preloader
বাংলা বইয়ের e-ভুবন
Menu Categories Search Cart 0
Menu
Cart

Total 0 Items

☹ Your cart is empty

Sub Total:

$0

₹0

বিভাগ
চৈতন্যে বধিবে কে!: পর্ব ৬
ধারাবাহিক

চৈতন্যে বধিবে কে!: পর্ব ৬

অলকানন্দার চিন্তার কারণ খুঁজতে হলে, খুঁজে দেখতে হবে তার সাথে স্বপ্ননীলের যোগসূত্র। সেই খোঁজার কাজটা এইবার একটু একটু করে শুরু করা যাক। আগে দেখা যাক কে এই স্বপ্ননীল। বাকিটা এই উপাখ্যান চলতে চলতেই স্পষ্ট হবে।
তবে এই কথা বলে রাখা ভালো যে, এই স্বপ্ননীলের কাছ থেকেই হয়ত মিলতে পারে বিশ্বামিত্র হত্যার ক্লু।

ষোলো

যাদবপুর। কলকাতা।

ঠিকানা-পালবাজার, যাদবপুর, কলকাতা। বিশাল এই বাড়িটির পড়ার ঘরে এক নিবিড় পাঠে মগ্ন স্বপ্ননীল মিশ্র। মিশ্র বংশের শেষ প্রদীপ।

ঝিলপাড়ের এই বাড়িটি মিশ্র পরিবারের। চারপুরুষ আগেই নবদ্বীপের ব্যবসাপত্র গুটিয়ে নিয়ে কলকাতায় ব্যবসা ফেঁদে বসেন মিশ্ররা। সেই ব্যবসা আজ ফুলে-ফেঁপে ঢোল। নবদ্বীপে পড়ে থাকলে এটা হত না।

নবদ্বীপের পোড়ামাতলা ঘাটের কাছে পরিবারের আদি বাড়টি এখনও আছে। যার সঠিক বয়স অনুমান করা কঠিন। সেই ভিটে মিশ্র বংশের নবদ্বীপ পদার্পণ করার পর প্রথম ভিটে, এরকমটা দাবি করা যায় না। সে যাই হোক, পরিবারের বর্তমান কর্তা, মাননীয় রত্নাকর মিশ্র পোড়ামাতলা ঘাটের আদি বাড়িতেই থাকেন বছরের বেশিরভাগ সময়টা।

রত্নাকর মিশ্রের পৌত্র স্বপ্ননীল মিশ্র। মিশ্র বংশের শেষ প্রদীপের সলতে। স্বপ্ননীল মিশ্র তীক্ষ্ণমেধা সম্পন্ন স্থিতধী এক যুবক। এই স্বপ্ননীলের কাছ থেকেই হয়ত মিলতে পারে বিশ্বামিত্র হত্যার ক্লু। স্বপ্ননীলের উপর বিশ্বামিত্র সেনের অগাধ ভরসা ছিল। বিশ্বামিত্র সেন গবেষণার ক্ষেত্রে স্বপ্ননীলকে নিজের উত্তরসূরি হিসাবেই ভাবতেন।

যাদবপুর ইউনিভার্সিটি থেকে মাস্টার্স অফ ফার্মাকোলজি স্বপ্ননীল। বিষয় হিসেবে ‘ফার্মাকোলজি’র নির্বাচন পারিবারিক কারবার দেখাশোনার জন্য, চাকরির জন্য নয়। তবে ফার্মাকোলজি নয়, তার প্রিয় বিষয় হল ইতিহাস, যার মধ্যে নীল ফেলে আসা সময়কে দেখতে পায়। ফিরে যেতে চায় শিকড়ে। এই অনুসন্ধান বিশ্বামিত্র সেনের সংস্পর্শে আসার পর আরও যেন বেড়েছে।

যাদবপুর এইট বি বাস স্ট্যান্ডের কাছেই ওষুধের দোকান। মিশ্র ড্রাগ হাউস। দোকান ছাড়াও আছে, বিভিন্ন মেডিসিনের ডিস্ট্রিবিউটরশিপ এবং  ডায়গোনস্টিক সেন্টার। কারবার নেহাত ছোটো নয়। দেখাশোনা করার লোক আছে বেশ কয়েকজন। কাজেই দু-একদিন না গেলে কোনও অসুবিধা নেই।

ঝিল আর বিবেকনগর কালীবাড়ির মাঝামাঝি বাড়িটা শহরের মধ্যে হলেও নাগরিক কোলাহল এসে আছড়ে পড়ে না। পড়াশুনার পরিবেশ আছে দিব্যি।

এখন যা নিয়ে স্টাডি করছে নীল, সেটা নিয়ে আগে কখনও করেনি।  ওই দিনের অলকানন্দার বলা কথাগুলো তাকে আবার মহাপ্রভু নিয়ে ‘খোঁড়াখুঁড়ি’ করতে উৎসাহ জুগিয়েছে। এই খননের মধ্যে অদ্ভুত এক প্রশান্তি আছে। আজ আউটলেটে না গিয়ে সকাল থেকেই বসে গেছে।

সেদিন প্রায় অযৌক্তিক ভাবে নীলের কথাগুলো খণ্ডন করার চেষ্টা করেছে অলকানন্দা। অর্থহীন ভাবে মহাপ্রভু এবং বুদ্ধের মধ্যে তুলনা টেনেছে, বারে বারে। নীল বলেছিল, “মহাপ্রভুকে বাংলা তথা সারা ভারতের গণতান্ত্রিক চেতনার জনক বলা যেতে পারে।” 

খুব সাধারণ কথা। কিন্তু ফোঁস করে ওঠে অলকা। যা শুনে মনে হয়েছিল মেয়েটাকে এখনও ঠিকঠাক বুঝে ওঠা হয়নি। কিরকম যেন এক কুয়াশা ওর চারপাশে। রহস্য না থাকলে এত সাধারণ কথায় কেউ ওই ভাবে রিয়্যক্ট করতে পারে! যেন আগের থেকে ঠিকই করে রেখেছিল, মহাপ্রভু নিয়ে যাই বলা হোক না কেন, তার বিরুদ্ধে ওকে কথা বলতে হবে।

আরও যেটায় অবাক হয়েছিল স্বপ্ননীল, যে একজন ইতিহাসের ছাত্রী হওয়া স্বত্বেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে অলকার ভিতরে এত কুসংস্কার, এত অস্বচ্ছতা কেন! নাকি কিছুদিন আগে, মহাপ্রভুর সম্ভাব্য হত্যাকারী কারা হতে পারে তার একটা সুস্পষ্ট চিত্র স্বপ্ননীল তার সামনে তুলে ধরেছিল বলে সে খানিকটা বিভ্রান্ত ! আর শুধু বিভ্রান্তই বা বলা যায় কী করে, মুখ দেখে খানিক বিব্রতও বোধ হচ্ছিল যেন। হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি করে বলেই কী তার এই বিভ্রান্তি? এই অসূয়া? হতে পারে।

এখন যে পাঠে মনোনিবেশ করেছে স্বপ্ননীল তার মূল প্রতিপাদ্য, মহাপ্রভু যে এই দেশের গণতান্ত্রিক চেতনার জনক, তা আবারও খতিয়ে দেখা।

সে যাই হোক না কেন, ‘সময়’ বড় বিচিত্র। পরিবর্তিত হবার জন্য কয়েকটা মুহূর্তই যথেষ্ট। কে জানত, যে স্বপ্ননীল এখন নিশ্চিন্ত মনে পড়াশুনা করছে, যার  আচরণে এখন নিবিড় অথচ আয়েশি এক ভঙ্গিমা, তা খানিক বাদেই, একটা ফোনে ভেঙে গুড়িয়ে যাবে। তড়িঘড়ি তাকে রওয়ানা হতে হবে এক বিপদসংকুল গন্তব্যে ! তবে আপাতত পাঠে মগ্ন থাকুক স্বপ্ননীল। আমরা অলকা এবং অন্য সূত্র ধরে আবার ফিরে আসব তার কাছে।

কেতাব-ই'র ব্লগজিন বিভাগে লেখা পাঠাতে চান? মেল করুন manuscript.ketabe@gmail.com-এ। মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখুন ‘কেতাব-ই ব্লগজিনের জন্য লেখা’

সতেরো

ফুলওয়ারিতোড়। ঝাড়খণ্ড।

“ঐ নষ্ট পানপাত্র দিয়ে আবার কাকে জল খাওয়াবেন গোসাঁই?” মুসল্লির ছেলে আবদুলকে জল খাওয়াতে দেখে সদাশিব মোহান্তি প্রশ্ন করেছিলেন অনাদি গোস্বামীকে।

তিনদিক দিয়ে চড়া যায় দুগ্ধার মাথায়। মোহান্তি নিশ্চয়ই পিছন দিক দিয়ে এসে হাজির হয়েছে। অনাদির সাথে আবদুলের এত মাখামাখি বরদাস্ত করতে পারে না সে। এক মুসলমানের সাথে একজন হিন্দু পূজারীর এত গলাগলি কীসের!

মোহান্তি আগেই দৃশ্যমান হয়েছিল এখন তার বাক্যটাই আরও খানিক বিকৃত করে বলতে বলতে কাঁঠাল গাছটার আড়াল থেকে বেরিয়ে আসে মোহান্তির সাগরেদ বাপি হাঁসদাও, “ঐ নষ্ট পানপাত্র দিয়ে আবার কাকে জল খাওয়াবেন গো গোসাঁই?” বাপির চোখে চোখ রেখে সিধা হয়ে দাঁড়ান অনাদি। 

এমনিতেই বিশ্বামিত্র সেন কার হাতে খুন হলেন এই ভেবে দিশেহারা আবদুল, তার মধ্যে বৈগা পাড়ার পুরোহিত আর তার চ্যালার এই সব অকিঞ্চিৎকর প্রলাপ! মাথায় যেন আগুন জ্বলে যায়। গোসাঁই কিছু বলার আগেই আবদুল যা বলে, তার অর্থ, ‘তোর বাপরে খাওয়াবে রে পুরুতের পোঁ’।

বাপি কথা শুনে তিড়িং করে একটা লাফ দেয়, “তুই কাকে কী বলছিস রে আবদুল!” 

“কেন তুই বুঝতে পারিসনি, কাকে কী বলেছি। তোর বাপের কথা বলছি।” নির্বিকার ভাবে বলে আবদুল। 

মোহান্তি ঠাকুর বেশ ফর্সা। আবদুলের কথায় তার মুখে লাল লাল ছোপ ধরে। আবদুলের শেষ বাক্যখানা শুনে তিড়িং করে একটা লাফ দিয়ে আরও হাত দুয়েক এগিয়ে এসেছিল বাপি হাঁসদা। তাতে অবশ্য আবদুলের কোনও ভাবান্তর ঘটে নি। আবদুল জানে, বাপির মত এই সব চ্যালা চামুণ্ডাদের দৌড় কদ্দুর। তার পাথর কোদা বিরাট শরীরে এতখানি শক্তি অবশ্যই আছে যে, দু'হাতে বাপি হাঁসদাকে অনায়াসে মাথার উপর তুলে আছাড় মারতে পারে। আবদুল বসে বসেই বলে যায়, “ ওত লম্ফঝম্ফ না করে নিজের বাপরে সামলা রে বাপি। আর কোনোদিন এই সব বললে সোজা দানা ভরে দেব।”  

হারামজাদা মুসল্লির ছাওয়াল! একে মন্দিরের শানে ঠ্যাং টানা দিয়ে বসে আছে, তার উপর যত বড় মুখ নয় তত বড় কথা! ‘জুতিয়ে মুখ ছিঁড়ে দেব তোমার।’ বাক্যটা বলতে গিয়েও বলে না মোহান্তি। থুতুর সাথে মণ্ড পাকিয়ে কোনও রকমে ভিতরে চালান করে দেয়। এই আবদুলকে শালা বিশ্বাস নেই। একে গোঁয়ার গোবিন্দ তার উপরে আবার এখন ঝাড়খণ্ড মুসলিম লিগের অ্যাকশন স্কোয়াডের নেতা। সত্যি সত্যিই দানা ভরে দিতে পারে। আবদুলের উপর থেকে চোখ সরিয়ে মোহান্তি ঠাকুর তাকায় অনাদি গোসাঁইয়ের দিকে। গোসাঁইজির মুখেও কোনও ভাবান্তর নেই। ঠাকুর বলে, “শুনলেন কী বলল!”

গোসাঁই নির্বিকার।

“অঃ আপনি হাসছেন! তার মানে... ওর কথাকে আপনি সমর্থন করছেন!”

“অন্য সময় হলে হাসতাম। আজ হাসছি না। মন্দিরে অত বড় একটা অঘটন হয়ে যাবার পর আজ আমার হাসার কথা নয়। সে যাই হোক, না...আবদুলের কথাকে আমি সমর্থন করি না। তবে শুরুটা কিন্তু আপনিই করেছেন মোহান্তি।”

বিশ্বামিত্র খুনের খবর যে মোহান্তি অব্দি পৌঁছে গেছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কারণ ‘অঘটন’-এর কথায় মোহান্তির কোনও পরিবর্তন নেই। সম্ভবত খুনের খবর পেয়েই পরিস্থিতি দেখতে এসেছে, সরেজমিনে। কথা খুঁজে না পেয়ে মোহান্তির এইবার ব্যক্তিগত আক্রমণ, “আপনি নিজেকে কী মনে করেন! লোকে আজকাল আপনাকে ‘চন্দ্রপুরার চৈতন্য’ নাম দিয়েছে বলে আপনি সত্যি সত্যই মহাপ্রভু হয়ে গেছেন! একজন মুসল্লিকে মন্দির চত্বরে বসিয়ে তৈল মর্দন করছেন, আবার রসিকতাও করছেন!”

“ভুল করছেন ঠাকুর মশাই। রসিকতা আমি এখনও কিছু করিনি। আর আজ সেইদিনও নয়। আজই ভোর রাতে যে এই মন্দিরে বন্ধু বিশ্বামিত্র খুন হয়েছেন, সেই কথা জানেন নিশ্চয়ই?”

“হ্যাঁ জানি গোসাঁই। তাই তো সব কাজ ফেলে দুগ্ধায় এলাম, আপনাকে সাবধান করতে। খোল করতাল মৃদঙ্গ এই সব নিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে এ গাঁয়ে সে গাঁয়ে ঘুরে বেড়ানো বন্ধ করুন। না হলে কিন্তু আপনারও দিন ঘনিয়ে আসছে...”

দেবদারু পাতার ফাঁক দিয়ে প্রাক মধ্যাহ্নের রোদ্দুর প্রশস্ত শানে আলপনা কাটছে ঝিকিমিকি। দু’খানা ঘুঘুপাখি ঘুরে বেড়াচ্ছে ইতস্তত। পাখির ডাক ছাড়া কোথাও কোনও শব্দ নেই। অনাদির জায়গায় অন্য কেউ থাকলে এই নৈঃশব্দ্যের মধ্যে মোহান্তির বলা বাক্যগুলো, সোজা ফাল হয়ে সেঁধিয়ে যেত তার বুকের ভিতর। কিন্তু অনাদি অন্য ধাতুতে গড়া। তিনি মৃদু হেসেই উত্তর করেন, “আমার জন্য চিন্তা করবার কোনও প্রয়োজন আপনার নেই মোহান্তি। আপনি বরং বাকিটা জীবন, কোন পানপাত্র কার জন্য উপযুক্ত, সেটা ভাবুন।”

সে মোহান্তিকে যাই বলুন না কেন অনাদি গোস্বামী, মোহান্তি কিন্তু খুব একটা মিথ্যা বলেনি। চন্দ্রপুরার চৈতন্যর জন্য ‘ব্যবস্থা’ তো হচ্ছেই।  হোটেল পদ্মনাভতে যে মিটিং চলছে, সেখানে কথা হচ্ছে শুধু চৈতন্য মহাপ্রভুকে নিয়ে নয়, চন্দ্রপুরার চৈতন্যকে নিয়েও। ধর্মের জায়গীরদারদের ভয়, শুধু গেরুয়াধারি যুগপুরুষটিকে নিয়েই নয়, বর্তমানে তাঁর বার্তা যে মানুষটি নিজের দেহে মনে বয়ে নিয়ে বেড়ান, সেই মানুষটিকে নিয়েও।

সদাশিব মোহান্তি এবং তাঁর চ্যালা বাপি হাঁসদা গাছের আড়ালে হারিয়ে যায়, শাপ শাপান্ত করতে করতে। গোসাঁইজি পূর্ণদৃষ্টি নিয়ে ফিরে তাকান আবদুলের দিকে। আবদুল বলে, “মোহান্তি আপনাকে কিচ্ছু করতে পারবে না। কিছু হলে আমাকে বলবেন, সালাউদ্দিন মিঞাকে বলে টাইট দিয়ে দেব।”

এরপর অনাদি গোসাঁইয়ের মৃদু অথচ দৃঢ় তিনখানা বাক্য ভেসে আসে, যা আবদুলের রাজনৈতিক সত্তাকে ধন্ধে ফেলার জন্য যথেষ্ট।

“আমার জন্য তোর চিন্তার দরকার নেই। সালাউদ্দিন মিঞা অথবা মোহান্তি দুজনেই সমান। কেউ ঠিক জায়গায় নেই...।” 

আঠারো

হোটেল পদ্মনাভ ও সেদিনের সেই চূড়ঙ্গগড় দুর্গ। দুই চৈতন্য-কথা।

হোটেল পদ্মনাভ। বংশতালিকার সাথে মহাপ্রভুর সংযোগ কীভাবে খুঁজে পাওয়া যেতে পারে, তাই নিয়ে কথা হচ্ছিল। এইখানে একটা কথা একটু খুলে বলে নেওয়া ভালো। এই তালিকা অনুযায়ী মহাপ্রভুর যে দু’জন লিভিং রেফারেন্স, তারা হলেন রত্নাকর মিশ্র এবং তাঁর পৌত্র স্বপ্ননীল মিশ্র। কেন তাঁদের মহাপ্রভুর ‘রেফারেন্স’ বলা হচ্ছে তা খানিক বাদেই আরও পরিষ্কার হয়ে যাবে। আপাতত রত্নাকর এবং স্বপ্ননীলকে ‘রেফারেন্স’ বলেই চিহ্নিত করবেন হোটেল পদ্মনাভয় উপস্থিত বি. এইচ. এম. ডি-র পদস্থরা।

উমানাথ বলেছিলেন, বিশ্বামিত্রের ল্যাবে যদি খুব ভালো করে খোঁজা হয় তাহলে নাকি সেই জিনিস উদ্ধার করা যাবে, যার সাহায্যে, এই তালিকায় ‘ফ্যামিলি ট্রি’ যার থেকে শুরু হয়েছে... মানে বিশ্বরূপ মিশ্র, তাঁর সাথে,  মহাপ্রভুর ‘ক্লিনিকালি’ একটা ‘লিঙ্ক’ করা যাবে। মানে এটা প্রমাণ করা যাবে যে, এরা ‘সিবলিং’।

কিন্তু আবদুল কী পেয়েছে ল্যাবরেটরিতে হানা দিয়ে? না, দু-জোড়া গ্লাভস, গোটা তিনেক কাচের বিকার, পাঁচটা টেস্ট টিউব এবং গোটা দুয়েক টেস্ট টিউব হোল্ডার।

অনন্ত মহাষুর অনেকক্ষণ কোনও কথা বলেনি। এইবার উমানাথকে সমর্থন করে বলে, “হ্যাঁ, ঠিক। যে জিনিসগুলো বিশ্বামিত্রের ল্যাব থেকে সরানো হয়েছে, সেগুলি থেকে খুব ফলপ্রসূ কিছু পাওয়া যাবে বলে মনে হয় না। যাই হোক, এই মুহূর্তে আমাদের করনীয় কী?”

উমানাথ সিন্ধিয়া চেয়ারে হেলান দিয়ে কথা বলছিলেন। শরীরটা টেনে আনেন সামনের দিকে। সোজা হয়ে বসতে বসতে বলেন, “মহাপ্রভুর ক্ষেত্রে, বর্তমানে আমাদের যেটাকে সবথেকে বেশি ইম্পর্টেন্স দেওয়া দরকার তা হল, এখনও ডিএনএ ফিঙ্গার প্রিন্টিংয়ের কাজ চালিয়ে যেতে পারে, এরকম ব্যক্তির উপর নজর রাখা।”

কথার মাঝখানে অরবিন্দ বলেন, “আই অ্যাম রিয়েলি সরি ফর দি ইন্টারাপশন… অ্যাকচুয়ালি দেয়ার ইজ আ ভ্যালিড কোয়েইশ্চেন...”

“বলুন...।”

“আসলে তালিকা হাতে পাওয়ার পরই, আমি আমার ইনভেস্টিগেশন টিমকে বলি, ‘রেফারেন্স’ যে বা যারা আছে তাদের সম্পর্কে চিরুনি তল্লাশি চালাতে। সেটা করতে গিয়ে আমরা যা পেয়েছি তা হল...।”

“কী পেয়েছেন?”

“যে ডিএনএ ফিঙ্গার প্রিন্টিংয়ের কাজটা চালিয়ে নিয়ে যেতে পারে এবং যে ‘লাস্ট রেফারেন্স’, সে দুজন আলাদা কেউ নন। একই ব্যক্তি। স্বপ্ননীল মিশ্র। সেখানেই আমার প্রশ্ন, আমরা যদি স্বপ্ননীলকেই ‘ডেস্ট্রয়’ করে দিতে পারি, তাহলে তো আলাদা করে আর কারও উপর নজর রাখার ঝামেলাটাই থাকে না... মি. বিশ্বামিত্র সেনের যে গবেষণালব্ধ তথ্য বাইরে আসা নিয়ে আমাদের এত মাথা ব্যথা, সে সম্ভাবনার পথ নিজের থেকেই বন্ধ হয়ে যায় তাহলে।”

কিন্তু উমানাথ উপর মহল থেকে অন্য ইঙ্গিত পেয়েছেন। কী যেন একটা চিন্তা করেন দু-এক মুহূর্ত, তারপর বলেন, “না। আমার মনে হয়,  ‘রেফারেন্স’-কে এত তাড়াতাড়ি ধ্বংস না করে তার উপর নজরদারি চালানোটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। তবে বেশি বাড়াবাড়ি যদি করে... দেইইন অ্যাট ফাস্ট ট্রাই টু ক্রিয়েট আ ফোবিয়া... ভয় দেখানো। তাতেও যদি কাজ না হয়, তখন দেখা যাবে কী করা যায়?”

একটু থেমে আবার বলেন, “এটা ঠিক, যে ‘রেফারেন্স’ সেই বিশ্বামিত্রের কর্মকাণ্ডকে চালিয়ে নিয়ে যেতে পারে, কিন্তু এটা আমরা এখনও জানি না যে, বিশ্বামিত্র সেন তাঁর রিসার্চের কথা আরও অন্য কারো সাথে শেয়ার করেছেন কিনা... সে কথা একমাত্র ‘রেফারেন্স’ অর্থাৎ স্বপ্ননীল মিশ্ররই জানার কথা। এখনই যদি তাকে উড়িয়ে দেওয়া হয়, তবে সেই রক্তবীজের কাছে পৌঁছনোর সম্ভাবনাটা কিন্তু নষ্ট হয়ে যাবে।”

উমানাথের দামি মোবাইলটা রাখা ছিল টেবিলে। সবার ফোন বন্ধ হলেও তার ফোন কিন্তু নয়। হাইকম্যান্ডের নির্দেশ আসতে পারে যখন তখন। ভাবতে না ভাবতে বেজে ওঠে দূরভাষ যন্ত্র। ফোন তুলে নিয়ে বাইরে যান সিন্ধিয়া। মিনিট পাঁচেক কথা বলে ফিরে আসেন।

আরও কিছুক্ষণ আলোচনার পর যেটা ঠিক হয় তা হল, এখন যে দুজন ‘রেফারেন্স’ হিসাবে আছে, অর্থাৎ রত্নাকর মিশ্র এবং স্বপ্ননীল মিশ্র, তাদের কাউকেই ‘খতম’ করা হবে না। নজর রাখা হবে শুধু। বেশি বাড়াবাড়ি করলে বোঝাতে হবে। যে ভাষা তারা বোঝে সেই ভাষায়। এবং এর পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক হবে হাইকম্যান্ডের নির্দেশ পাওয়ার পর।

শেষতম ‘রেফারেন্স’ যাকে ভাবা হচ্ছে সেই স্বপ্ননীল তার যাদবপুরের বাড়িতে এখনও পড়ে আছে পড়াশুনা নিয়ে। সে ঘুণাক্ষরেও ধারণা করতে পারছে না অদৃশ্য শত্রুর নীল নকশা সম্পর্কে।

এইদিকে, হোটেল পদ্মনাভতে মহাপ্রভুর ‘রেফারেন্স’ বিষয়ক আলোচনা ছাড়াও আজকের এজেন্ডায় ছিলে আরও এক অতীব ভয়ানক বিষয়। উমানাথ সেই দ্বিতীয় প্রসঙ্গের উত্থাপন করেন, “দেন ফ্রেন্ডস হ্যাভ এ শর্ট অ্যান্ড কুইক ডিসকাশন অ্যাবাউট দ্য গ্রেট চৈতন্য অফ চন্দ্রপুরা।”

অরবিন্দ বলেন, “হ্যাঁ। ওর ব্যাপারে যে ভাবে ভাবা হয়েছে সেই ভাবেই এগোনো হবে। আমি আর অনন্ত তো আজকেই ফ্লাই করছি ঝাড়খণ্ডের উদ্দেশ্যে। সেইভাবেই পুরো ব্যাপারটা অ্যারেঞ্জ করা আছে।”

“তাহলে ওটা নিয়ে আর নতুন করে আলোচনার কিছু নেই তো?”

“না। আপাতত অ্যাকোডিং টু প্ল্যান আমরা প্রসিড করব। দেইইন... দেখা যাক কী হয়...।”

‘প্ল্যান’-এর মোদ্দা কথাটি হল, আগামী দু-তিন দিনের মধ্যেই খতম করে দেওয়া হবে চন্দ্রপুরার চৈতন্যকে। সেই কাজের ভার অন্য কাউকে না দিয়ে অরবিন্দ নিজের কাঁধেই নিয়েছেন। ঠিক হয়েছে এই কাজে তাঁর সঙ্গী হবে অনন্ত মহাষুর।

চূড়ঙ্গগড়ের গোপন সভাকক্ষে আলোচনা চলিতেছে মহাকাল প্রতিহারী, জগন্নাথদাস এবং কুচক্রী শিরোমনি গোবিন্দ বিদ্যাধর ভৈ এর মধ্যে। গোবিন্দ বলিতেছেন, “...সরাইতে হইবে বলিতে আমি হত্যার কথাই বলিতেছি।  এই পৃথিবী হইতে মহাপ্রভুকে সরাইবার কথাই বলিয়াছি...” 

গোবিন্দর এই কথায়, জগন্নাথদাস এবং পাণ্ডা প্রধান মহাকাল প্রতিহারীর মুখাবয়ব মুহূর্তের জন্য আলোকিত হইয়াই তা কোনও এক কারণে পুনরায় ম্রিয়মাণ হইয়া গেল। মহাকাল বলিলেন, “শাস্ত্রে বলে ব্রহ্মহত্যার অধিক পাপ আর কিছুতে নাহি। কাজেই আমাদের অন্য কোনোরূপ উপায় ভাবিতে হইবে। এই পথে হইবে না।”

জগন্নাথদাস দাস অতিশয় ধুরন্ধর। সে যেন ইতিপূর্বে সবদিক ভাবিয়াই রাখিয়াছে, “গুম করিয়া আজীবন বন্দী করিয়া রাখিলে কেমন হয়?”

গোবিন্দ কহিলেন, “কোন বন্দীশালায় গুম করিয়া রাখিবেন তাঁহাকে। তাঁহার মতিগতি এবং ভক্তগণের উপর সর্বাত্মক প্রভাব বিস্তার করিবার ক্ষমতা সম্পর্কে, কোনোরূপ ধারণা আপনাদের আছে বলিয়া মনে হয় না।”

ভূগর্ভস্থ এই প্রকোষ্ঠে সূর্যালোক প্রবেশের কিছুমাত্র উপায় নাই। অন্ধকার দূরীভূত করিবার জন্য বেশ কয়েকখানি মশাল জ্বলিতেছে মাত্র। মশালের আলোকচ্ছটা গোবিন্দর মুখ ভঙ্গিমাকে কুটিলতর করিয়াছে। তাঁহার মুখ নিঃসৃত বাক্য তাঁহার সেই অবয়বের সহিত যে যথেষ্ট সামঞ্জস্যপূর্ণ, ইহাতে সন্দেহ নাই।

জগন্নাথদাস উত্তর করিলেন, “ইহা অনস্বীকার্য যে ঐ গৈরিক সন্ন্যাসীর জনমোহনী ক্ষমতা অপরিসীম। ভদ্র আপনার কথা যে যুক্তিসঙ্গত তাহা লইয়া সন্দেহের অবকাশ মাত্র নাই। তথাপি বোধ করি উপায় আছে। একখানি এমন স্থান এই জগতে অদ্যাপি অবশিষ্ট রহিয়াছে বৈকি, যেই স্থানে তাঁহাকে নিশ্চিন্তে বন্দী করিয়া রাখা যায়।”

“কী এমন স্থান ভদ্র!”

কিঞ্চিৎ বিরতি লইয়া পঞ্চসখার প্রধান, তাঁহার বাক্যগুলি প্রস্তর নির্মিত প্রকোষ্ঠের চারি দেয়ালে যেন খোদাই করিয়া দেন, “চূড়ঙ্গগড় দুর্গই হইল সেই স্থান। মহারাজা প্রতাপরুদ্রেরও সাধ্য কী যে আপনার এই বজ্রমুষ্টির মধ্যে প্রবেশ করেন!”

বাক্য দু’খানির পর বেশ কয়েক মুহূর্তের নীরবতা। নীরবতা ভাঙিলেন গোবিন্দই, “হ্যাঁ ভদ্র আপনার এই কথায় সারবত্তা কিছু আছে বটে। উত্তম...তবে তাহাই হউক। কিন্তু... পরিবেষ্টিত ভক্তগণের মধ্যমণি হইয়া থাকেন তিনি। তাহাকে গুম করা হইবে কী রূপে!”

গূঢ় আলোচনায় এখনও অব্দি নিজ মত খুব বেশি ব্যক্ত করেন নাই মহাকাল প্রতিহারী। এইবার করিলেন, “জগন্নাথ মন্দিরে যদি একবার তিনি প্রবেশ করেন এবং একাকী প্রবেশ করেন, তাহলেই কার্য সিদ্ধি হয়।”

গোবিন্দ কহিলেন, “তিনি নীলাচল আসিবা মাত্রই সেই যে প্রবেশ করিয়াছিলেন মন্দির-অভ্যন্তরে, সেই হইতে অদ্যাবধি আর করেন নাই। তিনি হঠাৎ করিয়া, তাহাও আবার একাকী, অভ্যন্তরে প্রবেশ করিতে যাইবেন কেন!”

জগন্নাথ কহিলেন, “ব্যবস্থা করিতে হইবে। তাঁহার জন্য ব্যবস্থা করিতে হইবে। আলোচনা করিতে হইবে তাঁহার পরম ভক্ত স্বরূপ দামোদর এবং রায় রামানন্দের সহিত।”

“আলোচনা! তাহাদিগের সহিত কীসের আলোচনা!” গোবিন্দ বিদ্যাধর নিজের এই কথার পর মুহূর্তমাত্র চুপ করিয়া থাকিয়া পুনরায় কহিলেন, “অবশ্য ইহাও আমাদিগের নিকটে একপ্রকার যুদ্ধই বটে। যুদ্ধে কৌশল অবলম্বন করিতে হইবে বৈকি। প্রয়োজনে, পরম শত্রুর সহিতও আলোচনায় বসিতে হইবে।”

ইহার পর ক্রূর হাসি হাসিয়া পঞ্চসখা-প্রধান জগন্নাথ কহিলেন, “আমি এক প্রস্তাব লইয়া যাইব রামানন্দ সমীপে। কহিব, প্রভুর নীলাচলে বসবাস, বোধ করিতেছি আর সমীচীন হইবে না। স্মার্ত অনুশাসন প্রভু মানিতেছেন না, এবং শুধু তাহাই নহে, তাঁহার ভক্তগণকেও মানিতে বারণ করিতেছেন। ইহা করিয়া তিনি শুধুমাত্র যে পাণ্ডাদের অপমান করিতেছেন তাহাই নয়, চরম অপমান করিতেছেন শংকরাচার্যকেও। ইহাতে প্রভুর বিরুদ্ধাচারণকারী দিন দিন যেরূপে বৃদ্ধি পাইতেছে, তাহাতে তাহার নীলাচলে বসবাস আর নিরাপদ নহে।”

গোবিন্দ সায় দিলেন, “হইতে পারে। আপনাকে, রামানন্দ প্রভুর অন্তরঙ্গ বলিয়া জ্ঞান করেন। আপনার কথা তাঁহাদের বিশ্বাসযোগ্য বলিয়া মনে হইলেও হইতে পারে।”

মহাকাল প্রতিহারী কহিলেন, “তাহা তো বুঝিলাম। তাহার পর কী হইবে?”

“তাহার পর হইবে শলা পরামর্শের অভিনয়। আমি তাহাদিগকে কহিব, প্রভু যদি বৃন্দাবন চলিয়া যান তাহলে সেই স্থানে নিরাপদে বসবাস করিতে পারিবেন। সেই স্থানে, ভক্তগণ দ্বারা পরিবেষ্ঠিত হইয়া বাকি জীবন মহানাম জপিয়া কাটাইয়া দিতে পারিবেন। আর...”

“আর?”

“আর, যথাযথ নিরাপত্তা সহকারে তাঁহাকে বৃন্দাবনে পৌঁছাইয়া দেওয়ার যাবতীয় ব্যবস্থা আমরাই করিব।”

খানিক ভাবিয়া গোবিন্দ বিদ্যাধর উক্ত প্রস্তাবে রাজী হইলেন। ইহার পর আলোচনা চলিল আরও বেশ কিছু সময় ধরিয়া। তাহাতে স্থির হইল যে মহাপ্রভু যদি একবার এই প্রস্তাবে সম্মতি দেন, তাহা হইলেই উভয়পক্ষ মিলিয়া তৈয়ার করা হবে, প্রভুর নীলাচল হইতে অন্তিম অন্তর্ধানের রূপরেখা। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রভুকে বলা হইবে একদিন আচম্বিতে জগন্নাথ মন্দিরে প্রবেশ করিতে। কালাঘাট দ্বার বন্ধ করিবার জন্য, পূর্ব হইতেই প্রস্তুত থাকিবে কয়েকজন। তিনি প্রবেশ করিবামাত্র ওই দ্বার বন্ধ করিয়া দেওয়া হইবে। তাহার পর তাঁহাকে মন্দির অভ্যন্তরস্থ গুপ্ত পথ দিয়া লইয়া যাওয়া হইবে বৃন্দাবনে।

এতদূর অবধি শলা পরামর্শ হইলে অতীব কুটিল গোবিন্দ বিদ্যাধর তাঁহার কথাটি কহিলেন, “কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ঘটিবে অন্যরূপ। প্রভু বৃন্দাবন যাইবেন ইহা জানিয়া, মহানন্দে দেবালয়ে প্রবেশ করিবেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তাঁহাকে জলপথ দিয়া লইয়া যাওয়া হইবে চূড়ঙ্গগড়। কী ঠিক কিনা... হা হা হা...।”

এই কথা শুনিয়া জগন্নাথের মুখাবয়বে যে ভয়ংকর হাসিটি দৃশ্যমান হইল, তাহা এক নিষ্ঠুর কসাইকেও লজ্জা দিবার পক্ষে যথেষ্ট।

চৈতন্য এবং ‘চন্দ্রপুরার চৈতন্য’ দু’জনের পরিণতি দেখার জন্য আরও খানিক অপেক্ষা করতে হবে আমাদের।


কেতাব-ই’র মুদ্রিত বই, ই-বই এবং ব্লগজিন বিভাগের লেখালিখির নিয়মিত খোঁজখবর পেতে আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন


এই ব্লগজিনে প্রকাশিত সমস্ত লেখার বক্তব্য লেখকের নিজস্ব।

মন্তব্য করুন

লেখক

জন্ম-৮ সেপ্টেম্বর, কলকাতা। ছাত্রাবস্থায় বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় লেখার মাধ্যমে লেখালেখির শুরু। এই উপন্যাস ছাড়াও লেখকের প্রকাশিত অন্য উপন্যাসগুলি হল— ‘আসলে ভালবাসার গল্প’, ‘রোধবতীর নীল রং’, ‘একে রহস্য দুইয়ে লক্ষ্যভেদ’। দেশ, আনন্দমেলা, কৃত্তিবাস, কিশোর জ্ঞান বিজ্ঞান, কথা-সাহিত্য, বহুরূপী এবং আনন্দবাজার পত্রিকায় ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে বেশ কিছু লেখা। এছাড়াও বাংলার শ্রেষ্ঠ নাট্যকারের সম্মান ‘সুন্দরম পুরস্কার’ পান ২০১৪ সালে।

অন্যান্য লেখা

দেখতে পারেন