বালুকাবেলার বক্ষ জুড়িয়া বেশ কিছু গুল্মজাতীয় বৃক্ষ।

লোকচক্ষুর অন্তরালে, পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুসারে তাঁহার জন্য অপেক্ষা করিতেছিলেন সেই দুইজন, যাঁহারা রামানন্দের বেশ খানিক বাদে রওয়ানা দিয়াছিলেন গুণ্ডিচাবাড়ি হইতে। পাণ্ডাশীর্ষ মহাকাল এবং পঞ্চসখার অন্যতম শ্রীযুক্ত জগন্নাথদাস। ইহারাই গুন্ডিচা বাড়ির সুশীতল ছাতিম-ছায়া উপেক্ষা করিয়া বাহির হইয়াছিলেন পথে। তাঁহাদের নাকি আজ অতীব গুরুতর এক বিষয়ে আলাপ করিবার আছে চৈতন্যভক্ত রামানন্দের সহিত।

রামানন্দকে দেখিবামাত্র মহাকাল প্রতিহারী বলিলেন, “আসুন ভদ্র। আপনারই অপেক্ষায় প্রহর গুনিতেছি।”

রামানন্দ কহিলেন, “বোধ করি অধমের অত্যধিক পূর্বে আপনাদিগের আগমন ঘটে নাই। তা সে যাহাই হউক। কি একখানি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় লইয়া আলাপ করিবার আছে বলিয়াছিলেন...?”

জগন্নাথদাস কহিলেন, “উত্তম। অহেতুক সময় ব্যয় না করিয়া প্রকৃত প্রসঙ্গ উত্থাপন করাই শ্রেয়...”

মুহূর্তটাক সময় লইয়া পুনরায় কহিলেন, “আমাদিগের বোধ হইতেছে যে মহাপ্রভু এই নীলাচলে আর সুরক্ষিত নহেন। যে কোনও মুহূর্তে তাঁহার প্রাণ সংশয় হইতে পারে।”

বাক্য শেষ হইলে নিষ্ঠুর হাসি ফুটিয়া উঠিল জগন্নাথদাস এবং মহাকাল প্রতিহারীর মুখমণ্ডলে।

ওই ক্রুর হাস্য, রায় রামানন্দের কতখানি গোচর হইল তাহা নিশ্চিত করিয়া বলিবার উপায় নাই। তবে ওই নিষ্ঠুর কটাক্ষ, সমগ্র বালুতট জুড়িয়া যে আসন্ন অন্ধকার, তাহাকে যে আরও কালিমালিপ্ত করিল, তাহাতে সন্দেহের অবকাশমাত্র নাই।

এই কথা সত্য যে রায় রামানন্দ, মহাকাল এবং জগন্নাথদাসকে বিন্দুমাত্র বিশ্বাসের দৃষ্টিতে দেখেন না, তথাপি তিনি আঁচও করিতে পারিতেছেন না, যে কি ঘটিতে চলিতেছে স্বয়ং মহাপ্রভুর সহিত!


কেতাব-ই’র মুদ্রিত বই, ই-বই এবং ব্লগজিন বিভাগের লেখালিখির নিয়মিত খোঁজখবর পেতে আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন


এই ব্লগজিনে প্রকাশিত সমস্ত লেখার বক্তব্য লেখকের নিজস্ব।

মন্তব্য করুন

লেখক

জন্ম-৮ সেপ্টেম্বর, কলকাতা। ছাত্রাবস্থায় বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় লেখার মাধ্যমে লেখালেখির শুরু। এই উপন্যাস ছাড়াও লেখকের প্রকাশিত অন্য উপন্যাসগুলি হল— ‘আসলে ভালবাসার গল্প’, ‘রোধবতীর নীল রং’, ‘একে রহস্য দুইয়ে লক্ষ্যভেদ’। দেশ, আনন্দমেলা, কৃত্তিবাস, কিশোর জ্ঞান বিজ্ঞান, কথা-সাহিত্য, বহুরূপী এবং আনন্দবাজার পত্রিকায় ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে বেশ কিছু লেখা। এছাড়াও বাংলার শ্রেষ্ঠ নাট্যকারের সম্মান ‘সুন্দরম পুরস্কার’ পান ২০১৪ সালে।

অন্যান্য লেখা

দেখতে পারেন