preloader
বাংলা বইয়ের e-ভুবন
Menu Categories Search Cart 0
Menu
Cart

Total 0 Items

☹ Your cart is empty

Sub Total:

$0

₹0

বিভাগ
চৈতন্যে বধিবে কে!: পর্ব ৪
ধারাবাহিক

চৈতন্যে বধিবে কে!: পর্ব ৪

ভোর রাতে, আলো ফোটার আগেই আবদুল পৌঁছে গিয়েছিল ‘স্পটে’। কিন্তু সেখানে গিয়ে বিশ্বামিত্রর মৃতদেহ দেখে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে তার। এটা কী ভাবে সম্ভব! ও আসার আগেই খেল খতম। কার এত বড় হিম্মত যে ওদের শিকার কেড়ে নেয়!
তাহলে কার হাতে খুন হলেন বিশ্বামিত্র!

দশ

সনাতন গাজির বটতলা। ফুলওয়ারিতোড়।

রাধামাধব মন্দিরের মালি আবদুল সকাল থেকে ফোন বন্ধ করে রেখেছিল। সেইজন্যই ফোনে তাঁকে পাননি বলবন্ত সিং। বড়বাবু সুজয় মাহাতোর কথায় ফোন করা হয়েছিল, থানা থেকে।

কে এই আবদুল? এই রহস্যের সমাধানের জন্য আবদুল এবং তার আশেপাশের বেশ কিছু খুঁটিনাটি জেনে নেওয়া দরকার।

হোটেল পদ্মনাভয় যে রথী-মহারথীরা বসে আছেন তাঁরা ফুলওয়ারিতোড়ের আবদুলকেই দায়িত্ব দিয়েছিলেন বিশ্বামিত্রকে উড়িয়ে দেবার। তবে সরাসরি নয়, সালাউদ্দিনের মাধ্যমে। যদিও শেষমেশ আবদুলের হাতে নয়, বিশ্বামিত্র খুন হয়েছেন অন্য আর একজনের হাতে, কিন্তু তাতেও ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ডে, আবদুলের গুরুত্ব কিছুমাত্র লাঘব হয় না।

ভোর রাতে, আলো ফোটার আগেই আবদুল পৌঁছে গিয়েছিল ‘স্পটে’। কিন্তু সেখানে গিয়ে বিশ্বামিত্রর মৃতদেহ দেখে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে তার। এটা কী ভাবে সম্ভব! ও আসার আগেই খেল খতম। কার এত বড় হিম্মত যে ওদের শিকার কেড়ে নেয়!

আবদুলের ঘরের পাশেই একটা ছোটো ফলসা গাছ। আব্বাজান নিজের হাতে লাগিয়ে ছিলেন। পরিণত পাতাগুলো সবুজ আর কচি পাতাগুলো লালচে। খোপ দিয়ে হাত গলিয়ে দিলে ওই গোল গোল পাতা ছুঁয়ে দেওয়া যায়। হোগলার ঘরে দারিদ্র্য আছে, কিন্তু তারই মধ্যে ষোলো আনা পরিপাটি পরিচ্ছন্নতা। আপাতভাবে সমস্ত শান্তি কল্যাণ। কিন্তু এই ঘরের মধ্যেই ঘাপটি মেরে আছে এক ‘জ্যান্ত কালসাপ’। যা দেখলে পোড় খাওয়া দারোগা সুজয় মাহাতোরও চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যেতে পারে।

পাশাপাশি দু’খানা ঘর। একটা তার নিজের আর একটা আম্মি-আব্বুর। সামনে টানা বারান্দা, মাটির। মাঝে খেজুর খুঁটি যা উপর থেকে নেমে আসা দো-চালাটাকে ধরে রেখেছে। ঘরে ফাঁক ফোকর দিয়ে এমনিতেই বেশ আলো ঢোকে। তাও শিয়রের জানালাটা এখন খুলে দিল আবদুল।

সস্তা কাঠের মিট-সেলফ একখানা। ঝাপ তুলে দেওয়ায় মিট-সেলফের মাথায় আলোর ঝিকিমিকি। গোল গোল পাতার ফাঁক দিয়ে। অন্য দিন এই আলো দেখলে মনটা ফুর ফুরে হয়ে যায়, কিন্তু আজ হচ্ছে না।

ওদেরটাই গাঁয়ের শেষ ঘর। তারপর, এক-দেড় কিলোমিটার জুড়ে জোয়ার-বাজরা আর সর্ষের খেত। দাওয়ার বাম দিকটায় বেশ খানিকটা দূরে সনাতন গাজির বটগাছ। হাইওয়ের ধারে। বহু প্রাচীন ওই গাছের নামেই তাদের গাঁয়ের নাম।

ঘড়ঘড় করে একটা আওয়াজ পেয়ে জানালা দিয়ে তাকায় আবদুল। কয়েকজন কাজ করছে ক্ষেতে। ফসল কাটা হয়ে গেছে আগেই। কাটা ফসলের গোড়াগুলো তুলে ফেলা হচ্ছে হ্যান্ড ট্রাক্টর দিয়ে। সেটারই আওয়াজ। ধানের গোড়া তুলে জমি তৈরি হচ্ছে পরের চাষের জন্য।

যারা মাঠে কাজ করছে তাদের মধ্যে অনেকেই রতনদের গ্রাম বৈগাপাড়া থেকে এসেছে। হিন্দু। ওরা মূলত ভাগ-চাষি। আবদুলদের মত নিজেদের জমি নেই। রতনের বাপ পরমেশ্বর বৈগাও একসময় ‘জন’ খেটে গেছে এই গাঁয়ে। ব্রিজের দাঙ্গায় মরার আগে অব্দি।

অনাদি গোসাঁইয়ের ওখান থেকে আবার চন্দ্রপুরা থানায় ফিরে এলেন সুজয়। বিশ্বামিত্র সেন অনাদির কাছে যেতেন। গিয়ে সুখ দুঃখের কথা বলতেন। মনের মত একজন মানুষ পেলে অনেকেই সেটা করে। এর মধ্যে অস্বাভাবিক কিছুই নেই।

অনাদি এবং বিশ্বামিত্রের সমগ্র কথোপকথন থেকে অন্যরকম কিছুই আবিষ্কার করা যাচ্ছে না। এবং যে কোনও প্রগতিশীল মানুষই ধর্মান্ধতার বিপক্ষে। বিশ্বামিত্রও স্বাভাবিক ভাবে তাই ছিলেন। যেদিন ডি-টাইপ ব্রিজের কাছে ঝামেলাটা হল, তারপর হয়ত একটু বেশিই রিয়াক্ট করে ফেলেছিলেন। সেটাও করতেই পারেন।

চন্দ্রপুরার ওই ধরনের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা এর আগে কখনও হয়নি। শুধু বিশ্বামিত্র সেন কেন, অনেকেই হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন ওই ঘটনায়।

চেয়ারে হেলান দিয়ে ফ্যানের দিকে হাঁ করে তাকিয়ে ছিলেন সুজয়। তারপর ধীরে ধীরে চেয়ারে সম্পূর্ণ এলিয়ে দিলেন নিজেকে। সুজয়ের ঘরখানা বেশ বড়। কম করে কুড়ি বাই আঠারো। পিছনের দেয়াল থেকে তিন-চার হাত ছেড়ে টেবিল। বামদিকে দুটো আলমারি। মাঝে একটা জানালা। থানা চত্বরের প্রাচীন আম গাছটা দেখা যাচ্ছে গরাদের মধ্যে দিয়ে। বাতিল হয়ে যাওয়া জিপ আর গোটা দুয়েক বাইকও চোখে পড়ছে।

জিপের মাথায় একটা শালিককে ঘিরে একদল চড়ুই পাখির কিচির মিচির। দু-একটা চড়ুই একটু বেশি সাহসী। সুযোগ বুঝে মাঝে মাঝে ঠোক্করও মেরে দিচ্ছে। শালিকটা সম্ভবত বৈদ্যুতিক লাইন থেকে ছিটকে এসে পড়েছে। ওই দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতেই ‘ঠুঁটো জগন্নাথ’ কথাটা আবার মাথায় আসে। শালিকটা এখন তাই।

আচ্ছা ওই শব্দ দুটো কেন ব্যবহার করেছিলেন বিশ্বামিত্র বাবু? “পুলিশ কিছু করতে পারবে না। আমার শত্রু যারা, পুলিশ তো তাদের হাতের খেলনা। ক্রীড়নক মাত্র। ঠুঁটো জগন্নাথ।”

সে না হয় বলেছিলেন। অনেকেই বলেন। কিন্তু, তারপর আবার ওই প্রশ্ন!

“আচ্ছা ভগবান জগন্নাথকে কবে থেকে ‘ঠুঁটো’ বলা হয়?”

এই প্রশ্নটা কেন করেছিলেন বিশ্বামিত্র সেন, অনাদি গোস্বামীকে। সত্যিই তো ‘ঠুঁটো জগন্নাথ’ বলা হয় জগন্নাথকে! কিন্তু কেন? ঈশ্বরের হাত আছে কী নেই, তাতে ঈশ্বরের মহিমার কোনও ইতর বিশেষ ভক্তের কাছে ঘটে না। অতয়েব জগন্নাথের শারীরিক প্রতিবন্ধকতা এইক্ষেত্রে কোনও কারণই নয়। তাহলে!

কেতাব-ই'র ব্লগজিন বিভাগে লেখা পাঠাতে চান? মেল করুন manuscript.ketabe@gmail.com-এ। মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখুন ‘কেতাব-ই ব্লগজিনের জন্য লেখা’

এগারো

হোটেল পদ্মনাভ ও সেদিনের সেই চূড়ঙ্গগড় দুর্গ। দুই চৈতন্য-কথা। আদি ও অনাদি।

আবার একবার চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক, ঝাড়খণ্ড থেকে অনেক দূরে অবস্থিত ‘ধর্ম-শহর’ পুরীতে। অত্যন্ত আধুনিক এবং অভিজাত হোটেলটির নাম পদ্মনাভ। কনফারেন্স রুমে আপাত পেলবতার ভিতরে চলছে জীবন মরণের কঠিনতম হিসাব নিকাশ। মৃদু মন্দ আলোয়, ওভাল শেপের টেবিল ঘিরে চারজন। আলোচনা হচ্ছে গুরুতর বিষয় নিয়ে। অনেকক্ষণ ধরে চলছে বৈঠক, তবু এখনও পর্যন্ত কোনও স্থির সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়নি। এখন আলোচনা চলছে প্রকৃত চৈতন্যর রেফারেন্স নিয়ে, এবং এর পরবর্তী এজেন্ডায় রয়েছেন, ‘চন্দ্রপুরার চৈতন্য’।

আলোচনার শুরুতেই অরবিন্দ প্রতিহারী দু’খানা নামের তালিকা ধরিয়েছেন। প্রত্যেকে একবার করে চোখ বুলিয়ে রেখে দিলে উমানাথ সিন্ধিয়া হাতে নেন তালিকা দুটো। বেশ খানিকক্ষণ তাকিয়ে থাকার পর বলেন, “ইজ দেয়ার এনি ডিফারেন্স বিটুইন দিজ টু?” হাতের মুঠিতে দু’খানা কাগজ নিয়ে, দু-বাহু প্রসারিত সিন্ধিয়ার। দেখে মনে হয়, শকুন মেলে দিয়েছে তার বিশাল ডানা।

প্রতিহারী এবং উমানাথ ছাড়া অন্য দুজন তালিকা দুটোতে আলাদা কিছু খেয়াল করেননি। উমানাথ কনফারেন্সে আসার আগে ল্যাপটপে এক ঝলক দেখেও নিয়েছিলেন নামগুলো। বিগত কিছুদিন ধরেই চোখ বোলাচ্ছেন সুযোগ পেলে। দেখতে দেখতে মুখস্থ হয়ে গেছে। শকুনের মত বাড়ানো হাত ছোটো করে আনতে আনতে বলেন, “প্লিজ গো থ্রু এগেইন...”

মিনিট খানেক কেটে গেলে উমানাথ অরবিন্দকে বলেন, “মি. প্রতিহারী আপনি কী কিছু আলোকপাত করতে পারবেন এই বিষয়ে...? ”

“অ্যাকচুয়ালি আমি যখন এটা হাতে পেলাম তখন আমিও কিছু বুঝতে পারিনি। পরে, বার বার দেখতে দেখতে একটা জিনিস পরিষ্কার হয় যে, প্রথম ছটা নাম, দুটো তালিকাতেই এক, কিন্তু তারপরের নামগুলো নিয়ে একটা জাগলারি করা হয়েছে। একটু এদিক ওদিক করে দেওয়া হয়েছে সেগুলো। শাফলিং রিশাফলিং করা হয়েছে।”

উমানাথের কণ্ঠ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে ঘুরে বেড়ায়, “আচ্ছা বলুন তো মি. প্রতিহারী, নামের অর্ডারগুলো এইভাবে চেঞ্জ করে দেবার মানে কী?”

প্রতিহারী ঝানু পলিটিসিয়ান। বহু মানুষের সাথে চেনাজানা। প্রভাব খাটিয়ে এই তালিকা উদ্ধার করেছেন। হাতে পাওয়ার পরই এই তালিকার ছবি উনি পাঠিয়ে দিয়েছিলেন উমানাথকে।

যাই হোক, এখন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, “আমার মনে হয় এটা ইচ্ছাকৃতই করা হয়েছে। কোন তালিকাটা আসল এবং কোন তালিকাটা নকল সেটা নিয়ে যাতে একটা কনফিউশন তৈরি হয়। অ্যাম আই রাইট মিস্টার সিন্ধিয়া?”

“ইয়েস। অফকোর্স। এই তালিকা বিশ্বামিত্র সেন বানাবার পরই বুঝতে পেরেছিলেন যে, এই তালিকা যখন তখন বাইরে বেরিয়ে যেতে পারে কিংবা ইতোমধ্যেই গেছে। তাই একটা প্রিকয়েশন নেবার চেষ্টা করেছিলেন। যাই হোক, দুটি তালিকাই কিন্তু অসম্পূর্ণ। শেষ নামগুলি নেই। আর সেগুলি ছাড়া আমাদের আসল কাজটাই হবে না।”

কথা শেষ হবার সঙ্গে সঙ্গে, অরবিন্দ প্রতিহারী আরও একটা চিরকুট পকেট থাকে বার করে টেবিলে রাখেন। চিরকুটটা হাতে তুলে নেন উমানাথ। ভালো করে নিরীক্ষণ করেন।

“এরাই কি ঐ বংশের শেষ চারজন? আর ইয়ু সিয়োর মি. প্রতিহারী?”

অরবিন্দের ঠোঁটে মৃদু হাসি। বুড়ো দাঁড়কাক যেন। হাসিটা ঠোঁটে ঝুলিয়েই বলেন, “হ্যাঁ এরাই। এই ইনফর্মেশেনটা যোগাড় করা খুব শক্ত নয়। একটু ইতিহাস নিয়ে নাড়াচাড়া করলেই পরিবারের কন্টিনিউয়েশনটা বোঝা যায়। একটা সোর্স একবার পেয়ে গেলে বাদ বাকি লাইনটা ড্র করা এমন কী কঠিন কাজ।” একটু থেমে আবার বলেন, “অ্যাট লিস্ট, আমার টিমে যে সব এক্সপার্টরা আছেন, তাদের কাছে এটা ডিফিকাল্ট নয়... আমি সিয়োর যে, এরাই মিশ্র বংশের শেষ চারজন। এদের মধ্যে প্রথম এবং তৃতীয় জন নেই, দ্বিতীয় এবং চতুর্থ জন, আই মিন সেকেন্ড অ্যান্ড ফোর্থ আর এক্সিসটিং।”

উমানাথ দ্বিতীয় চিরকুট এগিয়ে দেন অনন্ত মহাষুরকে। অনন্ত দু-এক মুহূর্ত তাকিয়ে থেকে বলে, “প্রথম এবং তৃতীয় জন নেই... মানে?”

“মারা গেছেন। পৃথিবীতে নেই।”

“আই সি...”

নামগুলো দেখতে দেখতেই যেন ছকা হয়ে যাচ্ছে হত্যার ব্লু প্রিন্ট। অনন্ত মহাষুরের হাত থেকে কাগজটা পাচার হয় অলকানন্দার হাতে।

শেষ নামটা দেখে দু’এক মুহূর্তের জন্য কেঁপে ওঠে অলকানন্দার ভিতরটা। কেন?

চূড়ঙ্গগড়ের গোপন সভায়, গোবিন্দ বিদ্যাধর যাহা বলিয়াছেন মহাকাল প্রতিহারী এবং জগন্নাথদাসকে তাহার অর্থ, তাঁহাদের উদ্দেশ্য মূলত অভিন্ন। রাজা প্রতাপরুদ্র এবং ওই গেরুয়াধারী সন্ন্যাসীর, অর্থ্যাৎ চৈতন্যের সমূল উৎপাটন। আগে তাঁহাদের চৈতন্যকে সরাইতে হইবে এবং তাহার পর ‘ব্যবস্থা’ হইবে রাজা প্রতাপরুদ্রের।

গোবিন্দর এই কথায় পূর্ণ সহমত পোষণ করিলেন বাকি দুইজন। মহাকাল কহিলেন, “যথার্থ বলিয়াছেন সেনাপতি। চৈতন্য থাকিতে রাজার কোনোরূপ ক্ষতিসাধন একপ্রকার অসম্ভব। কিয়ৎকাল পূর্বে রাজা গৌড়ের অধিপতি হোসেন শাহকে আগ বাড়াইয়া আক্রমণ করিতে চাহিয়াছিলেন। যদি সত্যি সত্যি ঐরূপ করিতেন তাহা হইলে রাজার ধ্বংস ছিল অনিবার্য। আমাদের আর নতুন করিয়া উদ্যমী হইতে হইত না।”

জগন্নাথদাস বলিলেন, “যথার্থ বলিয়াছেন। ঐ কূট চৈতন্যর পরামর্শেই যে উনি অন্তিমকালে যুদ্ধের অভিপ্রায় পরিত্যাগ করিলেন তাহাও আমি জানি।”

“শুধু আপনি নন মহামান্য, সকলেই এই বিষয়ে জ্ঞাত আছেন। আর শুধু তাহাই নহে, অর্বাচীন ঐ সন্ন্যাসী, হোসেন শাহের দুই সেনাপতি, দবীর খাস এবং শাকর মল্লিকের সহিত গোপনে জোট বাঁধিয়াছেন, এইরূপও শুনিতে পাই। সে যাহাই হউক মহামান্য, অযথা সময় ব্যায় না করিয়া আমাদিগের বর্তমানে কী করনীয়, সেই বিষয়ে আলোচনা সারিয়া লইলে উত্তম হয়।”

গোবিন্দ বিদ্যাধরের কথায় সায় দিয়া পাণ্ডা প্রধান মহাকাল বলিলেন, “হ্যাঁ তাহাই ভালো। আপনি সন্ন্যাসীকে সরাইয়া দিতে হইবে-এই মর্মে ইতোমধ্যেই প্রস্তাব দিয়াছেন। কিন্তু তাহা কী রূপে ? ”

“সরাইতে হইবে বলিতে আমি হত্যার কথাই বলিয়াছি। এই পৃথিবী হইতে সরাইবার কথাই বলিয়াছি...” দ্বিধাহীন কণ্ঠস্বর সেনাপতির।

বারো

ফুলওয়ারিতোড়। ঝাড়খণ্ড। আবদুল ও চন্দ্রপুরার চৈতন্য।

একদিকে দারোগা সুজয় মাহাতো খুঁজে বেড়াচ্ছেন বিশ্বামিত্র হত্যার ক্লু অন্যদিকে আবদুলের ঘরে পড়ে আছে সেই বস্তু, যা পেলে হয়ত অনেকটাই কিনারা হয়ে যেত বিশ্বামিত্র হত্যার রহস্য। আবদুল বিশ্বামিত্রকে খুন করেনি ঠিকই, কিন্তু তা সত্ত্বেও রহস্যের একটা দিক নির্দেশ হয়ত সুজয় করতে পারতেন তা হাতে পেলে।

ফিরে আসা যাক ফুলওয়ারিতোড়। সেই ফলসা গাছের ছায়ায় আবদুলের আপাত শান্ত পর্ণকুটিরে।

এখন আর ঘরে বসে থাকতে ভালো লাগছে না। জামা প্যান্ট গলিয়ে নিল আবদুল। মোবাইলটা পকেটে ঢুকিয়ে নিতে ভুলল না। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ আর ফোন যেন একই সাথে পৌঁছেছে সনাতন গাজীর বটতলায়। গাঁয়ের আনাচে কানাচে দানবের মত ঢুকে পড়েছে বহুজাতিক কোম্পানির টাওয়ার।

দাওয়ায় আব্বুকে দেখা যায় না। নিশ্চয়ই গাই গরুটাকে জাবনা দিতে ব্যস্ত। টানা মাটির বারান্দার একপাশে হোগলা দিয়ে ‘পার্টিশন’। ঐ পাশটায় রান্নাঘর। ছ্যাঁক ছোঁক আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। আম্মি যান রান্নাঘরে।

এদিক ওদিকে একবার দৃষ্টি দিয়ে বেরিয়ে পড়ে আবদুল, বাঁখারির গেট খুলে বেরোতে গিয়ে কী যেন একটা মনে পড়ে। সাইকেলটা লক করে ফিরে আসে। ঘরে ঢুকে সস্তা কাঠের সেলফের পাল্লাটা খোলে। ভিতরে কুণ্ডলী পাকিয়ে শুয়ে আছে রিভলভারটা। গ্লক সিরিজ। ভোর বেলা যেটা নিয়ে বেরিয়েছিল কিন্তু কোনও কাজে লাগেনি। ঘরে ঢুকে রেখে দিয়েছিল ঐখানে। এইটিই সেই বস্তু, যা পেলে দারোগা সুজয় মাহাতো হয়ত খুঁজে পেতেন, অজাতশত্রু মানুষটিকে হত্যার ক্লু।

শোনা যায় আবদুলের নেতা সালাউদ্দিনের নাকি এখন ওয়াসিপুর আন্ডারওয়ার্ল্ডের সাথে বেশ ভালো দহরম মহরম। ওদের সাথে যোগাযোগ থাকলে আধুনিক অস্ত্র যোগাড় করা খুব কঠিন ব্যাপার নয়। তবে আবদুল সঠিক জানে না সালাউদ্দিন মোল্লা কোথা থেকে পেয়েছে এই পিস্তল।

ভাগ্যিস আবদুলের মনে পড়ল। আম্মি অথবা আব্বুর চোখে পড়ে গেলে একটা সাংঘাতিক কাণ্ড হতে পারত। এখন কোথায় রাখা যায়? অনেক ভেবেও কোথায় রাখলে কারও নজরে পড়বে না, সেটা বুঝে উঠতে পারে না আবদুল। শেষমেশ পকেটে নিয়েই বেরিয়ে পড়ে।

অজগরের মত পথ চলে গেছে এঁকেবেঁকে। বাম দিকে মসজিদ। আর ডানদিকে গেলে, খানিক বাদে আবাদি জমিতে মুখ থুবড়ে পড়েছে রাস্তা। সেই জমির আল ধরে নাক বরাবর হাঁটলে পৌঁছে যাওয়া যায় দুগ্ধা পাহাড়ে। হাইওয়ে দিয়েও যাওয়া যায় পাহাড়ে। তবে অনেক ঘুরে।

আবদুল ডান দিকেই যায় এখন। ফসল কাটার এই সময়টায় খুব ধুলো বাতাসে। দামোদরের দিক থেকে ধেয়ে আসছে দমকা বাতাস। ধুলোর ঘূর্ণি পাক খেয়ে উঠে যাচ্ছে উপরে। রোদ্দুর বেশ মোলায়েম। এইরকম দিনে সাইকেল নিয়ে ঘুরে বেড়াতে খারাপ লাগে না। তবে আজ সে মন নেই তার। মাথায় খালি ঘুরছে, শালা কোন হারামির বাচ্চা সাবড়ে দিল ওর শিকার! কে উড়িয়ে দিল বিশ্বামিত্র সেনকে! ওর আগেই!

পথের একধারে বিস্তীর্ণ ক্ষেত, আর একদিকে এক মানুষ সমান উলুখাগড়া। ঘাসের জঙ্গলের মধ্যে মধ্যে শাল-শিমুল আর পলাশ। বসন্ত এল বলে। গাছের ডগাগুলো লাল হয়ে যেতে শুরু করবে এইবার। আগুন লাগবে আকাশে।

চাষের জমির দিকটায়, বহু দূরে দেখা যাচ্ছে দু-একজনকে। কর্মরত। দিগন্তের কাছাকাছি বৈগাদের গ্রাম। যে মানুষগুলোকে এখন চোখে পড়ছে, তারা সম্ভবত বৈগা পাড়ারই। কিছু জমির ফসল এখনও কাটা হয়নি। সেই কাজই চলছে।

পথের ধারে, একটা বাবলা গাছের ছায়ায় দাঁড়িয়ে পড়ে আবদুল। পকেট থেকে বার করে রিভলভারটা। পায়ের যেখানে ঘষা খাচ্ছে, জ্বলে যাচ্ছে। প্যান্টের উপর দিয়েই হাত বোলায় খানিক। যন্তরখানা কোমরে গুঁজে আবার উঠে পড়ে সাইকেলে। মিনিট সাত-আটকের মধ্যে চলে আসে পথের শেষ প্রান্তে। রাস্তাটা এই অব্দিই তৈরি হয়েছে। বাদবাকি ‘অ্যালটেড’ জমিতে এখনও মাটি পড়েনি। পথের সীমানা নির্দিষ্ট করার জন্য, ঢালাই করা ছোটো ছোটো পিলারগুলো মাথা তুলে দাঁড়িয়ে শুধু।

মাঠে নামে আবদুল। আলের উপর উঠে আসে। হাঁটতে হাঁটতে মনে হয়, এই মেঠোপথ ধরেই তার বাড়িতে আসত রতন বৈগা। দাঙ্গায় প্রাণ হারানো পরমেশ্বর বৈগার ছেলে। সরস্বতী বৈগার দাদা।

জমির আল খুব একটা চওড়া নয়। একজন যাওয়া যায় অনায়াসে কিন্তু পাশে সাইকেল নিয়ে হেঁটে যাওয়া কঠিন। মিনিট দু’তিন হাঁটার পর ধৈর্যের বাঁধ ভাঙে। মেঠো আল ছেড়ে জমিতে নেমে পড়ে আবদুল । দু’এক পা এগোনোর পরই মুখ থুবড়ে পড়ে। অন্য সময় হলে হয়ত এমন প্রপাত ধরণীতল হত না। কিন্তু আজকের কথা আলাদা। আজ অন্যমনস্ক সে। সাইকেলটা ঘাড়ের উপর এসে আছড়ায়। তবে, ভাগ্য ভালো যে কাটা গমের গোড়া চোখে ঢুকে যায়নি।

উঠে বসে। ঠোঁটে লেগেছে। হাত দিয়ে দেখে জায়গাটা। ভেজা ভেজা। রক্ত বেরিয়ে আসছে চুইয়ে। যত রাগ গিয়ে পড়ে রতনের বোন সরস্বতীর উপর। একে সকাল বেলা ওই রকম কাণ্ড, তার উপর হারামজাদির প্রত্যাখ্যান, দুইয়ে মিলিয়ে তার মাথা এখন ব্যোম হয়ে আছে।

মন্দির থেকে আসার পর দু’দুবার ফোন করেছিল। কিন্তু কথা বলা তো দুরস্ত, ফোনটা ধরেনি পর্যন্ত সরস্বতী। বড় দেমাক মাগীর। ওকে কে বোঝাবে, যে ওর বাপ, আবদুলের ছোঁড়া বোমায় মরেনি। সে আদৌ দাঙ্গার দিন ‘পেটো চার্জ’ই করেনি। শুধু চকলেট বোম ফাটিয়েছিল গোটা দুয়েক। সে নিশ্চিন্ত যে, মন্দির বাহিনীর ছোঁড়া বোমাতেই ঘটেছে অঘটনটা।

গলার কাছটাতেও ভেজা অনুভূতি। ঠোঁটের রক্ত গড়িয়ে আসছে। চেটোর উল্টো দিক দিয়ে মুছে নিয়ে আবার হাঁটতে শুরু করে পাহাড়ের দিকে। অল্প সময়ের মধ্যে পৌঁছে যায় দুগ্ধার পায়ের কাছে। খাড়াই নয়। অনেকটা জায়গা নিয়ে খুব ধীরে ধীরে উঠে গেছে উপর দিকে। বড় বড় পাথর বেরিয়ে আছে এদিক ওদিক। ফাঁকে ফাঁকে শন ঘাস। এক এক সময় পাহাড়ের রঙ এক এক রকম। বর্ষায় নতুন জল পেলে ঘাস জন্মায়। রঙ তখন ঘন সবুজ। আশ্বিন মাস অব্দি থাকে ওই রকম। তারপর ফিকে হতে শুরু করে। চৈত্রে, সব ঘাস মরে গেলে শুধুই ধূসর। তবে, ফাল্গুন চৈত্রে অন্য মজা। শিমুল আর পলাশ। ক্যানভাসে তখন লালের মিছিল।

ভোরবেলা ‘স্পটে’ গিয়ে বিশ্বামিত্রকে মৃত অবস্থায় দেখেছিল আবদুল। তখন বলবন্তের ঘর ভিতর থেকে বন্ধ, আর গোসাঁইজির ঘর বাইরে থেকে তালা দেওয়া। বুঝে গিয়েছিল, সিকিউরিটি বলবন্ত সারা রাত পাহারা দেবার পর নিজের ঘরে গিয়েছে বিশ্রাম নেবার জন্য। আর, অনাদি গোসাঁই মন্দিরে নেই। নিশ্চয়ই গতকাল সন্ধ্যা আরতির পর, ভক্তদের নিয়ে কীর্তনে বেরিয়ে গেছেন। এবং রাতে আর ফেরেননি।

উপরে উঠেই এদিক ওদিক দেখে আবদুল। দুগ্ধার শান বাঁধানো চত্বর এখন শুনশান। ঠিক মাঝামাঝি জায়গায় একটা অশ্বত্থ গাছ। দু’ফুট উঁচু বেদি চারদিকে। তার উপর, নিজের মত করে গুছিয়ে বসে সে।

কোকিলগুলো আজকাল বড় বেয়ারা। সময় আসার আগেই চিৎকার জুড়ে দেয় তারস্বরে। দখিনা হাওয়ায় কীভাবে যেন পলাশের গন্ধ পায়।

“এই নে ...”

প্রাণপণে যখন একটা বড় করে শ্বাস নিতে যাবে আবদুল, তখনই কথাটা বললেন অনাদি গোস্বামী। অনাদি, আদি নিবাস সম্পর্কে জানতে চাইলে বলেন ‘কেশনগর-ওয়েস্টবেঙ্গল’। না, ওটা আসলে ‘কেশনগর’ নয়, ‘কৃষ্ণনগর’। নিজের মত করে একটা অপভ্রংশ বানিয়েছেন গোসাঁই।

অনাদির ডাকে চমকে ফিরে তাকায় আবদুল। পুজোর প্রসাদ। গোসাঁইজির এক হাতে প্রসাদী থালা অন্য হাতে পানপাত্র। রুপোর থালায় চারখানা ফেনি-বাতাসা আর গোটা চারেক খেজুর। বাতাসাগুলো দেখেই মন ভরে যায় আবদুলের। নিটোল, সুন্দর। দু’খানা মুখে পুরে হাউমাউ চিবোয় সে। খানিকটা গলাধঃকরণ হলে বলে, “গোসাঁইজি ব্যাস...”

“না। ব্যাস নয়। বাতাসাগুলো সব খেয়ে জলটা খেয়ে নে...”

ফাটা জায়গা থেকে রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়েছে প্রায়। তবে ঠোঁটটা ফোলা। ওটা চট করে যাবার নয়। ক্ষতস্থানটা খেয়াল করেছেন গোসাঁই। খুব স্বাভাবিক ভাবেই ভেবেছেন, উগ্রমতি আবদুল নিশ্চয়ই কোনও গোলমালে জড়িয়েছিল, এবং তারই ফলাফল এটি। আরও ভেবেছেন, জলটল খাওয়া হলে, ওই বিষয়ে সবিশেষ কৈফিয়ত চাইবেন।

গোসাঁইজি আতপ্ত বাতাসের মত স্নেহের একখানা মাদুর বিছিয়ে রাখেন গাছ গাছালির ফাঁকে, পাহাড়ের মাথায়। একবার সংস্পর্শে এলেই যা টের পাওয়া যায়। সেখানে বসে দু-দণ্ড জিরিয়ে নিতেই তো আবদুল হাজির হয় যখন তখন।

তেরো

বোকারো। এস পি বাংলো। ঝাড়খণ্ড।

আবদুল একটু জিরিয়ে নিক। সেই অবসরে এক ঝলক উঁকি দিয়ে দেখে নেওয়া যাক ঝাড়খণ্ড পুলিশি ব্যবস্থার অন্দরে। বিশ্বামিত্র খুনে ঠিক কতখানি নাড়াচাড়া পড়েছে পুলিশের পরিপাক যন্ত্রে।

সকালবেলা দারোগা সাহেবকে একটা মিথ্যা কথা বলেছিলেন এসপি। তিনি সুজয় মাহাতোকে বলেন, সেক্টর ফোর পুলিশ স্টেশনে গিয়েছিলেন তাই নাকি এসেছেন চন্দ্রপুরা। মানে, চন্দ্রপুরা থানায় এসে ‘পুছতাছ’ করাটা ওঁর আসল উদ্দেশ্য ছিল না।

ঠ্যালায় পড়লে বাঘে ধানে খায়, আর বিপদে পড়লে পুলিশ মিথ্যে বলবে, এ আর এমন কী! প্রকৃতপক্ষে, যাওয়ার পথে এসপি একবার সেক্টর ফোর থানায় ঢুঁ মারেন ঠিকই, কিন্তু সত্যিকার গন্তব্য ছিল চন্দ্রপুরাই।

আজও ভোরবেলা, ঘুম থেকে উঠে টানা আধঘণ্টা জগিং করেছেন। দৌড়-ঝাঁপ হয়ে গেলে গুনে গুনে কুড়িখানা সিট-আপ। সুঠাম শরীর থেকে যখন ঝরে পড়ছে স্বেদবিন্দু, এসপি তখন এসে বসেছেন আরাম-কেদারায়। তোয়ালে দিয়ে ঘাম মুছে চোখ দিয়েছেন খবরের কাগজে, রোজকার মতই।

এর ঠিক মিনিট কুড়ি বাদে চা আসে, সুদৃশ্য টি পটে। স্ট্রং মর্নিং টি। সবে পানীয়খানা যুত করে বানিয়ে মুখে তুলতে যাবেন, তখনই ঘটে যায় বিপত্তি। ফোন আসে শিক্ষা-মন্ত্রীর। শিক্ষা-মন্ত্রীর কাছে ততক্ষণে যে ভাবে হোক পৌঁছে গেছে বিশ্বামিত্র হত্যার খবর।

ফোন আসার পর সকালের চা মাথায় ওঠে। কোনও রকমে তৈরি হয়ে বেরিয়ে পড়েন। চন্দ্রপুরা থানার উদ্দেশ্যে। চাপ উপর থেকে নীচে যায়। বিশ্বামিত্র কেসে, মন্ত্রী চাপ দিয়েছেন এসপি-কে। এসপি, দারোগা সুজয় মাহাতোকে।

কিন্তু সুজয় মাহাতোর ক্ষমতা সীমিত। থানা ছোটো। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি কিংবা অস্ত্রশস্ত্র কিছুই নেই। ফোর্স সেই অর্থে প্রায় নেই বললেই চলে। এসপি-কে বললে ফোর্স পাঠিয়ে দেবেন ঠিকই। কিন্তু সেই বাড়তি লোক নিয়ে তিনি করবেনটা কী, যদি না তদন্তের একটা গতিপ্রকৃতি ঠিক হয়।

যাই হোক, এইদিকে যেটা এখন সবথেকে বেশি ভাবাচ্ছে এসপি-কে তা হল, স্বয়ং মিনিস্টার সাহেব কেন এত ‘কনসার্নড’ এই মার্ডারটা নিয়ে!


কেতাব-ই’র মুদ্রিত বই, ই-বই এবং ব্লগজিন বিভাগের লেখালিখির নিয়মিত খোঁজখবর পেতে আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন


এই ব্লগজিনে প্রকাশিত সমস্ত লেখার বক্তব্য লেখকের নিজস্ব।

মন্তব্য করুন

লেখক

জন্ম-৮ সেপ্টেম্বর, কলকাতা। ছাত্রাবস্থায় বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় লেখার মাধ্যমে লেখালেখির শুরু। এই উপন্যাস ছাড়াও লেখকের প্রকাশিত অন্য উপন্যাসগুলি হল— ‘আসলে ভালবাসার গল্প’, ‘রোধবতীর নীল রং’, ‘একে রহস্য দুইয়ে লক্ষ্যভেদ’। দেশ, আনন্দমেলা, কৃত্তিবাস, কিশোর জ্ঞান বিজ্ঞান, কথা-সাহিত্য, বহুরূপী এবং আনন্দবাজার পত্রিকায় ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে বেশ কিছু লেখা। এছাড়াও বাংলার শ্রেষ্ঠ নাট্যকারের সম্মান ‘সুন্দরম পুরস্কার’ পান ২০১৪ সালে।

অন্যান্য লেখা

দেখতে পারেন