preloader
বাংলা বইয়ের e-ভুবন
Menu Categories Search Cart 0
Menu
Cart

Total 0 Items

☹ Your cart is empty

Sub Total:

$0

₹0

বিভাগ
চৈতন্যে বধিবে কে!: পর্ব ২
ধারাবাহিক

চৈতন্যে বধিবে কে!: পর্ব ২

এতদসত্ত্বেও, প্রকৃতির যাবতীয় আয়োজন ব্যর্থ জগন্নাথদাসের ক্ষেত্রে। তাঁহার অন্তঃস্থল পূর্ণ প্রতিশোধ স্পৃহায়। সেখানে ক্ষমা নাই, প্রেম নাই, প্রকৃতিও নাই...
কী হয়েছিল সেদিন চৈতন্যর সাথে এবং কী হবে আগামিদিনে, ‘চন্দ্রপুরার চৈতন্য’র সাথে— আতস কাচের তলায় ফেলে সেটা দেখে নেওয়ার চেষ্টাই শুরু হোক এইবার...

চার

হোটেল পদ্মনাভ ও সেদিনের সেই চূড়ঙ্গগড় দুর্গ। দুই চৈতন্য-কথা। আদি ও অনাদি।

তৌষালী স্যাণ্ড। শুধু পুরী নয়, সারা পৃথিবীর ভ্রমণপিপাসু মানুষ নামটা এক ডাকে চেনে। হোটেল আর রিসর্টের ব্যবসা এদের। চন্দ্রপুরার ভোর রক্তাক্ত হলেও, পুরীর সকালটি কিন্তু বেশ নির্মল। ছোটো-ছোটো ঢেউ এসে ভাঙছে সাগর-তীরে। সেই ঢেউ পেরিয়ে সুনীল জলরাশি ছুঁয়ে দিচ্ছে আকাশ। দিগন্তরেখায় উড়ে বেড়াচ্ছে পাখির ঝাঁক। সোনালী সমুদ্রের তীর এবং আশপাশ ভেসে যাচ্ছে রোদ্দুরে। কিন্তু সেই তীব্র আলো হোটেল রুমের বড় জানালার স্মোক-গ্রে কাচের মধ্যে দিয়ে কেমন মায়াবী আবেশ সৃষ্টি করেছে। বেশ খানিকক্ষণ, ঐ দিকে তাকিয়ে থাকার পর চোখ ফেরান উমানাথ সিন্ধিয়া। কনভেন্ট এডুকেটেড উমানাথ একজন ‘বিজনেস ম্যাগনেট’। বংশ পরম্পরায়, চারটি টি-এস্টেট আর একটি টায়ার কোম্পানির মালিক। বাবা-মারা যাবার আগে অব্দি ব্যবসা নিয়ে আদৌ মাথা ঘামাননি। ইচ্ছেও ছিল না। পড়াশুনো, রাজনীতি এইসব নিয়েই কেটেছে দিন। পিতৃদেব গত হবার পর ব্যবসার হাল ধরেছেন। কিন্তু, বছর তিনেক হল পুরনো রাজনীতি আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে অন্দরে। মনে হচ্ছে অনেক হল, এবার লড়াই করতে হবে হিন্দুত্বের জন্য। বেদ-উপনিষদে যে সব মণি-মুক্তা লুকিয়ে আছে, তা ছড়িয়ে দিতে হবে সারা দেশে। ভারতবর্ষের সাধারণ মানুষকে শোনাতে হবে হিন্দুত্বের গৌরবান্বিত ইতিহাস। কাজেই, আবার জাগতিক বিষয় থেকে নিজেকে সরিয়ে নিচ্ছেন ক্রমে। ধীরে-ধীরে প্রবেশ করছেন ‘যথার্থ’ রাজনীতির অন্দরে। অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি শুধু গোয়ালিয়র অথবা মধ্যপ্রদেশ নয়, সর্বভারতীয় রাজনীতিতেও বেশ প্রভাবশালী হয়ে উঠছেন। যদিও উমানাথ সিন্ধিয়া পার্টির কোনও পোর্টফোলিও হোল্ড করেন না। সিন্ধিয়ার দলের নাম ‘ভারতীয় হিন্দু মহাদল’— বি. এইচ. এম. ডি।

আকাশ এবং জলরাশির স্পর্শরেখার থেকে দৃষ্টি সরিয়ে উমানাথ চোখ দিলেন রিস্টওয়াচে; গ্রাফ-ডায়মন্ড হ্যালুসিনেশন, ডায়মন্ড এনক্রাস্টেড। হীরক-খচিত এই ঘড়িটার দাম কম করে এক কোটি। আটটা সতেরো মিনিট পনেরো সেকেন্ড। সকাল নটা থেকে ‘চিন্তন’ বৈঠক। স্পেশাল এই মিটিংটার জন্যই এইখানে আসা। সময় হয়ে গেছে। বেরোতে হবে এবার। গ্লাস-উইন্ডো থেকে একশো আশি ডিগ্রি টার্ন। রুমের ঠিক মাঝখানে একটা সেন্টার টেবিল। সেখানে রাখার আগে হাতে ধরা সুদৃশ্য গ্লাসটায় একটা বেশ বড় করে সিপ দিলেন; বেদানার চিলড শরবত। মিটিংয়ের পর লাঞ্চ এবং তারপরই বেরিয়ে পড়তে হবে এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে। কাজেই, একেবারে চেক আউট করতে হবে এখন। লাগেজ বলতে শুধু ল্যাপটপটা। ওই দিকে চোখ যায়। অন করা, বিছানার উপর। একটু আগে খুলে বসেছিলেন। আজকাল যখন-তখন গুগল খুঁড়ে বার করছেন বিভিন্ন সব জিনিসপত্র। দেখা যাচ্ছে যে, স্থানীয় অর্থাৎ পুরীর ইতিহাসে সবথেকে যেটা চমকপ্রদ সময়কাল, তা হল রাজা প্রতাপরুদ্রের সময়টা। ওঁর সময়ে চৈতন্য মহাপ্রভুর আগমন ঘটেছিল এই জগন্নাথ-ভূমে। সেই সন্ন্যাসীর প্রভাব এতটাই ছিল যে, রাজা প্রতাপরুদ্র স্বয়ং আশ্রয় নিয়েছিলেন তাঁর পদতলে। ভক্তি-আন্দোলনের জোয়ার, ক্রমশ প্রবল থেকে প্রবলতর হয়ে উঠেছিল সমস্ত স্তরের মানুষের মধ্যে। হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে ছুটে এসেছিল প্রভুর ভক্তি-প্রসাদ লাভের আশায়। ওঁর দেওয়া কৃষ্ণ-মন্ত্রে বলীয়ান হয়ে অনেকেই পাণ্ডাদের পর্যন্ত অস্বীকার করতে শুরু করেছিলেন। কেউ কেউ বলেন, প্রকৃতপক্ষে গেরুয়াধারি সেই সন্ন্যাসীই তখন হয়ে উঠেছিলেন রাজাধিরাজ। চৈতন্যর বিষয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করতে করতেই আরও এক চৈতন্যের কথা মনে পড়ে উমানাথের। খোলা স্ক্রিনটা মিনিমাইজ করেন, অন্য একটা ফোল্ডার থেকে একটা বিশেষ ফাইল ওপেন করেন। ফাইলের নাম ‘চন্দ্রপুরার চৈতন্য’ অবলিক ‘অনাদি গোস্বামী’। দেখতে থাকেন খুঁটিয়ে। একটি বিষয় উমানাথের কাছে অবাক লাগে, ‘চৈতন্য’ নামটাই যেন একটা দুঃস্বপ্নের মত। সে ‘মহাপ্রভু’ই হোক অথবা ‘চন্দ্রপুরার চৈতন্য’ই হোক। সারা দেশ জুড়ে ‘হিন্দুইজম’ কায়েম করার ক্ষেত্রে এরা একটা বাঁধা হয়ে দাঁড়াবেই দাঁড়াবে। ও শিইইট। উমানাথের বুক পকেটে রাখা মোবাইল। সেই দূরভাষ যন্ত্র কেঁপে উঠলে তাঁর চিন্তার জাল ছিন্ন হয়। অরবিন্দ প্রতিহারীর হোটেল পদ্মনাভয় পৌঁছে নক করার কথা তাঁকে। অরবিন্দ তাহলে পৌঁছে গিয়েছেন। আর সময় নেই। ল্যাপটপ শাট-ডাউন করে ব্যাগে ঢোকান উমানাথ। চেনটা টেনে দেন। পুরো ঘরটা একবার দেখে নিয়ে বেরিয়ে যান। ঋজু পদক্ষেপে।

***

নদীটির নাম প্রাচী। মহানদীর বক্ষস্থল হইতে ইহার উৎপত্তি। কাকতপুর হইয়া চলিয়া গিয়াছে গোমতী তীর্থের দিকে। এই জলপথ, পূর্বে বহুবিধ বাণিজ্যতরী দ্বারাই মূলত ব্যবহৃত হইত। তবে বাংলার নবাব হোসেন শাহ আক্রমণ করিয়া বসিবার পর, এই পথে বাণিজ্যতরী চলাচল নিষিদ্ধ হইয়াছে। এই পথ এখন রণতরীর জন্য সংরক্ষিত। গোবিন্দ বিদ্যাধরের আদেশেই এইরূপ ব্যবস্থা। রাজা প্রতাপরুদ্র দাক্ষিণাত্যের সহিত যুদ্ধ লইয়া যেদিন হইতে ব্যতিব্যস্ত হইয়াছেন, সেদিন হইতেই রাজ্যের শাসনভার সেনাপতি গোবিন্দ বিদ্যাধর ভৈ-এর উপর ন্যস্ত হইয়াছে। তিনিই বর্তমানে একরূপ দণ্ডমুণ্ডের কর্তা। সম্মুখ ভাগে বিস্তৃত জলরাশি পশ্চাতে অপার অরণ্য বেষ্টিত গিরি-শ্রেণি। মধ্যে দুর্গ— চূড়ঙ্গগড়। সেই অতি দুর্গম স্থানেই কিছুদিন হইল আস্তানা গাড়িয়াছেন অতীব ধুরন্ধর গোবিন্দ বিদ্যাধর ভৈ। আগামী কল্য প্রভাতে এই দুর্গেই এক গোপন সভার আয়োজন করা হইয়াছে। উপস্থিত থাকিবেন, পঞ্চসখার শিরোমণি জগন্নাথদাস এবং পাণ্ডাদের প্রধান মহাকাল প্রতিহারী। জগন্নাথদাস কূট বুদ্ধিতে গোবিন্দ বিদ্যাধর হইতে আগাইয়া আছেন কিনা, ইহা লইয়া তর্ক হইতে পারে, কিন্তু পিছাইয়া যে নাই, ইহা লইয়া তর্কের অবকাশমাত্র নাই। আর, মহাকাল প্রতিহারীকে দেখিলেই বোধ হইবে হিংস্র এক শ্বাপদ বিধাতার ভুলে মনুষ্যরূপ ধরিয়াছে বুঝি। বিশালাকায় শরীরে ভাটার মত চক্ষু দুইখানা যেন জ্বলিতেছে। শাল-তরুর ন্যায় পেশীবহুল আজানুলম্বিত দুইখান হস্ত দেখিলে ইহা বুঝিতে কোনোরূপ অসুবিধা নাই যে, কাহারো গর্দান চাপিয়া ধরিলে প্রাণবায়ু বাহির হইতে মুহূর্তমাত্র বিলম্ব হইবে না।

কেতাব-ই'র ব্লগজিন বিভাগে লেখা পাঠাতে চান? মেল করুন manuscript.ketabe@gmail.com-এ। মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখুন ‘কেতাব-ই ব্লগজিনের জন্য লেখা’

বৈশাখ মাস। অপরাহ্ণ বেলার সূর্যালোক রক্তিম আভা বিস্তার করিয়াছে প্রাচীর বুকে। রক্তিম জলরাশির বক্ষ চিরিয়া একখানি ছোটো রণতরী আসিয়া কাকতপুর ঘাটে ভিড়িল। কথামত জগন্নাথ এই ঘাটেই অপেক্ষা করিতেছিলেন। মাল্লার ইশারায় অতি সন্তর্পণে উঠিয়া আসিলেন। এইবার তরী চলিল নিয়ালী অতিক্রম করিয়া ফুলনখরা অভিমুখে। এইস্থানে স্রোতস্বিনীকে যে প্রকৃতি তাহার ক্রোড়ে স্থান দিয়াছে তাহা বড়ই মনোরম। চারদিকে পাহাড় ও সবুজ বনানী। এই মুহূর্তে বনানীর শরীরে দিনমণি আঁকিয়া দিতেছে দিনান্তের পরশ। নীলাভ গিরি-শ্রেণিগুলি একে অপরকে আলিঙ্গন করিয়া দূর হইতে দূরান্তরে বিস্তার লাভ করিয়া যেন ছুঁইয়া দিতে সচেষ্ট হইয়াছে অন্তরীক্ষের সীমানা। ইহার সহিত সঙ্গতি রাখিয়া, মৃন্দুমন্দ বাতাসে জলরাশির বুকে পরস্পর সোহাগে লিপ্ত হইতেছে ছোটো-ছোটো তরঙ্গমালাগুলি। এতদসত্ত্বেও, প্রকৃতির যাবতীয় আয়োজন ব্যর্থ জগন্নাথদাসের ক্ষেত্রে। তাঁহার অন্তঃস্থল পূর্ণ প্রতিশোধ স্পৃহায়। সেখানে ক্ষমা নাই, প্রেম নাই, প্রকৃতিও নাই। বেশ খানিক চলিবার পর যখন ফুলনখরা পৌঁছিল তরী তখন আকাশ হইতে সূর্যের লালিমা মুছাইয়া দিতে সমুদ্যত আসন্ন রাত্রির অন্ধকার। ফুলনখরার ঘাটে অপেক্ষারত ছিলেন মহাকাল প্রতিহারী। তাহাকে তুলিয়া লইতেও কিছুমাত্র বিলম্ব হইল না। ক্ষুদ্র রণতরী, মাঝি-মাল্লা বিশেষ নাই। যাহারা রহিয়াছে তাহারা দাঁড় টানিতে ব্যস্ত। মহাকাল ও জগন্নাথ— দুইজনে এই অবসরে খানিক শলাপরামর্শ করিয়া লইতে বসিল। ইহার কিয়ৎক্ষণের মধ্যেই জলযানখানি আসিয়া ভিড়ল চূড়ঙ্গগড় ঘাটে। ইতিমধ্যে অন্ধকার নামিয়াছে। মশাল হাতে লইয়া তাঁহাদের জন্য অপেক্ষা করিতেছিল বিদ্যাধরের রক্ষী বাহিনী। তাহারা সেনাপতির দুই মহামান্য অতিথিকে বরণ করিয়া লইয়া চলিল দুর্গের অভ্যন্তরে। যেখানে তাঁহাদের জন্য সাগ্রহে অপেক্ষা করিতেছেন গোবিন্দ বিদ্যাধর; কুচক্রের শিরোমণি।

***

তৌষালী স্যাণ্ড হোটেলের সামনে দাঁড়িয়ে স্টিল কালারের বিএমডাব্লিউ-এক্স-ওয়ান। সপাট সূর্যালোক ঠিকরচ্ছে গাড়ির শরীরে। গাড়ি পাঠিয়েছেন অরবিন্দ। দরজাটা একটানে খুলে বসে পড়েন উমানাথ। চক্রতীর্থ রোড দিয়ে একটু এগিয়ে গেলে কলেজ রোড। সেই রাস্তা ধরে শ্রীগুরু কমপ্লেক্সের দিকে গেলেই হোটেল পদ্মনাভ। কিন্তু সেই সহজ পথ দিয়ে যায় না বিএমডাব্লিউ। অনেকটা ঘুরে, স্টেট ব্যাঙ্কের মোড় থেকে টার্ন নেয় কলেজ রোডের দিকে। দ্বিগুণ সময় নিয়ে, হোটেল পদ্মনাভর সামনে এসে দাঁড়ায় গাড়ি। এতখানি ঘুরে আসার কারণ দুটো; এক, স্বর্গদ্বার রোডে অপেক্ষারত একজনকে তুলে নেওয়া। দুই, উমানাথ সিন্ধিয়ার নিরাপত্তা। তাঁর মত মানুষের সব সময় সোজা রাস্তায় চলা খানিক বিপদজনক। গতিবিধি আঁচ করার জন্য, কে কোথায় ঘাপটি মেরে আছে বলা মুশকিল।

পাঁচ

চন্দ্রপুরা। ঝাড়খণ্ড।

থানায় ঢোকার আগে, বিশ্বামিত্র সেনের বাড়িটা একবার ঘুরে যাবার কথা মনে হল অফিসার সুজয় মাহাতোর। সকালবেলাই মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়েছে। দুম করে কে খুন হয়ে গেলেন… না, একজন নির্বিরোধী ভাল মানুষ! কিন্তু, এখানেই যদি ওঁর পরিচয় শেষ হয়ে যেত, তাহলে পুলিশের এত মাথা ব্যথা থাকত না। মনে রাখতে হবে, বিশ্বামিত্র বাবু একজন বিরাট মাপের সরকারি আমলা। যদিও প্রাক্তন। কিন্তু তাতেই বা কী? খুনের মোটিভটা বুঝতে পারলে, আজ না হয় কাল খুনিকে ঠিক ধরে ফেলা যায়। কিন্তু আপাত উদ্দেশ্যহীন খুন নিয়ে নাজেহাল অবস্থা হয় পুলিশের। বোঝাই যায় না তদন্তটা ঠিক কোনখান থেকে শুরু করা যাবে। সেই ‘মোটিভ’ খুঁজতেই এখন বিশ্বামিত্রের বাড়িতে আসা। সুজয় একবার ভেবেছিলেন রাধামাধব মন্দিরের দারোয়ান বলবন্তকে তুলে নিয়ে আসবেন। তারপর মনে হয়, ওকে এখন জেরা করে সময় নষ্ট করার কোনও মানে নেই। শুধুমাত্র মন্দির ফটক খোলা রেখেছিল, এই অপরাধে তুলে নিয়ে আসা অর্থহীন। আর ফটক খোলা থাকার ব্যাপারটা শুধু বলবন্ত একা নয়, অনাদিও জানতেন। প্রধান পুরোহিতের নির্দেশ ছাড়া ও কী এই কাজ করেছে? কখনই নয়। আর, খুনি যখন টার্গেট করেছিল তখন বিশ্বামিত্রকে মারতই। হত্যাকারী যে বেশ কিছুদিন ধরেই বিশ্বামিত্রকে অনুসরণ করছিল— এটা ধরেই নেওয়া যায়। যাতায়াতের পথে অথবা বাড়িতেও খুন হতে পারতেন বিশ্বামিত্র। এইসব ভাবতে ভাবতেই, হঠাৎ করে একটা প্রশ্ন মাহাতোর মাথায় গেঁথে যায়। বিশ্বামিত্রকে রাস্তায় না মেরে মন্দিরেই খুন করা হল কেন? যেখানে কাজটা একটু হলেও বেশি ঝুঁকির। অন্ধকার থাকতে উনি আসতেন। কোনো টিলার গা বেয়ে নেমে এসে নিকেশ করে জঙ্গলে সেঁধিয়ে যাওয়া, এটাই তো সব থেকে ভাল ছিল। তা না করে মন্দিরে...! সাত-পাঁচ ভাবতে ভাবতে বিশ্বামিত্রের বাড়ি এসে যায়। রাধামাধবপুরের শেষ প্রান্তে। বিশ্বামিত্র বাবু অকৃতদার। জনমানবহীন বাড়ি খাঁ-খাঁ করছে। সুজয় মাহাতো নেমে আসেন গাড়ি থেকে, পিছন পিছন এস. আই মহাদেব। গেটটা খুলে ভিতরে ঢুকে আসেন দুজনে। খানিকটা বাগান। বাগানের বুক চিরে ইটের কেয়ারি করা রাস্তা গিয়ে উঠেছে টানা বারান্দায়। সামনে বারান্দা, পিছনে পরপর তিনটে ঘর। সবগুলোই তালাবন্ধ। দেখলেই মনে হয়, বন্ধই থাকে অধিকাংশ সময়। একপাশ দিয়ে লোহার ঘোরানো সিঁড়ি উঠে গেছে উপরে। উপরে উঠে আসেন বড়বাবু এবং এস. আই। উপরেও তিনটে ঘর। এইগুলোও তালা বন্ধ। সুজয় মাহাতো ঘুরে মহাদেব মুর্মুর দিকে তাকান। বলেন,

“ঘরগুলো একবার খুলে দেখতে পারলে ভালো হত।”

“হ্যাঁ। চাবি না পেলে তালা ভাঙতে হবে।”

“তার দরকার হবে না। চাবি পাওয়া যাবে।”

“ইয়েস স্যার। সেটা পাওয়া খুব কঠিন ব্যাপার নয়। ভোরবেলা উনি নিশ্চয়ই চাবির গোছাটা নিয়েই বেরিয়ে ছিলেন।”

“হ্যাঁ। আমি দেখছি।”

হাসপাতালে একটা ফোন করেন সুজয়। তারপর, ড্রাইভার দ্বিগু সরেন কে বলেন চাবিটা নিয়ে আসতে।

মহাদেব বলেন, “স্যার একটা কথা বলব?”

“কী?”

“বডি যখন স্ট্রেচারে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, থামতে বলেছিলেন ওদের...”

“হ্যাঁ বলেছিলাম...”

“আপনি কি চাবির গোছাটাই খুঁজছিলেন?”

“না। চাবির কথা তখন আমার মাথাতেই ছিল না। থাকলে বার করে নিজের কাছেই রাখতাম।”

“তাহলে !”

“খুঁজছিলাম একটা অন্য জিনিস, যেটা ওঁর সাথেই থাকার কথা। কিন্তু ছিল না। হয়ত খুন করার পর আততায়ীই সেটা নিয়ে নিয়েছে...” মহাদেব বুঝতে পারেন, দারোগা সাহেব সম্ভবত মোবাইল ফোনের কথা বলছেন। কিন্তু তিনি যখন খোলসা করতে চাইছেন না তখন আর কথা না বাড়ানোই ভালো। বিশ্বামিত্রের বাগান থেকে দুগ্ধা পাহাড়টা আড়াআড়ি দেখা যায়। উপরের মন্দিরটাও। এখন পাহাড়ের পাদদেশ থেকে নাম-সংকীর্তন ভেসে আসছে। দারোগা বুঝতে পারেন নিশ্চয়ই অনাদি ফিরছেন তাঁর দলবল নিয়ে। পথে পথে নগর সংকীর্তনের দল নিয়ে ঘুরে বেড়ান বলে গাঁয়ের মানুষ তাঁর নাম দিয়েছে ‘চন্দ্রপুরার চৈতন্য’। এই মানুষটার জন্য আজকাল বেশ চিন্তা হয় মাহাতোর। ডি-টাইপ ব্রিজে দাঙ্গার পর থেকেই যেন উনি আরও ক্ষেপে উঠেছেন। রোজই বেরিয়ে পড়ছেন দল নিয়ে। দারোগা নিজে সাবধান করেছেন, কিন্তু কারও সাবধানবাণীর বিন্দুমাত্র গুরুত্ব অনাদি দেন না। উলটে আশ্বস্ত করেন এই বলে যে, “আমার জন্য চিন্তা অহেতুক। ধর্মের জায়গীরদারি চলে যাচ্ছে বলে কেউ কেউ হয়ত আমার উপর রাগ করে কিন্তু তাই বলে খুন করবে! না, এ হতে পারে না।” দারোগা সুজয় মাহাতো ওঁকে কী করে বোঝাবেন যে, ধর্মের জায়গীরদারি হাতছাড়া হয়ে যাওয়াটা খুব সহজ ব্যাপার নয়! সদাশিব মোহান্তি এবং আরও কেউ কেউ আছে এই চাঁদপুরায়, যারা এই জন্য আস্তিনের তলায় লুকিয়ে রাখা অস্ত্র বের করতে একটুও সময় নেবে না।

ছয়

চন্দ্রপুরা। ঝাড়খণ্ড।

হ্যাঁ, দারোগার ধারণা মিথ্যা নয়। হরিনামের খোলা হাওয়া কী আর ধম্মের ষাঁড়দের সহ্য হয়! সত্যি-সত্যি সদাশিব মোহান্তি প্রহর গুনছে সুযোগের অপেক্ষায়। তবে দারোগা এটা জানেন না যে শুধু সদাশিব নয়, বিপদ আসতে পারে অন্যদিক থেকেও। অনাদি গোসাঁই অর্থাৎ ‘চন্দ্রপুরার চৈতন্য’র কথা ইতোমধ্যেই অনেক দূর অব্দি পৌঁছে গেছে। এবং তাকে খতম করার নীল-নকশা তৈরি হয়ে গেছে আগেই। আজ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার পালা, হোটেল পদ্মনাভতে। কেন অনাদি এত মাথাব্যথার কারন হয়ে উঠেছে সেটা বুঝতে হলে দু’এক কথায় এই ‘চন্দ্রপুরা’কে একটু বুঝে নিতে হবে। চন্দ্রপুরাকে বলা হয় ‘ল্যান্ড অফ টেম্পল’। চারদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে প্রচুর মন্দির; সব থেকে বেশি হল হনুমানজির মন্দির। এছাড়াও আছেন রাধামাধব, দুর্গা, শিব, গণেশ ও রাম। তবে ইতিউতি সবুজের মাঝে মন্দির যেমন আছে মসজিদও তেমন আছে। আযান এবং প্রার্থনা, দুটোই সকাল সন্ধ্যায় ধ্বনিত হয় একসাথে। মানে, এতদিন তাই হয়ে এসেছে। কিন্তু কিছুদিন হল হাওয়া একদম অন্যরকম। এই তো গেল বছর; দাঙ্গায় মারা গেল একজন। ডি-টাইপ ব্রিজের আগে কয়েকটা দোকানপাট। পার হলেই বিশাল এক বট গাছ, তারই নীচে হনুমানজির মন্দির। মহরম আর হনুমান জয়ন্তী একই দিনে পড়েছিল গেলবার। মন্দিরে সন্ধ্যারতির সময়, মহরমের একটা মিছিল এসে পড়ে দুগ্ধার দিক থেকে। সারা চন্দ্রপুরা জুড়ে দাঙ্গার একটা আবহ তৈরি হচ্ছিল আগের থেকেই। সেদিন সলতেয় আগুন লাগে। অল্প সময়ের মধ্যেই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। লাঠি-ছুরি-বোমা; বাদ যায় না কোনোকিছুই। শেষমেশ হারিয়ে যায় তরতাজা একটা প্রাণ; নাম, পরমেশ্বর বৈগা। এদিকে, দাঙ্গার পর দিন থেকেই অনাদি গোসাঁইয়ের নগর কীর্তনের বহর হঠাৎ বেড়ে যায় শতগুন। এ হেন অনাদি গোসাঁই যে ভারতীয় হিন্দু মহাদলের মাথাব্যথার কারণ হবেন এ আর এমন কী আশ্চর্যের।

যাই হোক, ফেরা যাক বিশ্বামিত্রের সেনের বাসভবনে। যেখান থেকে শোনা যাচ্ছিল, পাহাড়ের তলদেশ থেকে ভেসে আসা অনাদি গোসাঁইয়ের কীর্তনের আওয়াজ।

“স্যার এই যে চাবি...।” ধুনকি কাটে সুজয় মাহাতোর। দ্বিগু গাড়ি নিয়ে গেছে এসেছে। বেশিক্ষণ লাগেনি। পাহাড় থেকে ভেসে আসা কীর্তনের ধ্বনি দারোগাকে নিয়ে গিয়েছিল পিছনে। দ্বিগুর কথায় ‘পিছুটান’ কাটিয়ে সামনে ফেরেন তিনি। প্রথম দুটো চাবি দিয়ে হয় না, কিন্তু তিন নম্বর চাবিটা দিয়ে খুলে যায় দোতালার একটা দরজা। এটা খুন হয়ে যাওয়া বিশ্বামিত্র সেনের শয়ন কক্ষ। মাথার কাছে বিরাট জানলা। মহাদেব এগিয়ে গিয়ে জানলাটা খুলে দেন। আলোয় ভরে যায় ঘর। টান-টান বিছানা পাতা। মাথার কাছে একটা বালিশ। পাশে কিছু ম্যাগাজিন। ম্যাগাজিনগুলো হাতে নিয়ে দেখেন মহাদেব। দু-একটা ইংরাজি পত্রিকা। দেয়াল ঘেঁষা একটা সোফা এবং একটা আলমারি। সোফার উপর গড়াগড়ি খাচ্ছে একটা খোল, অনাথের মত। খোলটা দেখে একটু অবাক হয়ে যান দারোগা। ভক্ত মানুষ ছিলেন। মন্দিরে যেতেন নিয়মিত। কিন্তু নাম সংকীর্তনের সখ যে ছিল এইরকম শোনা যায়নি। তবে মন্দিরে যেতেন যখন নিশ্চয়ই অনাদির সাথে আলাপ ছিল ভালো রকম। আর অনাদির সাথে আলাপ থাকলে তাঁর নাম সংকীর্তনের দলে ভিড়ে যাওয়া আদৌ অস্বাভাবিক ব্যাপার নয়। এগিয়ে গিয়ে আলমারির হাতলটা ঘোরান দারোগা। সাথে সাথে খুলে যায় পাল্লা। ভিতরে শুধুমাত্র জামা কাপড়।

“স্যার লকারটা কি ভাঙব?” মহাদেবের কথার উত্তরে সুজয় মাহাতোর আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠস্বর, “আমার মনে হয় লকারটা খোলাই আছে।” বলেই উনি ছোট্টো হাতলটা ধরে অল্প একটু ঘোরান। খুলে যায় লকার।

“স্যার কী করে বুঝলেন!”

“খুব সহজ মি. মুর্মু।”

“অনেক বাড়িতেই, আলমারি খোলা থাকলেও লকার কিন্তু বন্ধ থাকে...”

“সে সব গৃহস্থ বাড়িতে হয়। ব্যাচেলররা ওসবের ধার ধারেন না। আর তাছাড়া আমার মনে হয়, খুব ‘ভ্যালুয়েবল’ যদি কিছু ওঁর থেকেই থাকে, তবে সেটা আলমারিতে না রেখে ব্যাঙ্কের লকারে রাখবেন। বাড়িতে মানুষ বলতে একজনই। না থাকলে যখন-তখন হাতসাফাই হতে পারে।” তদন্তের জন্য কোনও ‘ঠোস সবুদ’ দরকার। কিন্তু এই ঘরে সেরকম কিছুই পাওয়া যায় না। বেরিয়ে আসেন দুজনেই। পাশের ঘরটা খোলা হয়। এটা স্টাডিরুম। জানালা খোলাই ছিল। বেশ দামি কাঠের গোটা ছয়েক বুক-শেলফ। বইয়ে ঠাসা। দু-একটা বই হাতে নিয়ে দেখেন মাহাতো। স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে আধুনিক ভারতবর্ষের অর্থনীতি, ধর্মীয় গ্রন্থ থেকে বিজ্ঞান। সব রকমের কালেকশন। ছোটোখাটো একটা লাইব্রেরি বলা যায়। একদিকের দেয়াল ঘেঁষে একটা স্টাডি টেবিল। উপরে পেনদানি এবং সুদৃশ্য টেবিল ল্যাম্প। ইমপোর্টেড। পেনদানিতে গোটা দুয়েক পেন। একটা কলম হাতে নিয়ে দেখেন মহাদেব। রাইটার— মেইড ইন সুইজারল্যান্ড। সুজয় এবং মহাদেবের অভিজ্ঞ চোখ ছানবিন করে বেড়ায় এদিক-ওদিক। ঘরের মাঝখানে একটা সেন্টার টেবিল, তার উপর আরও একটা ল্যাম্প। তবে এটা অন্যরকম। ছোটো টেবিলের সাথে মানানসই, “সারা বাড়িটাতে কোথাও কোনও বাহুল্য নেই কিন্তু স্টাডি রুমটা বেশ শৌখিন। কালেকশনও বেশ ভালো। ইজিনট ইট মি. মুর্মু ?”

“ইয়েস স্যার।”

“এর থেকে একটা বিষয় বেশ স্পষ্ট করে বোঝা যায়...”

“কী স্যার ?”

“মি. সেন খুব সিরিয়াস একজন পাঠক ছিলেন এবং বইয়ের ভ্যারাইটি দেখলে আরও একটা বিষয় ফিল করা যায়, যা তদন্তের কাজে লাগলেও লাগতে পারে...”

“কী স্যার!”

“উনি একজন ধর্মপ্রাণ মানুষ ঠিকই কিন্তু অন্ধভক্ত ছিলেন না। ধর্মগ্রন্থের থেকেও বেশি অন্যান্য বই। একজন লজিক্যাল মানুষেরই সাধারণত এইরকম সংগ্রহ থাকার কথা।” আবার একটা বই নিয়ে দেখতে দেখতে বললেন, “হুমম... ইন্ডিয়ান আর্ট অ্যান্ড কালচার। দারুণ। মূলত, ভারতবর্ষের বিভিন্ন মন্দিরের আর্কিটেকচার নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সাউথের তিরুপতি থেকে পুরীর জগন্নাথ মন্দির।” মহাদেব বুঝতে পারেন না এই বিষয়গুলো কীভাবে ইনভেস্টিগেশনের কাজে লাগতে পারে। ওই দিকে একটা বইয়ের খোলা পাতার দিকে নজর রেখেই বলে যান সুজয়, “পুরীর মন্দিরের একটা ব্যাপার জানতাম না। যা বেশ অবাক করার মত... সূর্যের অবস্থান যাই হোক না কেন দেবালয়ের ছায়া কখনই মাটিতে পড়ে না। স্থাপত্য শৈলীর এরকমই বৈশিষ্ট্য।” আরও দু-এক পাতা উল্টে বইটা আবার জায়গা মত রেখে দেন মাহাতো। ঘরের চারদিকে একটা ফাইনাল লুক দেন। পড়ার টেবিলে একটা পকেট ডাইরি চোখে পড়ে। প্রথমবার খেয়াল করেননি। নীল রঙের ডাইরি। বেশ সুন্দর। তুলে নিয়ে পৃষ্ঠা ওলটান। প্রথম দুটো পাতা সাদা। তিন নম্বর পাতায়, ইংরাজি এ-জি-সি-টি, এই চারটে অক্ষর। তারপর, চার নম্বর থেকে বেশ কয়েকটা পাতায় পর পর কতগুলো সিঁড়ির মত আঁকা। যেটা বেয়ে ওরা উঠে এসেছেন দোতলায়, অনেকটা সেই রকম। লাল-নীল-সবুজ রঙ ব্যবহার করা হয়েছে ছবিতে। অবাক মাহাতো পাতা উল্টে যান। আবার সাদা পৃষ্ঠা। তারপর একদম শেষদিকে একটা কবিতা লেখা। উপরে লেখা— শেষের কবিতা। বাব্বা এইরকম রাবীন্দ্রিক নাম! কবিতাটা হল,

আনন্দ অন্তর্যামী তুমি অনাথবন্ধু হে

গিরিধারী গোকুলনাথ তুমি গোপালক হে...

সনাতন স্বয়ম্ভু তুমি সচ্চিদানন্দ হে

তপোময় ত্রিলোকনাথ তুমিই ত্রিলোক-পালক হে...

সুজয় কবিতার মাথা-মুণ্ডু কিছুই বুঝতে পারেন না। তবে মনে-মনে নিজের মত করে একটা ধারণা করেন যে, এটা নিশ্চয়ই প্রাচীন কোনও মহাকবির লেখা এক পদাবলী। এই চারটে লাইনের পর বেশ খানিকটা ছেড়ে, পরের যে লাইনগুলো, তা আরও দুর্বোধ্য...

অচ্যুত-গদাধর-চিকনকালা-ত্রৈলোক্যনাথ-কবে শেষ কথা

তাই এ আমার শেষের কবিতা...

ওসি সাহেব ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন কিম্ভূত কিমাকার শব্দগুলোর দিকে।


কেতাব-ই’র মুদ্রিত বই, ই-বই এবং ব্লগজিন বিভাগের লেখালিখির নিয়মিত খোঁজখবর পেতে আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন


এই ব্লগজিনে প্রকাশিত সমস্ত লেখার বক্তব্য লেখকের নিজস্ব।

মন্তব্য করুন

লেখক

জন্ম-৮ সেপ্টেম্বর, কলকাতা। ছাত্রাবস্থায় বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় লেখার মাধ্যমে লেখালেখির শুরু। এই উপন্যাস ছাড়াও লেখকের প্রকাশিত অন্য উপন্যাসগুলি হল— ‘আসলে ভালবাসার গল্প’, ‘রোধবতীর নীল রং’, ‘একে রহস্য দুইয়ে লক্ষ্যভেদ’। দেশ, আনন্দমেলা, কৃত্তিবাস, কিশোর জ্ঞান বিজ্ঞান, কথা-সাহিত্য, বহুরূপী এবং আনন্দবাজার পত্রিকায় ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে বেশ কিছু লেখা। এছাড়াও বাংলার শ্রেষ্ঠ নাট্যকারের সম্মান ‘সুন্দরম পুরস্কার’ পান ২০১৪ সালে।

অন্যান্য লেখা

দেখতে পারেন